ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

শপথ নিয়েই বোনকে জড়িয়ে ধরলেন শেখ হাসিনা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:৩৩

শপথ নিয়েই বোনকে জড়িয়ে ধরলেন শেখ হাসিনা

চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর ছোট বোন শেখ রেহানার কাছ থেকে প্রথম ফুলের তোড়া উপহার পান শেখ হাসিনা। এ সময় একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরেন এবং চুমু খান।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বঙ্গভবনে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

এ শপথের মধ্যে দিয়ে তিনি টানা তৃতীয়বার এবং চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা।

এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে বঙ্গভবনে পৌঁছান। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সেখানে পৌঁছান সাড়ে ৩টার দিকে। বিকেল ৩টা ৩৪ মিনিটে বঙ্গভবনের দরবার হলে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম কোরআন তিলাওয়াত করেন।

শেখ হাসিনাকে শপথবাক্য পাঠ করানোর পর প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নেন এবং শপথবাক্য পত্রে স্বাক্ষর করেন। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়েই পুনরায় অনুষ্ঠান শেষে হয়। পরে সবাইকে অপ্যায়ন করা হয়।

নতুন মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের শপথ পাঠের মধ্য দিয়ে বিলোপ হয়ে গেল পুরোনো মন্ত্রিসভা। শুরু হলো আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন একাদশ জাতীয় সংসদের নতুন মন্ত্রিপরিষদের কাজ।

দুপুরের পর থেকেই মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ডাক পেয়েছেন এমন সংসদ সদস্য ও ব্যক্তিরা বঙ্গভবনে আসতে শুরু করেন। তিন স্তরের নিরাপত্তা পেরিয়ে তাঁদের দরবার হলে প্রবেশ করতে হয়। সেখানে প্রায় এক হাজার অতিথি বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নিখুঁতভাবে শপথপর্ব সম্পন্ন করার জন্য শেষ মুহূর্তের তদারকির কাজ করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।

এদিকে গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট। এর পর গত ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ, তার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকরা এবং জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা জাতীয় সংসদ ভবনে শপথ নেন। ওই দিনই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি তাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানান।

এরপর রোববার প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে আগে মন্ত্রী ছিলেন বা জ্যেষ্ঠ নেতা এমন ৩৬ জন বাদ পড়েছেন। বাদ পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরাও। মন্ত্রিসভায় নতুন এসেছেন ৩১ জন। এর মধ্যে ২৭ জন একেবারেই নতুন।

অন্যান্যবারের মতো এবারও মন্ত্রিপরিষদে শরিকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে, এটা বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানাভাবে আলোচনায় ছিল। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য ডাক পাওয়ার তালিকায় শরিকদের কারো নাম না থাকায় অনেকেই অবাক হন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় নানা আলোচনা আর বিশ্লেষণ।

আজ দুপুর ২টার দিকে বঙ্গভবনে প্রবেশ করতে দেখা গেছে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসেবে ডাক পাওয়া এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ডা. দীপু মনি, টিপু মুনশি প্রমুখ। আসছেন আজকের অনুষ্ঠানের অতিথিরাও। বঙ্গবভনের ভেতর ও বাইরে থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুষ্ঠানটি কাভার করতে দেখা গেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রদত্ত তালিকা অনুযায়ী ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন।

মন্ত্রীরা ও তাঁদের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় হচ্ছে—মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ওবায়দুল কাদের, কৃষি মন্ত্রণালয় মো. আবদুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসাদুজ্জামান খাঁন, তথ্য মন্ত্রণালয় ড. হাছান মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় আনিসুল হক, অর্থ মন্ত্রণালয় আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এম এ মান্নান, শিল্প মন্ত্রণালয় নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় জাহিদ মালেক, খাদ্য মন্ত্রণালয় সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নুরুজ্জামান আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, ভূমি মন্ত্রণালয় সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রলণালয় মো. নূরুল ইসলাম সুজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় মোস্তাফা জব্বার।

১৯ জন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন—শিল্প মন্ত্রণালয় কামাল আহমেদ মজুমদার, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইমরান আহমদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জাহিদ আহসান রাসেল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় নসরুল হামিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মো. আশরাফ আলী খান খসরু, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মন্নুজান সুফিয়ান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মো. জাকির হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মো. শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ জুনাইদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ফরহাদ হোসেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্বপন ভট্টাচার্য, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জাহিদ ফারুক, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় মো. মুরাদ হাসান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় কে এম খালিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ডা. মো. এনামুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় মো. মাহবুব আলী এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।

তিনজন উপমন্ত্রী হচ্ছেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় হাবিবুন নাহার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ কে এম এনামুল হক শামীম এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত