ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

অপেক্ষা করেও স্ত্রীর দেখা পেলেন না এরশাদ

অপেক্ষা করেও স্ত্রীর দেখা পেলেন না এরশাদ

চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রবিবার দুপুর ১২.৪০ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, জাপা চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ, ছোট ভাই হুসেইন মোর্শেদ ও তার স্ত্রী রুকসানা খান মোর্শেদ সিঙ্গাপুর গেছেন।

সিঙ্গাপুর যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাপার কেন্দ্রীয় নেতারা এরশাদকে বিদায় জানান। এ সময় তার পাশে ছিলেন জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা। বিদায় বেলায় এরশাদকে এদিক-সেদিক তাকাতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষায় করেন তিনি। একাধিক নেতা জানান, এরশাদ মূলত তার স্ত্রী রওশনকে খুজছিলেন। তবে বিদায় জানাতে আসেননি রওশন।

যাকে নিয়ে দীর্ঘ সময় সংসার করেছেন। এমনকি রাজনীতিতে এনে এমপি, মন্ত্রী সবশেষ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতাও বানিয়েছেন। সেই স্ত্রী রওশন এরশাদ দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ এরশাদের পাশে থাকা দূরের কথা ৬২ বছরের দাম্পত্য জীবনের সঙ্গীকে গুলশানের বাসা থেকে কয়েক মিনিটের পথ বারীধারায় গিয়ে স্বামী এরশাদকে দেখার প্রয়োজন বোধ করেননি।

প্রসঙ্গত, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বেগম রওশন এরশাদ দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে আলাদা ভাবে বসবাস করছেন। রওশন এরশাদ গুলশানে আর এরশাদ থাকেন এরশাদের বারিধারার বাসা প্রেসিডেন্ট পার্কে। বিদিশা ইসলামের সঙ্গে বিয়ের পর এরশাদ গুলশানের বাসা চেড়ে প্রেসিডেন্ট পার্কে চলে যান। যদিও শেষতক বিদিশাকে ছেড়ে দিলেও এরশাদ ও রওশন এক ছাদের নীচে আসেননি। তবে রাজনীতিটা এখনো এক দলেই করছেন।

এরশাদের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরশাদ ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছেন। তিনি খেতে পারছেন না, হাটা চলাও করতে পারছেন না। এমনকি বাকশক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন। কিছুই মনে করতে পারছেন না।

এ কারণেই আগামী রোববার রশাদকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, গত নভেম্বর থেকেই আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন এরশাদ। এটা ছিল বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা। এইসময়ে তিনি সিঙ্গাপুর যান চিকিৎসার জন্য। এরপর এরশাদ ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে তার শরীর আরো দুর্বল হতে থাকে। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে যান হুইল চেয়ারে করে।

এরপর এরশাদকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নেয়া হয়। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকরাও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের মতোই খুব বেশি কিছু করার নেই বলেই মন্তব্য করেন। চিকিৎসার পরিভাষায় এটাকে বলা হয় বার্ধক্যজনিত রোগ। গত কয়েকদিন ধরেই এরশাদের ক্ষুধা মন্দা বেড়েই চলছে।

উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এরশাদ জন্মগ্রহণ করেন। এ বছর তিনি নব্বইয়ে পা দেবেন। নয় বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখা এই সামরিক একনায়ককে ‘স্বৈরাচারী শাসক’ হিসেবে অভিহিত করা হতো। ৯০ এর গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এরশাদ কিছুদিন কারাবরণ করলেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এখন পর্যন্ত একজন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত