ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রাথমিকের শিক্ষকরা কি যন্ত্রমানব?

  জামিল সরকার

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:৩১

প্রাথমিকের শিক্ষকরা কি যন্ত্রমানব?

সরকারি প্রাথমিকে ৩৬৫ দিনের সিলেবাস/পাঠ্যবই,পড়াশোনা ছাড়া আরো যে কাজগুলো করতে হয় সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষকদের সে কাজগুলো তুলে ধরবার চেষ্টা করছি মাত্র:

১. ভোটার তালিকা প্রণয়ন

২. পোলিও/ভিটামিন ক্যাম্পেইন

৩. সিউর ক্যাশ (ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি)

৪. মা সমাবেশ

৫. উঠান বৈঠক

৬. শিশু জরিপ

৭. জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচন

৮. হোম ভিজিট

৯. স্টুডেন্ট কাউন্সিল

১০. শুদ্ধ জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতা

১১. জাতীয় ফুল শাপলা অংকন প্রতিযোগিতা

১২. কবিতা আবৃতি এবং সংগীত প্রতিযোগিতা

১৩. ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচন

এর মাঝে সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিভিন্ন সরকারি ছুটি তো আছেই। আছে বিভিন্ন জাতীয় দিবস, বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, এত এত কাজ সম্পন্ন করার পর,কতদিনই বা পড়াশোনা করানোর জন্য পাওয়া যায়?

এত এত কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরেও সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষকরা মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের জন্য সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি বলি না সরকারি প্রাথমিকের লক্ষ্য অর্জন হয়েছে। লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা প্রাথমিকের শিক্ষকরা চেষ্টার ত্রুটি করছি না (কিছু কিছু শিক্ষক বাদে)।

পৃথিবীর সকল দেশেই প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেশি সম্মানিত করা হয়,কোন কোন দেশে ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের চেয়ে প্রাথমিকের বেতন/মর্যাদা বেশি। যেমন: আমেরিকা, জাপান। আমাদের এদেশে প্রাথমিকের শিক্ষকদের দিয়ে সকল কাজ করিয়ে শিক্ষার পাঠদান যেমন ব্যাহত করা হচ্ছে তেমনি প্রাথমিকের শিক্ষকদের সাথে বৈষম্য করা হচ্ছে,যা একটা জাতির অগ্রযাত্রার অন্তরায়।

প্রাথমিকের শিক্ষকদের স্বাধীনভাবে পাঠদান করার ব্যবস্থা করে দিয়ে, শিক্ষকদের সুখ দুঃখের কথাগুলো শুনে,তদানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিক্ষকদের কষ্ট লাঘব করে দিন,আমরা শিক্ষকরা জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত সমৃদ্ধ জাতি উপহার দেব। আর মনে রাখতে হবে প্রাথমিকের শিক্ষকরা কিন্তু যন্ত্রমানব নন!

লেখক: শিক্ষক

  • সর্বশেষ
  • পঠিত