ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

খালেদা-তারেকের ছবিতে জামায়াতের আপত্তি

খালেদা-তারেকের ছবিতে জামায়াতের আপত্তি

নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় এবার বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষে নির্বাচন করছে জামায়াত ইসলামী। স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী দলটিকে ২২টি আসন ছেড়েও দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু জামায়াত নেতারা তাদের পোস্টারে জোটের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার ছবি বা নাম ব্যবহার করছে না। এমনকি জিয়ার পরিবারের কারো চবি ব্যবহারে তাদের তীব্র অনীহা। বিএনপির জোটের শরিক এলডিপি, কল্যাণ পার্টি এবং অন্যরা তাদের পোস্টারে খালেদা জিয়ার ছবি এবং নাম ব্যবহার করছে। কেবল জামায়াতই এ বিষয়টি নিয়ে ‘আপত্তি’ করছে। এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

জামায়াতের প্রার্থীদের এমন উদ্যোগে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ কারণে বেশির ভাগ আসনেই শরিক দলের প্রার্থীদের পাশে নেই তারা। খুলনা-৬ আসনে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামাতে নানা অনুনয়-বিনয় করছেন জামায়াতের নেতারা। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, কর্মীরা যে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, তার সঙ্গে আমি একমত। আমারও ভাষ্য, যেহেতু তারা ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছেন, তাদের তো জিয়া পরিবারের ছবি ব্যবহার করা উচিত ছিল। এটা ঠিক হচ্ছে না।

তবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, পোস্টারে ছবি ব্যবহারের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। নির্বাচনে প্রতীকটাই আসল। আমরা সেটা ফোকাস করার চেষ্টা করেছি। এ বিষয়ে জোটের সঙ্গে বোঝাপাড়া আছে। তাই কোনো সমস্যা হবে না এ নিয়ে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসানুল বান্না বলেন, যারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি পোস্টারে ব্যবহার করছেন না, তারা চরম ভুল করছেন। যার মার্কা ছাড়া নিজেদের কোনো অস্তিত্ব নেই, তাকেই অবজ্ঞা করছেন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নাজমুল হোসেন বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতীক ব্যবহার করবেন কিন্তু তাদের কারও ছবি ব্যবহার করবেন না, এটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জামায়াতের প্রার্থীদের উচিত ছিল তাদের আসনগুলোতে লাখ লাখ নেতাকর্মীর আবেগকে মূল্যায়ন করা।’

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ (কাহারোল-বীরগঞ্জ) আসনে মোহাম্মদ হানিফ এবং দিনাজপুর-৬ (বিরামপুর-নবাবগঞ্জ-ঘোড়াঘাট ও হাকিমপুর) আসনে আনোয়ারুল ইসলামের পক্ষে জামায়াতের কর্মীরা ভোট চাইলেও মাঠে নামেননি বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

দিনাজপুর-৬ আসনের বিএনপির এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে জামায়াতকে কেন রাখা হয়েছে জানি না। জামায়াতের এই কাজটি খুব খারাপ হয়েছে। কিন্তু আমাদের তো করার কিছু নেই। ভোট চাইতে হবে তাদের জন্য।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী আ ন ম শামসুল ইসলামের সঙ্গেও বিএনপির যোগাযোগ নেই বলে জানিয়েছেন লোহাগাড়া বিএনপির সভাপতি শেখ মহিউদ্দিন।

সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে জামায়াতের রফিকুল ইসলামের পোস্টারে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি না দেখে খেপেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমির শাহজাহান আলী বলেন, ‘বিএনপির দু-একজন নেতার কথায় কোনো সমস্যা হবে না।’

সাতক্ষীরা-২ ও ৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী আব্দুল খালেক ও গাজী নজরুল ইসলামের পোস্টারে খালেদা জিয়ার নাম বা ছবি না দেখে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সভাপতি রাহমতুল্লাহ পলাশ বলেন, ‘জামায়াতের আদর্শ আর আমাদের আদর্শে ভিন্নতা থাকলেও যেহেতু জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করছি, তাই এ নিয়ে মনের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও জোটের স্বার্থে আমাদের মেনে নিতে হয়েছে।’

অবশ্য ছবি না থাকা নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা কখনো জামায়াতের প্রধানের ছবি ব্যবহার করতাম না। শুধু প্রতীক আর প্রার্থীর ছবি থাকত। আমার বিশ্বাস, এই চিন্তা থেকেই এবারও এমনটা করা হয়েছে। তবে এটা দলের কোনো ফোরামের সিদ্ধান্ত নয়।’

কুমিল্লা-১১ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের আসনেও একই চিত্র দেখা গেছে। এখানেও জামায়াতের প্রার্থীর ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে নেই জিয়া পরিবারের কোনো ছবি।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত