ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

কোভিড-১৯: সরকারের কাছে বিএনপির সাত প্রস্তাব

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১৫:০৮  
আপডেট :
 ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১৫:১৫

কোভিড-১৯: সরকারের কাছে বিএনপির সাত প্রস্তাব

করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট করে ৭টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।

শনিবার ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে বিএনপি যেসকল আশঙ্কা করেছিল ইতোমধ্যেই তার অনেক কিছু সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের জন্য রাষ্ট্র, সমাজ, দেশ সবকিছু। জিডিপির বিশাল সাইজ দিয়ে কী হবে যদি জনগণই বেঁচে থাকতে না পারে?

‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আশা করে, করোনা মহামারিকালে মাতৃভূমির প্রতিটি মানুষ যাতে সুস্থ থাকে, খেয়ে পরে বাঁচতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বছর নতুন দরিদ্র বেড়েছে ২ লক্ষ ৪৫ হাজার। এদেরকে মাথায় রেখে গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও প্রণোদনা প্যাকেজ ঢেলে সাজাতে হবে। এজন্য প্রয়োজন দেশপ্রেম, আন্তরিকতা এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক সদিচ্ছা।’ এবিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে পুনরায় কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়া হয়।

প্রস্তাবগুলো হলো- লকডাউনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ‘দিন আনে দিন খায়- এ শ্রেণীর গরিব দিনমজুর। পেশাজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের প্রত্যেককে রাষ্ট্রীয় বিশেষ তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ৩ মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা এককালীন নগদ অর্থ পৌঁছে দেয়া নিশ্চিত করা, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত সকল শ্রমিকদের প্রত্যেককে রাষ্ট্রীয় বিশেষ তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ৩ মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা এককালীন নগদ অর্থ প্রদান করা। এছাড়া নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা অর্থাৎ দারিদ্র্যের বর্তমান হার বিবেচনায় নিয়ে সমগ্র দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা সহায়তা প্যাকেজের আওতায় আনা, নিরপেক্ষভাবে দুঃস্থ উপকারভোগীদের তালিকা প্রস্তুত করা, ক্ষতিগ্রস্ত এসএমই, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প ও কৃষিখাতে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব তহবিল থেকে বিশেষ প্রণোদনা অর্থ বরাদ্দ দেয়া এবং প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পোদ্যোক্তাকে এ ঋণ প্রণোদনা নিশ্চিত করা, ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ প্রণোদনা প্রদান নিশ্চিত করা। এছাড়া ২০২০ সালের এপ্রিলে বিএনপির উপস্থাপিত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবাবলী সম্বলিত প্রণোদনা প্যাকেজকে যথাযথ মূল্যায়ন করে দ্রুত বাস্তবায়নের প্রস্তাবও দিয়েছে দলটি।

পুরো জাতি আজ এক মহাসঙ্কটের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত করছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ মুহূর্তে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে আমাদের এ দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে। অন্যথা এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।

সরকার লকডাউন কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর প্রধান কারণ লকডাউনের শর্ত অনুযায়ী খেটে খাওয়া মানুষের জন্য খাদ্যসংস্থান না করা এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা না করা। এর কিছুই না করে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা রীতিমতো অমানবিক ও অর্থহীন প্রচেষ্টা। বিবেচনায় নেয়া হয়নি ক্ষুধা করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর। খাদ্যের জোগান দিতে না পারলে গরিব মানুষকে যে ঘরে রাখা যাবে না, তা ভাবা হয়নি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনার টিকা সংগ্রহে স্বেচ্ছাচারিতা ও নতুন অনিশ্চয়তার সংবাদ আবারো সমগ্র জাতিকে গভীর হতাশা ও দুশ্চিন্তায় নিমজ্জিত করেছে। রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহার করে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ ও শেয়ারবাজার লুটপাটে অভিযুক্ত এক ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানকে টিকা সরবরাহের একচেটিয়া সুবিধা দিতে গিয়ে আজ সমগ্র জাতিকে এক ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে ভোটারবিহীন দুর্নীতিবাজ বর্তমান সরকার। আমরা সুস্পষ্টভাবে টিকা সংগ্রহে সরকারের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

‘প্রথম থেকেই ভারতের বিকল্প সূত্র থেকেও টিকা কেনার পরিকল্পনা নিলে আজ এ নিদারুণ অনিশ্চয়তায় পড়তে হত না। আমরা প্রথম থেকেই এ কথাই বলে আসছিলাম। অবিলম্বে অন্য সূত্র হতে পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহের দাবি জানাচ্ছি।’

ফখরুল বলেন, লকডাউনের নামে মূলত সরকার বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল ও আন্দোলনকারী আালেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন ঘোষণা করেছে। লকডাউনের শুরুর দিন থেকেই সারাদেশে ব্যাপকভাবে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দেশের প্রখ্যাত আলেম-ওলামাসহ বিএনপি ও এর অংগসংঠনের শত শত নেতাকর্মীকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সরকারের অপকর্ম, দুর্নীতি, অত্যাচার, নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যাতে কেউ কোনো শব্দ উচ্চারণ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে কোনো না কোনোভাবে নিবর্তনমূলক আইনের আওতায় এনে কন্ঠরোধ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা হচ্ছে?

বিরোধী মত দমনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার

কেএস/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত