নূরের কৌশল!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২২:০৫
দীর্ঘদিন আলোচনার বাইরে ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়া নুরুল হক নূর। ধর্ষণ মামলার আসামি হওয়ার মাধ্যমে সম্প্রতি তিনি ফের আলোচনায় এসেছেন। যদিও হঠাৎ করেই খবরের শিরোনাম হওয়ার ঘটনাটিকে অনেকেই নুরের কৌশল হিসেবে মনে করছেন। কারণ হিসেবে সমালোচকরা দাবি করছেন, যে মেয়েটি মামলা দায়ের করেছেন, তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথেই সম্পৃক্ত ছিলেন। তাই নুরের বিরুদ্ধে করা মামলাটি সাজানো হতে পারে।
সামলোচকদের দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে একটি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন নুর। পরবর্তীতে একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলার চেয়ে ব্যক্তি জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে থাকেন। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে তার দূরত্ব বাড়ে। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তাও কমতে থাকে।
ডাকসু ভিপির পদ থেকে সরে যাওয়ার পার বিভিন্ন মহলে গ্রহণযোগ্যতাও কমে আসে নুরের। মনযোগ থেকে সরে যেতে থাকেন। ঠিক সেই সময়ে দল গঠনের ঘোষণা দিয়ে আবারো আলোচনার জন্ম দেন তিনি। তবে জাতীয় বিভিন্ন ইস্যুর কারণে নুরকে নিয়ে সেই আলোচনার জল খুব বেশি দূর গড়ায়নি। সর্বশেষ ধর্ষণ মামলায় তাকে আসামি করায় তিনি আবারো আলোচনায় আসেন।
বেশ কিছু দিন গণমাধ্যমে গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না নুর। রাজনৈতিক কার্যক্রমেও তাকে খুব একটা দেখা যাচ্ছিলো না। রাজনৈতিকভাবেও বেশ পিছিয়ে পড়েছিলেন তিনি। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোনো দাবির পক্ষে জোরালো অবস্থান না নেয়ার কারণে ক্যাম্পাসেও প্রভাব হারান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝেও নুরের জনপ্রিয়তা তলানিতে গিয়ে ঠেকে।
বস্তুত, নূরের রাজনৈতিক জীবন পুরোটাই রহস্যে ঘেরা। ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি। কিছুদিনের মধ্যেই ভোল পাল্টে নেতৃত্ব দেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে। দাড় করান সরকার বিরোধী প্লাটফর্ম। ডাকসুর ভিপি হওয়ার পর রাতারাতি বদলে যায় তার লাইফস্টাইল। উচ্চবিত্ত শ্রেণির সাথে ওঠাবসা বাড়তে থাকে। তবে বিত্তবৈভবে চলাফেরার বিষয়টি সব সময় এড়িয়ে চলেছেন। এমনকি নিজের আয়ের উৎসও কখনো প্রকাশ করেননি। তিনি যে সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই সংগঠন পরিচালনার ব্যয়ও তিনি কখনো খোলসা করেনি।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারবিরোধী বিভিন্ন চক্র নুরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে থাকে। তারা সরকারবিরোধী ইস্যু তৈরি করে নুরকে ব্যবহার করে। একটি অবস্থান তৈরির পর নুর নিজেই রাজনৈতিক দল গঠনের চিন্তা করেন এবং নিজেই সেটির ঘোষণা দেন।
সম্প্রতি ঢাকার দুটি আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছেন নুরুল হক নূর। এর মধ্যে ঢাকা-১৮ আসনে তিনি নিজে প্রার্থী হবেন, আর ঢাকা-৫ আসনে প্রার্থী করবেন তার সংগঠনের অন্য একজনকে। একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে নূর বলেন, সামনে যেহেতু ঢাকার দুটি সংসদীয় উপনির্বাচন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নিজেদের অবস্থানটাকে আরও ক্লিয়ার করতে চাই। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চাই। ঢাকা-৫ আসনেও আমরা তরুণ প্রার্থী দেব।
আরো পড়ুন
ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার মামলা
বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে