ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

নতুন সংগঠনের ঘোষণা দিলেন মান্না

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৫৭

নতুন সংগঠনের ঘোষণা দিলেন মান্না
ফাইল ছবি

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’ নামে একটি নতুন সংগঠনের আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

সোমবার মৎস্য ভবনের সামনে সড়কে গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি ঘোষণা দেন। সমাবেশে নেতা-কর্মীদের হাতে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা ছাড়া সরকারের পদত্যাগের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার ছিলো।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজকে এখানে একটা সংগঠনের কথা বলেছি সেটা হচ্ছে, ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’। এটা নাগরিক ঐক্যের না, এটা বিএনপির না, এটা কোনো দলের না। এটা সবার। এজন্য শহীদুল আলমের মতো আন্তর্জাতিক ফটো সাংবাদিক এসেছেন, এজন্য টকশোতে নাম ঘোষণা হলে সবাই বসে থাকে আসিফ নজরুলের কথা শুনি, উনি এসেছেন। আমি বক্তৃতা করতে করতে দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ছিলেন অধ্যাপক সিআর আবরার, উনারও আসার কথা ছিলো, উনি মঞ্চ পর্যন্ত কেনো আসেননি, আমি দেখিনি, নিচে দাঁড়িয়ে আছেন। একটু হাত তুলে সবাইকে একটু দেখান। উনারাও এসেছেন কেনো? মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সবাইকে মিলেই এই গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মান্না বলেন. আমি বলি, পাড়ায় পাড়ায় কমিটি (নতুন সংগঠন) করা শুরু করেন। যত তাড়াতাড়ি করবো, তত তাড়াতাড়ি প্রথম এই সরকারকে কার্ড দেখাব। কী কার্ড? আগে হলুদ কার্ড দেখাই, পরে আরেকটা হলুদ কার্ড দেবো।

তিনি বলেন, ভাই একবারে লাল কার্ড দিলে সেটার যদি রং না থাকে। কার্ড যদি দেই তাহলে ওই কার্ড কার্যকরী করতে হবে। অতএব একটু হিসাব করেই নামছি। আমি শুধু এটা বলতে চাই যেভাবে আজ এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, এভাবে সারাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করবার জন্য যেটুকু কাজ করার জন্য দরকার তা করতে হবে। আর এর মধ্যে যদি বড় কিছু ঘটে তাহলে তৈরি থাকেন যেকোনো সময়ে এই সরকারের পতনের জন্য সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি দেবো। প্রতিজ্ঞা একটা আমরা এই আন্দোলন কবর, আজ থেকে সেই আন্দোলনের শুরু। আজ থেকেই লড়াই শুরু। এই লড়াই চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত বিজয় অর্জিত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।

তিনি বলেন, আজকে সমাবেশ করছি। আমরা আবার আসব শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আছি, যাবো না।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, উনি পারলে বোধহয় সূর্যটাও ডুবায়ে দেবেন। একটাই বলতে চাই, যাবেন তবে ভদ্রভাবে যাবেন না অভদ্র যাবেন এটা ডিসাইড করেন। আপনাকে যেতে হবে। আপনার থাকার আর কোনো সুযোগ নাই। সব রাস্তায় বন্ধ হয়ে গেছে। কিভাবে যাবেন আপনি সিদ্ধান্ত নিন।

তিনি বলেন, দেশটা বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়। দেশ বিক্রি করে দিয়ে আজকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমি কবর থেকে তুলতে পারলে জিজ্ঞাসা করতাম- এজন্য কী জীবন দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের গিয়েছিলাম- এই বাংলাদেশ, আজকে ডাকাতদের এই বাংলাদেশ দেখার জন্য। আমি আল্লাহর কাছে বলি এই দস্যু, এই খুনি সন্ত্রাসী, এই মিথ্যুক, এই জুলুমবাজ, এই চাঁদাবাজের পতনের আগে আমার নিও না। ওরা লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে গেছে, অনেকে লন্ডনে বাড়ি করেছে, আমেরিকা, কানাডায় বাড়ি করেছে। এরা গোষ্ঠিতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছে। একে রুখতে হবে, এদের বিদায় করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, শুধুমাত্র যে আমাদের গণতন্ত্রের নির্বাচন ব্যবস্থা বা গণতন্ত্রের সমাধি হয়েছে সেটা না, আমাদের বাক স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা সমস্ত কিছু হরণ করা হয়েছে। গণতন্ত্র মানে হচ্ছে, প্রত্যেকটা মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা থাকবে, প্রত্যেকটা মানুষের স্বাধীন অধিকার থাকবে, সেই অধিকার হরণ করার কারো অধিকার নাই। আমি আশা করি, বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম সেটা অব্যাহত থাকবে। আমরা বাংলাদেশের স্বত্বাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা আমরা কেউ যেন এই লড়াই থেকে সরে না যাই।

মান্নার সভাপতিত্বে আত্মপ্রকাশ পাওয়া এই সংগঠনের গঠিত মঞ্চে জেএসডির আসম আবদুর রব, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নুর হোসাইন কাশেমী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের শাহ মো. আবু জাফর, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কেএস/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত