ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

গ্রিডে বিপর্যয় বিদ্যুৎখাতে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সার্বিক ব্যর্থতা: ফখরুল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২২, ১৮:১৮

গ্রিডে বিপর্যয় বিদ্যুৎখাতে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সার্বিক ব্যর্থতা: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: প্রতিনিধি

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ে ঘটনা বিদ্যুৎখাতে ‘সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সার্বিক ব্যর্থতা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দুপুর থেকে ৬ ঘণ্টা ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ অধিকাংশ জেলায় বিদ্যুৎহীন অবস্থার বিষয়ে বুধবার দুপুরে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে, এটা (জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়) সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতা। যে কথাটা আমাদের টুকু সাহেব ( সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু) বললেন যে, এখানে যে পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এবং যে কাঠামোগত ব্যাপারটা থাকে অর্থাৎ টেকনিক্যাল সাইড যেটা থাকে সেখানে টোটালি চুরি হয়েছে বলেই আজকে এই বিপর্যয় ঘটেছে।

'এটা একটা ঘটনা নয়। এটা আপনার শুধু বিদ্যুতে নয়। সর্বক্ষেত্রে ঘটনাগুলো ঘটছে। যার ফলে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমি মনে করি, এর জন্য মূলত দায়ী সরকারের অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন প্রজেক্ট গ্রহণ করা, বিভিন্ন উন্নয়নের প্রকল্প করা যার লক্ষ্য হচ্ছে দুর্নীতি করা।'

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যে এতো চিৎকার-চেচামেজি করছে যে, আমরা বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছি, অতিরিক্ত উৎপাদনও হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায়। সেগুলো নিয়ে আমরা সেমিনারে বলেছি, কোথায় সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু গতকালের ব্যাপারটা ছিলো অস্বাভাবিক ব্যাপার। সারাদেশে প্রায় ৮ ঘণ্টা বেশির ভাগ জায়গাতে বিদ্যুৎ ছিলো না, ইট ইজ এ টোটাল ব্লাক আউটের মতো হয়ে গেছে।

‘এর থেকে যেটা বুঝা যায়, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের নাম করে বহু প্রজেক্ট করেছে, টাকা পয়সাও বহু বানিয়েছে। বানিয়ে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে, এই ধরনের একটা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এর ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক-ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে, সব কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, ফিল্টিং স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে.. জাতিকে এক অসহনীয় অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে।

সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, সারাদেশে যে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো দিয়েছে সেগুলো ইউনিভাইড স্পেসিফিকেশনে দেয় নাই। যার ফলে কোনো পাওয়ার স্টেশন খুব নিউ জেনারেশনের আবার কোনোটা পুরনো। এদের মধ্যে সিনক্রোনাইজড করা সম্ভব না।

'বিদ্যুৎ যে শুধু জেনারেশনে বিদ্যুৎ চলে না, ট্রান্সমিশনে লাগবে, ডিসট্রিবিউশনে লাগে-এগুলোর কিন্তু খুব একটা উন্নতি হয় নাই। খালি বিদ্যুৎ প্রকল্প বানিয়েই গেছে। বানিয়ে যাওয়ার ফলে আজকে যেটা হয়েছে, এটা আরো হবে ভবিষ্যতে। কারণ সিনক্রোনাইজ করে নাই।'

তিনি বলেন, রেন্টাল পাওয়ার যেগুলো আছে এগুলো পুরনো মেশিন। পুরোনা মেশিন আর নতুন যেগুলো আছে- সেগুলো এক না। কোনো না কোনো সময় দেখা যাবে একটা ক্লিপ করলে সবগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সিনক্রোনাইজড করতে পারবে না। কারণ নতুনটার সাথে পুরনোটার সিনক্রোনাইজড করা যায় না।

‘এই যে লুটপাট করার জন্য যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে পাওয়ার স্টেশন দিয়েছে, সেই পাওয়ার স্টেশনের স্পেসিফিকেশনগুলো কি, প্রসিডিউরগুলো কি, এটা একটার সাথে আরেকটা ম্যাচ করবে কিনা এসব বিবেচনা করে নাই। না করার ফলে আমরা দেখলাম যে, ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নাই। একটা দেশে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলে কতো ওয়ার্ক আউট নষ্ট হয়, কতো প্রডাকশন নষ্ট হয় এটা আপনারা সাংবাদিকরা বুঝতে পারছেন।

তার দল বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন কীভাবে করবে জানতে চাইলে টুকু বলেন, একবারে প্রাইভেটাইজেশন জেনারেন করা যাবে না। করলে সাধারণ মানুষের জন্য প্রাইজ করা কঠিন হয়ে যাবে। আমরা মিক্সড করবো। আমাদের পলিসি ছিলো ৩০% বেসরকারি এবং ৬০% সরকারে থাকবে- এভাবে আমরা বিদ্যুতের উন্নয়ন করবো। এই উন্নয়নের সাথে সাথে ট্রান্সমিশন ও ডিসট্রিবিউশটাও সমন্বয় করে করবো। যাতে সমস্যা না হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/রাজু

  • সর্বশেষ
  • পঠিত