ইসিকে সিপিবির চিঠি: ইভিএম নিয়ে মতবিনিময় প্রয়োজনীয় নয়

ইভিএমের কারিগরি ও ভোটদান বিষয়ে মতবিনিময়ের জন্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার তাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও নির্বাচন কমিশনে আসেনি দলটি। তবে না আসার কারণ উল্লেখ করে ইসিকে চিঠি দেয় সিপিবি। এতে ইসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ‘নতুন করে একই কথা বলার জন্য মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করা প্রয়োজনীয় নয়’উল্লেখ করেছে দলটি।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স স্বাক্ষরিত এই চিঠি দেয়া হয়।

দলীয় নির্দেশ না মেনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেন প্রতিমন্ত্রীর ভাই

চিঠিতে বলা হয়েছে, ইভিএম আমাদের দেশের সব মানুষের জন্য সহজসাধ্য নয় এবং সবাই এটির যথাযথ ব্যবহার করতে পারেন না। এই পদ্ধতি এখনো বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেনি। অধিকাংশ ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল ইভিএমে ভোটদান পদ্ধতির বিরোধিতা করেছে। তাই আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।

এতে আরও বলা হয়, ইভিএম একটি মাইক্রোকন্ট্রোল প্রোগ্রাম। ফলে নিম্নতর স্তরে নিয়ন্ত্রণ না করেও নির্বাচন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা কিংবা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অর্থাৎ উচ্চতর স্তরে কম সংখ্যক প্রযুক্তিবিদের সহায়তায় কারচুপি করা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইভিএম ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে এটি এখনো কোনো জালিয়াতি নিরোধক নয়।

যান্ত্রিক ত্রুটির যুক্তিতে ইভিএমের মতো আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে কারচুপির ঝুঁকিকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইভিএমকে পরিচালনা করছেন যারা, তাদের অবস্থান এবং উপরের নির্দেশকারীদের অবস্থানও এর ব্যবহার যথাযথভাবে হবে কি না, তার উপর নির্ভর করে।

চিঠিতে আরও কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বর্তমান রাজনৈতিক বিবেচনায় ইভিএম আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রধান বিবেচ্য বিষয় নয়। এটিকে সামনে এনে সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্য বিষয়কে গৌণ করে ফেলার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এর আগে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বিষয়ে আমাদের কথা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি।

এছাড়াও জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থাসহ নির্বাচনকে টাকা-পেশীশক্তি-সাম্প্রদায়িকতা ও প্রশাসনিক কারসাজিমুক্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

সিপিবির ৫৩ দফা প্রস্তাবকে বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না- তা প্রমাণিত। তাই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তদারকি সরকার গঠন, তার কার্যক্রম সুনির্দিষ্ট করা এবং নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়ার বিষয়ে ইসির পক্ষ থেকে স্পষ্ট মতামত দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সিপিবি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এআর/এমএস