যুদ্ধের আহ্বান ফখরুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২১, ২০:২৫
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরেকবার যুদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উপদযাপন কমিটির উদ্যোগে ‘স্বাধীনতার ইতেশহার’ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সমস্ত শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই সভার মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল, গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক প্রতিষ্ঠানকে আহবান জানাতে চাই যে, আসুন ১৯৭১ সালে আমরা যে চেতনা নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম সেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করা, আমাদের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আরেকবার লড়াই করি, আরেকবার যুদ্ধ করি।
তিনি বলেন, আমরা কারো সেবাদাসে পরিণত হতে চাই না, আমরা কারো হুকুমের দাস হতে চাই না। আমরা আমাদের যে অধিকার সেই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা আমাদের নিজেদেরকে আরো বিকশিত করতে চাই, আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরের জন্য সত্যিকার অর্থেই একটা আবাসস্থল গড়ে তুলতে চাই, যেখানে তারা মুক্ত বাতাস অবস্থায় বাস করতে পারবে। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হই, ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের ওপর যে দানব বসে আছে যেটা আমাদের সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সাহেব বলেছিলেন সরকার মনোস্টার। সেখান থেকে দেশকে আমরা মুক্ত করি।
ফখরুল বলেন, এই স্বাধীনতা সংগ্রাম যেটা হয়েছিলোম, স্বাধীনতার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম আমরা, স্বাধীনতার যে কমিটমেন্ট ছিলো, যে ইশতেহার ছিলো তার একটাও আওয়ামী লীগ সরকার কোনো দিনই পুরণ করেনি। তারা বাকশাল গঠন করেছিলো, পত্রিকা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলো, অধিকারগুলো হরণ করে নিয়েছিলো, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলো এই আওয়ামী লীগ। আজকে একটা ভিন্ন মোড়কে ছদ্মবেশে তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু রেখেছে।
তিনি বলেন, আজকে যে বিষয়ে আলোচনা করছি- শাহজাহান সিরাজের স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, তখনকার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ যারা স্বাধিকার আন্দোলনকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো, যারা অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যেও আন্দোলনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো তাদেরকে এখন আওয়ামী লীগ স্মরণ করে না। স্মরণ করে না আসম আবদুর রবকে, স্মরণ করে না শাহজাহান সিরাজকে।
স্বাধীনতার ইশতেহারের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে ব্যক্তি, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নির্ভেজাল গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে। কোথায়? আওয়ামী লীগের শাসনে বাংলাদেশে এই ১৫ বছরে কোথায় এইসব? এখন ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বৈষম্য আকাশসমান-পাহাড় সমান হয়ে গেছে, বাক স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা সব কিছু হরণ করা হয়ে গেছে। আর অঞ্চলে অঞ্চলে বৈষম্য আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
“তারা স্লোগান দেয়-উন্নয়ন, উন্নয়নের জোয়ার বইছে। আর সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে বেঁচে থাকার জন্য। এক শ্রেনীর মানুষ আওয়ামী লীগের যারা মদদপুষ্ঠ তারা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে পাঁচার করে দিচ্ছে। আরেক শ্রেনীর মানুষ চাকুরি হারাচ্ছে, খেতে পারছে না, চরম নৈরাশ্যের মধ্যে আছে। এই হচ্ছে তাদের (আওয়ামী লীগ) বাংলাদেশ।”
স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং জাতীয় কমিটির সদস্য আবদুস সালামে পরিচালনায় সভায় বিএনপির সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস