ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

এরশাদের গোপন বৈঠক

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৬:১৭

এরশাদের গোপন বৈঠক

আবার আলোচনায় জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। নির্বাচন এলেই দিশা থাকে না এরশাদের। কখনও দলটি ভাঙনের শিকার হয়, কখনও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বলে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আনপ্রেডিক্টেবল রাজনীতিবিদ এরশাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। তিনি দলটিতে সকাল-বিকাল নিজের দেওয়া সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন– এটাই সবচেয়ে বড় অভিযোগ। সেই আলোকেই এবারের নির্বাচনে মহাজোটের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পর্যায়ে হঠাৎ বেঁকে বসেছিলেন এরশাদ। মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়ে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হন। এখান থেকে বেরিয়ে ১০ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে উড়াল দেন।

সিঙ্গাপুরে গিয়েও থেমে নেই জাপার চেয়ারম্যান। খরব পাওয়া গেছে, এরশাদের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী এক টেলিভিশন মালিকের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। ঐ টিভি মালিক জাতীয়তাবাদী ঘরানার। প্রায় সোয়া ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভূমিকা, নির্বাচনে জাপার বিপর্যয় হলে করণীয় কি হবে তা নিয়ে আলোচনা হয় বলে বিশ্বস্ত সূত্রটি অবহিত করেছে।

বাংলাদেশী ঐ টিভি মালিকের সিঙ্গাপুরেও ব্যবসা রয়েছে। মাঝে-মধ্যেই তিনি সিঙ্গাপুরে যাতায়াত করেন। সূত্রটি জানায়, সিঙ্গাপুরের মোস্তফা সেন্টারের আশপাশ এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে এরশাদ আর ঐ ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত ছিল না বলে জানা গেছে।

জাপা চেয়ারম্যান বর্তমানে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে উন্নততর চিকিৎসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছেন তার একান্ত সচিব এবং জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার এবং ভাগ্নী জামাই ও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু সর্ম্পকে জাপার ঐ দুই প্রেসিডিয়াম সদস্য অবগত নন বলে জানা গেছে।

এদিকে ২০ ডিসেম্বরের পর এরশাদ দেশ ফিরবেন বলে জানা গেছে। তবে দেশে ফিরে আসার ব্যাপারে মহাজটের সাথে এরশাদের সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিদেশের একটি সূত্র বলছে, মহাজোটে থাকার শর্ত হিসেবে এরশাদ তার বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা মঞ্জুর হত্যা মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তি চান। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ ব্যাপারে তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। নির্বাচনের পরপরই তার বিরুদ্ধে থাকা যাবতীয় মামলা গুলোর সুরাহা করা হবে। এর বিনিময়ে এরশাদ মহাজোটের পক্ষে নির্বাচনী প্রচরণায় অংশ নেবেন।

এছাড়াও, এরশাদ উন্মুক্ত আসনে দাঁড়ানো তার ১৩২ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০০ জনকেই প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানা গেছে। অবশ্য এর বিনিময় তিনি নতুন সরকারের মন্ত্রীসভায় তার পছন্দের ৪ জন মন্ত্রী নিয়োগের দাবি করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এরশাদের সব দাবিই নির্বাচনের পর বিবেচনার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, রোববার সকালে মেরিনা বে হোটেলে এরশাদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর এরশাদ হাস্যোজ্জল ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাকে ফোন করেন। এরশাদ জাতীয় পার্টির নির্বাচনী প্রচারণা জোরদার করার নির্দেশ দেন।

এরশাদ সিঙ্গাপুরে গেলে তার পিছনে যায় বাংলাদেশের কয়েকজন সরকারি প্রতিনিধি। দীর্ঘ দরকষাকষির পর শেষ পর্যন্ত এরশাদ বশীভূত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত