ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিএনপির তৃতীয় দিনের বৈঠক

আন্দোলনকালে তৃতীয় সারির বিকল্প নেতৃত্ব তৈরির পরামর্শ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:১০  
আপডেট :
 ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৭

আন্দোলনকালে তৃতীয় সারির বিকল্প নেতৃত্ব তৈরির পরামর্শ
ছবি- সংগৃহীত

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মূল দল বিএনপিকেই রাজপথের আন্দোলনের সামনে নেতৃত্ব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতারা। তারা বলছেন, আন্দোলনকালীন সময়ের জন্য তৃতীয় সারি পর্যন্ত বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।

বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ধারাবাহিক ভার্চুয়াল বৈঠকের তৃতীয় দিনে দলের অঙ্গসংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন।

বিকেল ৪টায় এই বৈঠক শুরু হয়। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৯২ জন অংশ নেন। তবে বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন কৃষক দল ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন-জাসাসের কমিটি না থাকায় এই দুই সংগঠনের দায়িত্বশীল কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

মূলত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মকৌশল ঠিক করার লক্ষ্যে নেতাদের মতামত জানতে মঙ্গলবার থেকে এই ধারাবাহিক বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকের প্রথম দিন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের এবং দ্বিতীয় দিন দলের যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সহ সস্পাদকদের মতামত নেয় বিএনপি। আর তৃতীয় দিনের দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, তাঁতী দল, ওলামা দল, মৎস্যজীবীসহ অঙ্গসংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকদের সাথে দলটি এ বৈঠক করে।

সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে নেতারা অভিযোগ করে বলেন, আন্দোলনের সময়ে মূল নেতৃত্ব পালন করবে বিএনপি। কিন্তু সেই সময়ে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী, সাবেক এমপি, মন্ত্রীদের অনেককেই পাওয়া যায় না। এমনকি তারা মোবাইল পর্যন্ত বন্ধ করে নিরুদ্দেশ থাকেন। আর ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কর্মীরা রাজপথে মার খান। এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের পাশে মূল বিএনপিকে অবশ্যই প্রধান ভূমিকায় থাকতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, আমরা বলেছি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথের আন্দোলনের বিকল্প নেই। এজন্য দলের হাই-কমান্ড যখনই আন্দোলনের ডাক দিবেন তখনই আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য সংগঠনের তরুণরা যে কোন ত্যাগ স্বীকারেও প্রস্তুত রয়েছেন বলেও জানান বিএনপির এ নেতা।

সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে অনেক নেতা কৃষক দলের কমিটি নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা চিত্র তুলে ধরে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সংগঠনের কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে ছয় মাস আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। কমিটি গঠনে এরকম সিদ্ধান্তহীনতা ও সময়ক্ষেপণ দলের জন্য ক্ষতি হচ্ছে। একইভাবে যেসব অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙ্গে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে সেসব কমিটিকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে না পারলে বছরের পর বছর মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় থাকবে বলে মনে করছেন তারা।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত আরেক নেতা বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, বৈঠকে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতারা যেমন নিজেদের অনেক সীমাবদ্ধতার কথা বলেছেন তেমনি দলের হাইকমান্ডও তাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক করেছেন। আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের উপর নির্ভরতার কথাও তুলে ধরেছে দলটি।

সূত্রটি জানায়, বৈঠকে রাজপথের আন্দোলনের বিষয়ে নেতারা জোরালো বক্তব্য রাখেন। তাদের প্রত্যেকের বক্তব্যেই খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। এর বাইরে বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, দল পুনর্গঠন, রাজপথের আন্দোলন, জোটের রাজনীতি, নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলাসহ বিভিন্ন ইস্যুও আলোচনা করেন নেতারা।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এমজে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত