ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারে বিরোধিতা করে জিয়া ও বিএনপি: কাদের

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২০, ১৫:৫৩

বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারে বিরোধিতা করে জিয়া ও বিএনপি: কাদের

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারের হত্যকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার যাতে না হয়, সেজন্য বিভিন্ন সময়ে জিয়াউর রহমান এবং পরবর্তীতে তার দল বিএনপি বিরোধিতা করেছে। এ মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে সকালে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং বনানী কবরস্থানে আগস্টে নিহতদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এ কথা আর কারো বুঝতে বাকি নেই জাতির পিতাকে হত্যার মূল লক্ষ্য ছিলো একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়া। আর স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পথচলা থামিয়ে দেয়া। তারা একাত্তরের প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলো, কারণ তিনি তদানীন্তন পরাশক্তি তথা বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে গিয়ে এক দীর্ঘ মুক্তির সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালনার লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিলো জানিয়ে তিনি বলেন, আগস্ট হত্যার পরিকল্পনাকারীদের পরামর্শে খুনি মোশতাক কুখ্যাত ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাতির পিতার হত্যার বিচার বন্ধ করে রেখেছিলো। পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীতে ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশসহ সকল অবৈধ ও অসাংবিধানিক বিষয়কে বৈধতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রেখেছিলো। এরপর প্রায় দুই যুগ ধরে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার বন্ধ ছিলো।

বিএনপি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো দাবি করে তিনি বলেন, পরবর্তী সরকার ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশের দোহাই দিয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করতে দেয়নি। তারা হত্যকারীদের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলো। ১৯৯১ সালে সংসদে ইন্ডেমনি্টি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি তুলেছিলাম। বিএনপি তখন বলেছিলো এই অধ্যাদেশ বাতিল করা যাবে না। কারণ একটি পঞ্চদশ সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানের অংশ হয়ে গেছে। আমরা বারবার বলেছি এটি একটি সাধারণ আইন, যা সংশোধনের মেজরিটি দিয়ে বাতিল করা যায়। বিএনপির ৫ বছরের মেয়াদে জাতির পিতার হত্যার বিচারে কোনো কাজ করেনি। বরং খুনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। এমনকি পরবর্তীতে ১৫ ফেব্রুংয়ারি প্রহসনের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি রশিদকে তারা বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়ে জাতীয় সংসদকে কলঙ্কিত করেছিলো।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কুখ্যাত ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে এভাবে জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করেছিলাম। কিন্তু আবারো ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে বিচারের কার্ক্রম বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ কক্ষমতায় এসে বহুল প্রতীক্ষিত বিচার সম্পন্ন হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন খুনি বিদেশে পলাতক থাকায় সম্পূর্ণ মৃত্যুদণ্ড কার্কর হয়নি। অনেকেরই মৃত্যুদণ্ড কার্কর হয়েছে। যে পাঁচজন বিদেশের মাটিতে পালিয়ে রয়েছে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্কর করার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সহযোগিতা চেয়েছি। আমাদের প্রয়াস এবং কূটনৈতিক উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারীদের বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয়েছিলো। এই হত্যকাণ্ডে বিশ্ব স্তম্বিত হয়েছিলো।ইল্যান্ডের স্যার মাস ইউলিয়ম ইউসির নেতৃত্বে বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে সুষ্ঠ তদেন্তের স্বার্থে একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছিলো। তারা বাংলাদেশে আসতে চাইলে জিয়াউর রহমান তাদের ভিসা দেয়া হয়নি।

বিএনপি ১৫ আগস্টে এবার কেক না কেটে জাতিকে স্বস্তি দিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমের কিছু দুস্কৃতিকারী মহান এই নেতাকে হত্যা করে। এবারের শোক দিবসটি আমাদের কাছে অধিক তাৎপর্যময়, কারণ এ বছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। যারা ভুয়া জন্মদিনে কেক কাটতো এবার না কেটে জাতিকে এক অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিয়েছে। এটি তাদের শুভবুদ্ধির উদয় বলে আমরা ধন্যবাদ জানাই।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত