ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনায় মৃত্যু বাড়ায় রাজধানীতে লাশ দাফন বেশি: বিএনপি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২০, ১৭:২৯

করোনায় মৃত্যু বাড়ায় রাজধানীতে লাশ দাফন বেশি: বিএনপি

করোনায় মৃত্যু অনেক বেড়ে যাওয়ার রাজধানীতে লাশ দাফন বেশি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি হিসাবের সঙ্গে আক্রান্ত ও মৃত্যুর আকাশ-পাতাল তফাৎ। ঢাকা শহরের কিছু কবর স্থানে লাশ দাফনের এই বছরের চিত্র ও বিগত বছরের চিত্র তুলনা করলেই বুঝতে পারবেন। রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে ২০১৯ সালের মে মাসে ৭৭৭টি লাশ দাফন হয়। আর এ বছর মে মাসে দাফন করা হয়েছে ১০৩৪টি। আর চলতি জুনের প্রথম ১৫ দিনে লাশ দাফন করা হয়েছে ৫১৫টি। এর অধিকাংশ করোনা আক্রান্ত রোগীদের লাশ। আজিমপুর কবরস্থানে লাশ দাফনের জায়গাও কমে যাচ্ছে।

রাজধানীর পোস্তগোলা শশ্মানে ২০১৯ সালে ৭৬টি সৎকার করা হয়। চলতি বছরের জুন মাসের শুধু প্রথম ১৫ দিনে লাশ সৎকার করা হয়েছে ৮৫টি। জুরাইন কবরস্থানে চলতি বছরের মার্চে থেকে জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনে ১২০২টি লাশ দাফন করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৯ সালের ওই সময়ে ৮৪৯ টি লাশ দাফন করা হয়েছিল। অর্থ্যাৎ করোনায় মৃত্যু অনেক বেড়েছে, তাই লাশ দাফন হয়েছে বেশি।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে দিনে পিসিআর মেশিনে শুধু ঢাকায় অন্তত ১৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা উচিত। সাথে র‌্যাপিড টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, জোনভিত্তিক লকডাউন করে যদি সেখানে উপসর্গ এবং উপসর্গহীনদের ব্যাপকভাবে নমুনা পরীক্ষা করা না হয়, তাহলে সুফল পাওয়া যাবে না।

এ প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্যের আবিষ্কৃত কীটের কথা উল্লেখ করতে হয়। পিজি হাসপাতাল বলছে, এই কিটের এন্টিবডি পরীক্ষার সফলতা ৭০ শতাংশ। পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার সফলতাও ৭২ শতাংশের বেশি নয়। তাহলে কেন এই কিটের ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে এন্টিবডি টেস্ট করা হচ্ছে না। বরং এ নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে করোনা রোগীদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে কীট আদমানির করতে চায় স্বাস্থ্য বিভাগ। দেশে স্বল্পমূল্যে কিট থাকা সত্ত্বেও কেন বাইর থেকে আনতে হবে। এর পেছনে কি কমিশন বাণিজ্য লুকিয়ে আছে?

বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনার প্রকৃত তথ্যও গুম করছে গুম-খুনের এই সরকার। জনমনে ধারণা গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে যে মৃত ও আক্রান্তের সঠিক চিত্র লুকিয়ে রাখছে ক্ষমতাসীনরা। এই যেমন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ১ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে করোনা উপসর্গ নিয়ে। গত ১০ দিনের (বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত) হিসাব অনুযায়ী ২৩ জুন সারাদেশে ১৭ জন, ২২ জুন ১৯ জন, ২১ তারিখে ১৬, ২০ তারিখে ১৭, ১৯ জুন ৩৪, ১৮ জুন ১৮, ১৭ জুন ১৬, ১৬ জুন ২৪, ১৫ তারিখে ১৭ জন, ১৪ তারিখে ১৬ ও ১৩ তারিখে ৩০ জন মারা গেছেন জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে। যার বেশিরভাগই হিসাবে আসছে না।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সরকারি হিসেবে মারা গেছেন ৬৪ জন। কিন্তু উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৩৬০ জন। অর্থাৎ উপসর্গে মারা গেছেন ৫ গুন বেশি মানুষ। যার প্রমাণ এসেছে ২৩ তারিখের গণমাধ্যমগুলোতেই। গত ২ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালু হয়। তারপর ২২ জুন রাত পর্যন্ত অর্থ্যাৎ ৫১ দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটি ৭৪৯ জন মারা গেছেন।

ফখরুল জানান, গত ২০ মার্চ থেকে গত ২৪ জুন পর্যন্ত সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ- সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ অংশগ্রহণে অসহায় দুস্থ মানুষের মাঝে চুয়ান্ন লক্ষ বার হাজার চারশত ষোলটি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী সহযোগিতা করা হয়। এই সহযোগিতার আওতায় দুই কোটি ষোল লক্ষ ঊনপঞ্চাশ হাজার ছয়শত চৌষট্টি জন মানুষ উপকৃত হয়েছে। এছাড়া ড্যাব, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও দলের নেতৃবৃন্দ কয়েক লক্ষ মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পিপি বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত