ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

জ্বরে ভুগছেন খালেদা জিয়া, বিদেশ নেয়ার দাবি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১২:৫৭  
আপডেট :
 ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৪২

জ্বরে ভুগছেন খালেদা জিয়া, বিদেশ নেয়ার দাবি
ফাইল ছবি

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাবার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে নতুন করে দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নানা-রকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। যার চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়।

তবে সরকার বলছে যে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়া সাময়িক মুক্তি পেয়েছেন, তাতে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবার ব্যবস্থা নেই।

গত ১২ অক্টোবর হালকা জ্বর নিয়ে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বারের মত চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে গত মঙ্গলবার তাকে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে বেগম জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এপ্রিল মাসে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, এবং সেসময় তাকে ৫৪ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।

খালেদা জিয়া স্বাস্থ্য পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের অন্যতম ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার কয়েকদিন ধরে হালকা জ্বর ছিল। সেই কারণে টেস্ট করার জন্য তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। আর কয়েকদিন ধরে উনার একটু লো-গ্রেড ফিভার ছিল। এর মধ্যে দুই-তিন দফা করোনা টেস্ট করা হয়েছে। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

এখন হাসপাতালে ভর্তি হবার পর থেকে উনার নানারকম শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে, রাতে কয়েকটি টেস্ট করা হয়েছে। সকালেও বেশ কয়েকটি টেস্ট করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পুরনো শারীরিক সমস্যাগুলোও আগের চাইতে প্রকট হয়েছে বলেও জানান জাহিদ হোসেন।

জাহিদ হোসেন জানান, হাসপাতালে ভর্তি হবার পর খালেদা জিয়ার যেসব টেস্ট করানো হয়েছে, তার কয়েকটির ফল নিয়ে উনার চিকিৎসকেরা এভারকেয়ার হাসপাতালের গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আর সব রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী করণীয় নিয়ে ব্রিফিং করা হবে।

এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তার পরিবার উদ্বিগ্ন। উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যেতে চান তারা। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন করে এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোন আবেদন সরকারের কাছে পাঠানো হয়নি।

এরআগে এপ্রিলের শেষ দিকে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপরে মে মাসে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাবার অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন করেছিল তার পরিবার। কিন্তু সরকার সেসময় অনুমতি দেয়নি। ওই সময় সরকারের পক্ষে যুক্তি দেয়া হয়েছিল, খালেদা জিয়াকে যে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেয়া হয়েছে, তার প্রধান শর্তই হচ্ছে তিনি নিজের বাসাতে থাকবেন এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

অন্যদিকে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়ার অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে তার দল বিএনপি।

এবিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া যখন জেলে ছিলেন তিন বছর উনার কোন ট্রিটমেন্ট হয়নি। এরপর মাঝখানে উনি আবার করোনায় আক্রান্ত হলেন, আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন এবং তখন তার নানা রকম সমস্যা তৈরি হয় ও পোস্ট কোভিড কিছু সমস্যাও ছিল। আমরা আগেও বলেছি তার জন্য যে মাল্টিডিসিপ্লিনারি ট্রিটমেন্টের দরকার, দেশে এক জায়গায় তেমন কোন সেন্টার নাই। তাই দেশের বাইরে অ্যাডভানস সেন্টারে তাকে নেয়া দরকার। সেজন্য আমরা দাবি জানিয়েছি যে, তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যেতে দেয়া হোক।

তবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি প্রশ্নে সরকার আগের অবস্থানেই রয়েছে। এবিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিধি অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে অনুমতি দেয়ার ব্যবস্থা নেই। যে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া সাময়িকভাবে মুক্ত রয়েছেন, আগে সেটি বাতিলের আবেদন জানিয়ে তাকে পুনরায় কারাগারে যেতে হবে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে। আর আবেদন পাবার পর সেটি বিবেচনা করা না করার প্রশ্ন আসবে।

দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড হলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে তাকে কারাগার থেকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়। এরপর আরো তিনবার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় সরকার।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত