ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

সমাবেশে যে বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৩৬  
আপডেট :
 ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৩৮

সমাবেশে যে বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের মধ্যদিয়ে টানা তৃতীয় বারের মত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই হ্যাট্রিক জয়কে স্মরণীয় রাখতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার বিজয় সমাবেশ করছে দলটি। এরই মধ্যে দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে প্রস্তুত রয়েছে বিশাল মঞ্চ। আর সমাবেশ থেকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা আগামীর জন্য কি বার্তা দেবেন সেজন্য অপেক্ষায় রয়েছে দলীয় নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজের গানে গানে বিজয় সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত হবেন টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নির্বাচনে সাড়া জাগানো ‘জিতবে এবার নৌকা’ গানের শিল্পীদের পরিবেশনা শুনবেন। সঙ্গীত শিল্পীদের পরিবেশনা শেষে নেতাদের বক্তব্য শেষে জনগণসহ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিজয় বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া জাতীয় নেতৃবৃন্দও সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। সমাবেশ শুরু হবে দুপুর আড়াইটায়। তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে দুপুর বারোটায়। সকাল এগারোটায় সমাবেশস্থলে প্রবেশের গেইট খুলে দেয়া হবে।

এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছোট-বড় ৫০-এর অধিক নৌকা ও বৈঠাসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ফেস্টুনে সুসজ্জিত করা হয়েছে। বিজয় সমাবেশটি মহাসমুদ্রে রূপ দিতে রাজধানীসহ পাশ্ববর্তী জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনসহ ঢাকা মহানগরের দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

শুক্রবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে বিজয় সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা। ওবায়দুল কাদের সার্বিক কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে শেষে সাংবাদিকদের সামনে বিজয় সমাবেশে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন বলে জানান। এছাড়াও সমাবেশ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশেও বিশেষ বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা।

এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে নেতাকর্মীদের দূরে থাকতে আহবান জানাবেন দলের সভাপতি। বিশেষ করে মাদক নির্মূলে যে যুদ্ধ তাতে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা আসবে এ সমাবেশ থেকে। এছাড়া সমাবেশে ২০২১, ২০৪১ ও ২১০০ সহ ডেল্টাপ্লান সম্পর্কেও আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ১৯ জানুয়ারি নির্বাচনে গণজোয়ারের মত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়ে স্মরণকালের বিশাল সমাবেশে রুপ নিবে। এটা আওয়ামী লীগের ও শেখ হাসিনার সততার ফসল। সারা দেশ থেকে মানুষের ঢল নামবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক জানান,‘ সমাবেশে নেত্রী শুধু জনগণকে পথেই দেখাবেন না, সারা দেশের সকল নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা দেবেন। দেখাবেন আগামীর বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান।’

বিজয় সমাবেশকে বিজয় আনন্দে রূপ দিতে বরণ্যে শিল্পীরা বিভিন্ন গান পরিবেশন করবেন। এ লক্ষ্যে মূল বিজয় মঞ্চের সামনে পৃথকভাবে আরেকটি মঞ্চ করা হয়েছে। মূল মঞ্চের ব্যাকগ্রাউন্ডে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনি ইশতেহারের মলাটের রঙ’র আদলে সজ্জ্বিত করা হয়েছে। বিজয় সমাবেশ গান পরিবেশন করবেন শিল্পী মমতাজ বেগম, আঁখী আলমগীর, রফিকুল আলম, ফাহমিদা নবী, কল্পনা মজুমদার, জলের গান এবং ‘জিতবে এবার নৌকা’ গানের শিল্পীরা। এরপর দলের নেতারা বক্তব্য রাখবেন।মূল অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

‘শেখ হাসিনার সালাম নিন/ নৌকা মার্কায় ভোট দিন/ জয় বাংলা/ জিতবে এবার নৌকা’- গানটি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের প্রচারণার জন্য তৈরি করেন একদল শিল্পী। গানটি ইউটিউবে প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক সাড়া ফেলে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে গানটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। জয় বাংলা-জিতবে এবার নৌকা’ শীর্ষক গানটির কথা লিখেছেন তৌহিদ হোসেন। গানটিতে যৌথভাবে কণ্ঠে দিয়েছেন সরোয়ার ও জিএম আশরাফ এবং সংগীতায়োজন করেছেন ডিজে তনু ও এলএমজি বিটস। সম্পাদনা ও কালার সমন্বয়ে ছিলেন মোহাম্মাদ হৃদয়। গানটির ভিডিওচিত্র প্রযোজনাতেও ছিলেন তৌহিদ হোসেন।

এদিকে বিজয় মহাসমাবেশকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তাবলয় ও সতর্ক অবস্থানে থাকবে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে যান চলাচলের রুট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘বিজয় উৎসব’ চলার সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের কয়েকটি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এদিন শাহবাগ থেকে মৎস্যভবন পর্যন্ত সড়কে লোকজনের চলাচল বন্ধ থাকবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চার পাশের সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ওই দিন ভোর থেকে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলামটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, শাহবাগ, কাঁটাবন, নীলক্ষেত, পলাশী, বকশীবাজার, চাঁনখারপুল, গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল চার্চ, অফিসার্স ক্লাব, মিন্টো রোড ক্রসিং থেকে গাড়ি বিকল্প পথে (ডাইভারশন) পাঠানোর প্রয়োজন পড়তে পারে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। অনুষ্ঠানে আগতদের কোনো ধরনের হাতব্যাগ, ট্রলি ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ বা ধারালো কোনো বস্তু কাছে না রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। তাদেরকে কয়েকটি রুট মেনে অনুষ্ঠানে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গাবতলী, মিরপুর সড়ক হয়ে আসা লোকজনকে সায়েন্স ল্যাব-নিউ মার্কেট হয়ে নীলক্ষেতে নেমে পায়ে হেঁটে টিএসসি হয়ে বিভিন্ন ফটক দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের কথা বলা হয়েছে। ওই দিক থেকে আসা যানবাহন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বর এবং নীলক্ষেত থেকে পলাশী পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে এক লাইনে রাখতে হবে।

উত্তরা থেকে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে মহাখালী- মগবাজার-কাকরাইল চার্চ-নাইটিঙ্গেল-পল্টন মোড় হয়ে জিরো পয়েন্টে আসা এবং খিলক্ষেত ফ্লাইওভার-বাড্ডা-গুলশান-রামপুরা রোড-মৌচাক ফ্লাইওভার-মালিবাগ-শান্তিনগর-পল্টন মোড় বা জিরো পয়েন্ট হয়ে আসা লোকজনকে পল্টন মোড় কিংবা জিরো পয়েন্টে নেমে যেতে হবে। পরে পায়ে হেঁটে দোয়েল চত্বর হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে বলা হয়েছে তাদের। এদিক থেকে আসা যানবাহন মতিঝিল এলাকায় রাখতে হবে। তবে মতিঝিলে স্থান সংকুলান না হলে প্রয়োজনে হাতিরঝিল এলাকায় পার্কিং করা যাবে।

দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে যাত্রাবাড়ি কিংবা দক্ষিণাঞ্চল থেকে পোস্তগোলা হয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নীচের সড়ক ধরে আসা নেতাকর্মিীদের গুলিস্তানে নেমে পায়ে হেঁটে জিরো পয়েন্ট, দোয়েল চত্বর হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে বলেছে ডিএমপি।

এদিক দিয়ে আসা যানবাহন মতিঝিল ও গুলিস্তান এলাকায় রাখতে হবে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে চানখাঁরপুল হয়ে উৎসবে আগতদের চাঁনখারপুলে নেমে যেতে হবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানে যাবেন তারা। তাদের যানবাহন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে রাখতে হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।

বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে অনুষ্ঠানে আসা লোকজনকে গুলিস্তানের গোলাপ শাহ্ মাজারে নেমে পায়ে হেঁটে হাই কোর্ট-দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাদের যানবাহন রাখতে হবে গুলিস্তান এলাকায়।

সমাবেশে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নেতা-কর্মীদের মিছিলে বহন করে আনা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। উদ্যানের ৬টি গেইটের মধ্যে শিখা চিরন্তন গেইট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতীয় নেতৃবৃন্দ, ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনের গেইট দিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রবেশ করবেন। এছাড়া তিন নেতার মাজার সংলগ্ন গেইট, বাংলা একাডেমীর সামনের গেইট, টিএসটি গেইট ও চারুকলার সামনের গেইট দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রবেশ করবেন।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত