আর্থিক খাতে লুটপাট বন্ধ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:৩৪
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ঋণখেলাপিদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে লুটপাট বন্ধ না হলে অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচির হুমকিও দিয়েছেন তারা।
বুধবার ঢাকার দৈনিক বাংলা মোড়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি আসে।
ব্যাংক খাতে ‘লুটপাটের’ প্রতিবাদে বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘেরাওয়ে মিছিল নিয়ে মতিঝিলের দিকে রওনা হয়েছিল বাম জোট। দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশের বাধা পেয়ে সেখানেই সমাবেশ করে তারা।
সমাবেশ শেষে জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে আসে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কবাদীর) কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা হামিদুল হক।
বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংক, আর্থিক খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও নৈরাজ্য চলছে। ব্যাংকগুলোতে তারল্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরকার ঋণ খেলাপি ব্যাংক ডাকাতদের ভিআইপি, সিআইপি মর্যাদা দিয়ে পুরস্কৃত করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন ব্যাংক খোলার অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকারের চাপে ব্যর্থ হয়েছে। মন্ত্রী-এমপিরা ক্ষমতার জোরে নামে বেনামে ব্যাংক খুলছে। যেমন, আইনমন্ত্রী তার মায়ের নামে ব্যাংক খুলেছে। অর্থমন্ত্রী নিজে স্বীকার করেছে বাংলাদেশের আর্থিক খাত ভালো না।
শাহ আলম বলেন, লুটপাটের অর্থনীতি ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এক মোহনায় এসে মিলেছে। দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার জন্য সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। ঋণ খেলাপিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেশবাসী দেখছে না।
জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার প্রতিদিন আমাদের উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছে অথচ প্রতিদিন দেশের ব্যাংকের টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে। রি-শিডিউলের নামে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখানো হয়। ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা নয়, এর পরিমাণ হবে ২ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকা।
বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালকরা ২ লাখ কোটি টাকার মতো ঋণ নিয়েছে। চোরে চোরে খালাতো ভাই এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মেরে দিচ্ছে। এই সব লুটপাটকারী সরকারের সহযোগিতায় এ কাজ করছে।
হামিদুল হক বলেন, অর্থমন্ত্রী দেশি বিদেশি লুটেরাদের ফায়দা লোটার নানা ব্যবস্থা করে দিয়েছে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট অর্থমন্ত্রীর সার্টিফিকেট বাগিয়ে নিয়েছে। বাস্তবে সে সবচেয়ে নিকৃষ্ট অর্থমন্ত্রী।
সাইফুল হক বলেন, চুনোপুটিদের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করা হচ্ছে আর রাঘব-বোয়ালরা টাকা কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে, সরকার এদের পাহারা দিচ্ছে। পাপিয়ার মতো মাফিয়ারা পুরো দেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এদের হাতে দেশ এখন জিম্মি।