ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

কোন্দল নিরসনে কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ

  শেখ তৌফিকুর রহমান

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২০, ২০:৪৭

কোন্দল নিরসনে কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বার বার সতর্ক কিংবা সমাধানের চেষ্টা করা হলেও কোনো ধরণের লক্ষণীয় অগ্রগতি নেই। ফলে তৃণমূলের দায়িত্বশীল নেতাদের প্রতি চরম বিরক্ত দলীয় হাইকমান্ড। এবার কোন্দল ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে গিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। নরসিংদী এবং সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদের চার নেতাকে এরই মধ্যে অব্যাহিত দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কোন্দলে জড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা। একে অন্যের চরিত্র হনন করছেন। কেন্দ্র থেকে বার বার তাগাদা দেয়ার পরও সময়মতো পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা জমা দিতে পারছেন না অনেকেই। আবার বেশ কয়েকটি সাংগঠনিক জেলায় দুটি করে কমিটির তালিকা তৈরির ঘটনাও ঘটেছে। অনেক কমিটিতে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের জায়গা না দিয়ে নিজেদের লোক দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগও রয়েছে।

রোববার আওয়ামী লীগের সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দলটির সভাপতির নির্দেশক্রমে ও সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক এই অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। তার কয়েক দিন আগেই নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম হিরু এবং সাধারণ সম্পাদক আ. মতিন ভূঞাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, তৃণমূলের কোন্দলের কারণে বিভিন্ন জেলা ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া জমা দেয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বহু অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগ আমলে নিয়ে এবার অ্যাকশন শুরু হয়েছে। দুটি জেলার শীর্ষ নেতাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সামনে আরো কয়েকটি জেলা ইউনিটের ক্ষেত্রেও এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

জেলা কমিটির শীর্ষ নেতাদের অব্যাহতির বিষয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মী তাদের দলীয় আনুগত্য, দলের শৃঙ্খলার প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে। সেগুলো মেনে চলতে হবে। এর ব্যাত্যয় ঘটলে বা সেই ব্যাত্যয় যদি দলের প্রধানের কাছে প্রতীয়মান হয় তাহলে তাদের ব্যাপারে এই ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, দলকে গতিশীল করতে, জনপ্রিয় আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তৃণমূল থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। সেই জায়গায় যদি কোনো সংকট থাকে সেটি নিরসন করতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভালো কিছু প্রত্যাশার জন্যই এটি।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা সব সময় তৃণমূলের নেতা কর্মীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তিনি সব সময়ই তাদের খোঁজ খবর রাখেন। জেলা ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব হচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর রাখা, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, দলের কর্মসূচি জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। যারা দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারবে না, যাদের মাধ্যমে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে, তাদের জন্য এটি একটি সতর্ক সংকেত।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত