ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

নতুন রাজনৈতিক মিত্রের সন্ধানে জামায়াত

  কিরণ শেখ

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ১০:২৩

নতুন রাজনৈতিক মিত্রের সন্ধানে জামায়াত
ছবি প্রতীকী

একাত্তর প্রশ্নে মতবিরোধে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা পদত্যাগ করছেন। পদত্যাগের পর এই নেতা নতুন নামে দল ও সংগঠন করেছেন। এর আগেও জামায়াত এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরে কয়েকবার ভাঙন ও বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এবারের ভাঙনে দলটি সাংগঠনিকভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।

তবে, দলটি এখন নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। আর এটা জনগণকে জানান দেয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ফন্দিফিকিরের চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে দলটি দু’জন খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক মঞ্চ করার চেষ্টা করেছে।

আর চলতি মাসের ১৬ জানুয়ারি আরেক খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীমের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণের মধ্যে আবারো দলটি রাজনীতিতে দৃশ্যমান হওয়ার চেষ্টা করছে। এই দুই নেতা বা দল ছাড়াও আরো বিকল্প মিত্রের সন্ধান করছে জামায়াত।

নতুন রাজনৈতিক মিত্রের সন্ধানের পাশাপাশি দলটি অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম এবং কমিটি গঠনও করছে। আর এর মধ্যে দলটি আবারো নতুন মিত্রদের নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় হতে চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমরা তো সব সময় কাজকর্ম করি। আর কী বলবো?

এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদে যোগ দেয়া নিয়ে বিএনপির সঙ্গে মতভেদ দেখা দেয় অলি আহমদের। পরে তিনি জাতীয় মুক্তি মঞ্চ নামে নতুন একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেন। এতে মঞ্চে জামায়াতকে রাখতেও আপত্তি ছিল না অলি আহমদের।

বিএনপিতে মুক্তিযোদ্ধা অলি আহমদ থাকার সময় জামায়াতবিরোধী নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। পরে বিএনপি ছেড়ে এলডিপি গঠন করলেও ২০ দলে যোগ দেননি তিনি। কারণ জোটে জামায়াত আছে। কিন্তু এখন সেই অলি আহমদ জামায়াতকে নিয়ে মঞ্চ করতে চাচ্ছেন!

জামায়াতকে জাতীয় মুক্তি মঞ্চে রাখার বিষয়ে অলি আহমদ বলেন, নতুন রাজনৈতিক মঞ্চে জামায়াতকে রাখতে আমার আপত্তি নেই।

অন্যদিকে গত শনিবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে একটি হোটেলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরীক দল কল্যাণ পার্টির উদ্যোগে এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের ব্যানারে লেখা ছিল- ২০২০’র জন্য মহান আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া; ২০২১’র জন্য মহান আল্লাহর নিকট দয়া প্রার্থনা। অনুষ্ঠানের আহ্বানে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বীর প্রতীক। যিনি কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান।

দোয়া মাহফিলের অনুষ্ঠানে অর্ধশতাধিক সাবেক সেনা কর্মকর্তা, প্রায় ১৫ সাবেক আমলা, বিভিন্ন পেশাজীবী ও বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরীক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানের ব্যানারে দোয়া মাহফিল লেখা থাকলেও এটাকে অনেকে জামায়াতের পরিকল্পনা বলে মনে করছেন। দোয়া মাহফিলের প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীমের দলকে রাজনৈতিক মিত্র করতে চাচ্ছে। মূলত অনুষ্ঠানটি এই কারণে আয়োজন করা হয়েছিল। আর অনুষ্ঠানে সাবেক সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তা ও আমলাসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাই এই অনুষ্ঠানকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এ ব্যাপারে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠানের সঙ্গে কল্পনা, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে বিএনপি ও জামায়াতের এক সুতা পরিমাণও সম্পর্ক ছিল না। এটা একান্তভাবে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্যোগে। আর আমাকে সহযোগিতা করেছেন ও প্রেরণা দিয়েছেন একঝাঁক সাবেক সামরিক কর্মকর্তা এবং প্রচুর সংখ্যক পেশাজীবী। তাদের প্রেরণা দেওয়ার কারণ, তারা একটি বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক পথের নির্দেশনা চান। কারণ তাদের মতে, বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোলন ঘটাতে না পারলে দেশ ও জাতির সামনে সমূহ বিপদ রয়েছে।

আরো পড়ুন

দোয়া মাহফিলের নামে ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে কারা?​

সৈয়দ ইবরাহিমের রহস্যঘেরা একটি সভা​

ভোটে বিএনপির ভরাডুবির কারণ জানালেন কাদের

ডাকাতি করে পৌরসভা দখল করেছে ক্ষমতাসীনরা​

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত