হেফাজতের সন্ত্রাস দমনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৫ সিদ্ধান্ত
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২১, ১৯:১৩
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বানচালে হেফাজত ও মৌলবাদীদের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস দমনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের সংখ্যালঘু ও আদিবাসী বিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে তদন্ত কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় পাঁচটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সোমবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১১টায় মহাখালী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় গৃহীত প্রস্তাব-
১. এই কমিশন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকে কেন্দ্র করে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সারা দেশে যে সন্ত্রাসী তান্ডব পরিচালনা করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওয়াজের নামে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ভিন্নধর্ম, ভিন্নমত ও ভিন্ন জীবনধারায় বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যে ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান করেছে তা মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ।২. তদন্তের ক্ষেত্রে ২০১৩ সালে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তদন্ত কমিশন ‘হেফাজত-জামায়াতের মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ৪০০ দিন’ প্রণয়নের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি ও শৃঙ্খলা অনুযায়ী কাজ করেছে তা অনুসরণ করা হবে।
৩. দ্রুত তদন্ত পরিচালনার জন্য কমিশনের সচিবালয়ে সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রাম থেকে আরও স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী ও আইনজীবীদের যুক্ত করতে হবে।
৪. সারা দেশে ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওয়াজের নামে প্ররোচনা সহ যে সব মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে সে সবের ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী এবং অনুসন্ধানকারী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের লিখিত বক্তব্য প্রেরকের নাম ঠিকানা সহ কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয় অর্পণ নিবাস, গ-১৬ মহাখালী, ঢাকা-১২১২ এবং ই-মেইল [email protected] এ পাঠাবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হলো।
ক) প্রেরিত প্রতিবেদনের সঙ্গে সম্ভব হলে ছবি, ভিডিও ক্লিপ, ইশতেহার, পোস্টার প্রভৃতি পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হলো।
খ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মের নামে ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণার নমুনা পাঠানোর জন্য দেশে ও বিদেশে অবস্থানকারী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
৫ কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন সুপারিশসহ শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশের সময়সীমা কমিশনের প্রথম সভার পর থেকে ১০০ দিন। আগামী ২২ জুলাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিশনের প্রতিবেদন সরকার ও জনগণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা হবে।
এসময় কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, কমিশনের সদস্য রাজনীতিবিদ রাশেদ খান মেনন এমপি, রাজনীতিবিদ হাসানুল হক ইনু এমপি, রাজনীতিবিদ ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ (সদস্য সচিব), সমন্বয়কারী কাজী মুকুল এবং সচিবালয়ের সদস্য: শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, সহকারী অধ্যাপক তপন পালিত, সাংবাদিক আবু সালেহ রনী, সাংবাদিক খায়রুল আলম, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, সমাজকর্মী সাইফ রায়হান, সমাজকর্মী শেখ আলী শাহনেওয়াজ, সমাজকর্মী মো. সাইফউদ্দিন রুবেল ও সমাজকর্মী তপন দাস উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও কমিশনে আরও চারজন সদস্য কো-অপ্ট করার সিদ্ধান্ত এই সভায় গৃহীত হয়েছে। তারা হচ্ছেন ১) অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ২) শিক্ষাবিদ ও কলাম লেখক মমতাজ লতিফ, ৩) শিক্ষাবিদ ও কথাশিল্পী মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং ৪) ইসলামী চিন্তাবিদ হাফেজ মওলানা জিয়াউল হাসান।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসএমআর