ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর সংখ্যা বাড়ছেই

  শেখ তৌফিকুর রহমান

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২০, ১২:১১  
আপডেট :
 ১২ নভেম্বর ২০২০, ১৫:৪৭

কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর সংখ্যা বাড়ছেই

দেশের কারাগারগুলোতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিছু নেতাকর্মী জামিনে বেরিয়ে এলেও বেশিরভাগকেই থাকতে হচ্ছে কারাগারে। এর ওপর প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটক হচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। তাদের জায়গা হচ্ছে কারাগারে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্নীতি, অনিয়ম আর অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কারণে সরকার কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না। অপরাধ করলেই তাকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দলীয় পরিচয় কিংবা সরকারে তাদের প্রভাবের বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে না কোনোভাবেই।

গেল বছরের অক্টোবরে ক্যাসিনোকাণ্ডে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে আটক করে র‌্যাব। একইসঙ্গে আটক হন সহ-সভাপতি আরমানও। মাদক-সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর থেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বহু মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী আটক হয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক অভিযানে আটক হন সরকার দলীয় বহু নেতাকর্মীও।

শুদ্ধি অভিযানে আটক হয়ে কারাগারে থাকা নেতাকর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা জি কে শামীম, কৃষক লীগ নেতা শফিকুল আলম, মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, গেন্ডারিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু, রুপম ভুঁইয়া এবং অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সেলিম প্রধান অন্যতম।

তবে শুধু রাজধানীতেই নয়, সারাদেশেই বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আটক হচ্ছেন। আবার অনেক জায়গায় দলীয় কোন্দলের কারণে অথবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় করা মামলা-পাল্টা মামলায় আটক হচ্ছেন অনেক নেতা। জায়গা দখল কিংবা চাঁদাবাজির কারণেও আটক হওয়ার ঘটনা ঘটছে।

সর্বশেষ গেল ২৬ অক্টোবর নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর করে রক্ষা পাননি ঢাকা-৭ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন তিনি। এ ঘটনার পর হাজি সেলিমের দুর্নীতি মামলার নথিও তলব করা হয়েছে।

নেতারা বলছেন, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে অন্য মতাদর্শের লোকজন দলে ঢুকে পড়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কারণে তারাও আটক হয়ে কারাগারে যাচ্ছেন। ফলে কারাগারে আওয়ামী লীগসহ নামধারী নেতাকর্মীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

নেতাকর্মীদের আটক হওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার যে কোনো পদক্ষেপকে আমরা মনে করি দেশ এবং জাতির জন্য উপকার। উনার কাছে কোনো দল নেই, মত নেই। যে অপরাধ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে কোনো হিসাব করে দেখার বিষয় নেই।’

এস এম কামাল হোসেন আরো বলেন, ‘অপরাধী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিবাজ, ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারের নীতি জিরো টলারেন্স। কোনো অন্যায়কারী শেখ হাসিনা সরকারের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পাবে না, সাহায্য সহযোগিতা পাবে না।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘অনিয়মের বিরুদ্ধে আমাদের নেত্রীর অবস্থান জিরো টলারেন্স। দলের পক্ষ থেকেও সেটি অব্যাহত রয়েছে। আমরা সতর্ক রয়েছি। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে কাউকেই ছাড় দেয়া হয়নি। রাষ্ট্রীয়ভাবে শাস্তি দেয়া হয়েছে, আবার দলীয়ভাবেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’

আরো পড়ুন

আওয়ামী লীগ কাজ করছে, অন্যরা সমালোচনায়

তিন আওয়ামী লীগ নেতার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ

মধ্যরাতে পরকীয়া প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে ধরা আওয়ামী লীগ নেতা

ব্যক্তির অপকর্মের দায় আওয়ামী লীগ বহন করবে না

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত