ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

অভিমানের দাহন!

  সাব্বির আহমেদ

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২১, ১৮:৩১

অভিমানের দাহন!
ছবি: লেখক

২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলার শফিউল ইসলামকে নিয়ে হারা ম্যাচ জিতিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন। এরপর আর পিছু তাকাতে হয়নি। রয়েসয়ে খেলে পেয়েছেন সাইলেন্স কিলারের তকমা। গেল বিশ্বকাপে হাঁকান পরপর সেঞ্চুরি। আর নিদহাস কাপের অবদান বাদই দিলাম।

এবার একটু একচোখা মনোভাব থেকে ঘুরে আসি-

ময়মনসিংহের ছেলেপেলেরা এমনিতেই সহজ সরল হয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তার ব্যতিক্রম নয়। সারা বছরেও পত্রিকা টেলিভিশনে তার দুই-চারটা সাক্ষাৎকার পাবেন না। বিজ্ঞাপনেও তেমন চোখে পড়বে না। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মাহমুদউল্লাহ দলের আট নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছে৷ ভাগ্য খানিকটা অনুকূলে থাকলে কখনো ছয় সাত নম্বরে।

যেখানে নেমেছেন সেখানেই ক্লিক করেছেন৷ উজাড় করে দিয়েছেন সেরাটা। প্রথম দিকে নিয়মিত বল করতেন, সফলতাও পান। পরে আবার এই সুযোগ গায়েব হয়ে যায়।

একসময় রিয়াদকে নিয়ে সমালোচনা হতো তার নাকি স্ট্রাইক রেট মন্দ। বল খায় প্রচুর। কিন্তু খাদ থেকে যে যাত্রীগুলো জীবিত উদ্ধার করে, সেটা বেমালুম ভুলে যায়....। বল যেহেতু বেশি খায়, তাহলে এই শান্তদেহী মাহমুদউল্লাহ টেস্টে ভালো করবে। ভালোই যাচ্ছিল, উপরওয়ালাদের পছন্দসই।

হঠাৎ বছরখানেক ধরে টেস্টে তিনি অনুপস্থিত। কারণ হিসেবে কি জানি আউলা ঝাউলা যুক্তি দেখাইছিল, মনে নেই। কেউ কেউ বলছিল, ইনজুরি। আবার অনেকে বলছিল মাহমুদউল্লাহ খুব চালিয়ে খেলে টেস্টে, তাকে বাদ রাখাই উচিত।

আসলে অভাগা যেদিকে যায় সাগর সেদিকে শুকিয়ে যায়। এই সাইলেন্ট কিলারকে নিয়ে রীতিমতো সাইবার বুলিং করা হয়েছে। খোদ বিসিবি প্রধান যেভাবে মন্তব্য করলেন, রিয়াদ নাকি তার বাসায় গিয়ে টেস্টে রাখতে বলেছেন। মনে হচ্ছিল আমাদের পাড়ার খলিল্লার টেকের খেলা! গ্রামের লুঙ্গি টেনে চলা মাদবরকে বলেকয়ে যদি খেলানো যায় আরকি!

দেখুন, ভেতরে কত অভিমানের দাহন ছিল। কিন্তু কাউকেই প্রকাশ করেননি। সুযোগ পেয়ে নিজের জাতকে শেষবারের মতো চিনিয়ে ঠাস করে আল-বিদা বলে দিলেন। অভিমানকেই সত্যি করলেন। পারলেন না কেউ ভাঙাতে। একজন বঞ্চনার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে তৈরি করা যে কত সাধনার, টের পাবে হাড়ে হাড়ে।

মিস্টার ফিনিশারের কি অভিমান শত চেষ্টা করেও জানা যায়নি। ভয় হচ্ছে লাল-সবুজেও না জানি কবে ফিনিশ জানিয়ে দেন।

লেখকঃ গণমাধ্যমকর্মী

  • সর্বশেষ
  • পঠিত