ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪২ মিনিট আগে
শিরোনাম

আওয়ামী লীগের চমক আসছে আজ!

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:১৪  
আপডেট :
 ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৬

আওয়ামী লীগের চমক আসছে আজ!

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ (মঙ্গলবার) আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। সকাল ১০টায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইশতেহার ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাসহ বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত থাকবেন। আওয়ামী লীগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে আরো জানা যায়, এবারের ইশতেহারের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’। এবারের ইশতেহারে সরকারের গত দুই মেয়াদের সাফল্য তুলে ধরে আগামীর পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে ২০২১, ২০৩০, ২০৪০, ২০৭১ এবং ২১০০ এরকম কয়েকটি ধাপে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় থাকবে তার পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।

এবারের ইশতেহারের অন্যতম দিক বদ্বীপ বা ডেল্টা পরিকল্পনা, ব্লু ইকোনোমি ও তরুণদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা। ডেল্টা প্ল্যানে আগামী ২১০০ সালে বাংলাদেশ কোথায় অবস্থান করবে সেই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এবারের ইশতেহার কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ইশতেহার তৈরি করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এই ইশতেহার হবে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের রোডম্যাপ।

ড. আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের এবারের ইশতেহারে আগামীর বাংলাদেশের কথা তুলে ধরা হবে। ২০৩০ কে মূল লক্ষ্য ধরলেও আগামী ১০০ বছরে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে তা স্পষ্ট করা হবে ঘোষণা পত্রে। বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় তরুণদের সম্পৃক্ত করাসহ ২০৩০ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষ পরিকল্পনা। এছাড়া, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনে বছর দু’টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বিশেষ পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে ইশতেহারে।

গুরুত্ব বিবেচনায় ৭ অধ্যায়ে বিভক্ত ইশতেহার

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে প্রাধান্য পাওয়া বিষয়গুলোকে মোট ৭টি অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। অঙ্গীকারে শুরু হয়ে পটভূমি, তৃতীয় ভাগে থাকছে আওয়ামী লীগ সরকারের গত দুই মেয়াদের সাফল্যের চিত্র।

এরপর দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক চিত্র জাতির সমানে তুলে ধরা হয়েছে ইশতেহারে। পঞ্চম অধ্যায়ে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের অবস্থান গত দশ বছরে কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা স্থান পেয়েছে। এরপর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা। এরপর উপরের ছয় অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে জাতির কাছে নৌকায় ভোট চেয়ে আহ্বানের মধ্যদিয়ে ইশতেহার ৬৪তম পৃষ্ঠায় শেষ হয়েছে।

৭ অধ্যায়ে ভাগ করা ইশতেহারপত্রে গুরুত্ব বিবেচনায় একাধিক উপ-ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

অঙ্গীকারনামা ঠিক করতে প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে স্বাধীন বাংলাদের স্বপ্নদ্রষ্টা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্ধৃতি: এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এ দেশের মানুষ, যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।

২১ বিশেষ অঙ্গীকার

স্বাধীন বাংলার রূপকারের এ উদ্ধৃতি ধরে প্রাধান্য পাওয়া বিশেষ অঙ্গীকারে থাকছে: আমার গ্রাম-আমার শহর: গ্রাম পরিকল্পনায়, প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণসহ তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি: তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা; দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ; নারীর ক্ষমতায়ন; লিঙ্গ সমতা ও শিশু কল্যাণ; পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা; সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূল; মেগা প্রজেক্টসমূহের দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়নের মতো বিষয়গুলো।

এছাড়াও থাকছে: গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা; সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি; দারিদ্র্য নির্মূল; সকল স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি; সকল স্তরে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা; সার্বিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার; আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা; দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন; ব্লু-ইকোনমি, তথা সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন; নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা; প্রবাসী কল্যাণ কর্মসূচি এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে বিস্তারিত পরিকল্পনা।

ইশতেহার কমিটির আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন: ইশতেহারে যা আছে তা ২০১৬ সালেই ঠিক করে রাখা। ওই বছর অক্টোবরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে আগত কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্তগুলো তখনই গ্রহণ করা হয়েছিল। এখানে ইশতেহার কমিটির বিশেষ কোন মত স্থান পায়নি। সারাদেশ থেকে আসা নেতারা তখন যে মত দিয়ে দিয়েছিলেন সে অনুযায়ী ইশতেহার সাজানো হয়েছে।

২০০৮ সালের ‘দিন বদলের সনদ’ ও ২০১৪ সালের ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ স্লোগানে ইশতেহার প্রকাশ করে জনসাধারণের ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলো আওয়ামী লীগ। গত দশ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এবারের স্লোগান ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরএ/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত