ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

ডোন্ট টেল লাই, ছাত্রদল নেতাকে বললেন মির্জা ফখরুল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০১৯, ২২:০৩

ডোন্ট টেল লাই, ছাত্রদল নেতাকে বললেন মির্জা ফখরুল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কর্মসূচি রাখেনি- ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদল নেতা এইচ এম রাশেদের এমন প্রশ্নে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উষ্মা প্রকাশ করেছেন। জবাবে তিনি ওই ছাত্রদল নেতাকে বলেছেন, ‘ডোন্ট টেল লাই’।

রোববার বিকেলে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ওবায়দুর রহমান স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে এক স্মরণসভায় এ ঘটনা ঘটে।

বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখার একপর্যায়ে দর্শক সারি থেকে বিচ্ছিন্নভাবে প্রশ্ন করা হয়।

মির্জা ফখরুল তার বক্তব্য থামিয়ে তাদের মঞ্চে এসে প্রশ্ন করতে বলেন। এ সময় দর্শক সারি থেকে ঢাকা কলেজের সহসভাপতি এইচ এম রাশেদ মঞ্চের কাছে এসে জানতে চান, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সর্বশেষ যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তাতে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়া হয়নি কেন’?

এ সময় মির্জা ফখরুল পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘কে বলেছে আপনাকে এই কথা? অবশ্যই মুক্তি চাওয়া হয়েছে। ডোন্ট টেল লাই।’

এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। মির্জা ফখরুল বলেন, কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশেই বিএনপি নির্বাচনে গেছে এবং নির্বাচনের পরও তার নির্দেশেই ঐক্য ধরে রাখতে কাজ করছে দলটি। নির্বাচনকে বিএনপি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছে। চেয়ারপারসনের নির্দেশে নির্বাচনে গেছে বিএনপি।

উপস্থিত নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, দলের নির্বাহী কমিটির সভায় চেয়ারপারসন পরিষ্কার বলে গিয়েছিলেন যে, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে ঐক্য গড়ে তুলতে এবং এই ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে ঐক্য নিয়ে লড়াই করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম লড়াই করতে হলে জনগণের ঐক্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। জনগণের ঐক্য এবং সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া এই ফ্যাসিবাদ স্বৈরাচারকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরাজিত করার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, আন্দোলন সংগ্রামে জয়ী হতে সমগ্র মানুষকে এক করতে হবে। নির্বাচনের যাওয়ার আগে কারাগারে চেয়ারপারসনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। চেয়ারপারসন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, নির্বাচনে যেতে হবে এবং জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। এমনকি নির্বাচনের পরে তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন যে, এই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আবেগ দিয়ে যুদ্ধ জয় করা যায় না। এখানে অনেকে অনেক কথা বলছেন। আমরা দেখেছি নেত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পরে যখন আমরা কর্মসূচি দিয়েছি দেখেছি কতজন এসেছেন কতজন আসেননি। আমরা তো দেখেছি কারা কারা কর্মসূচি থেকে আস্তে আস্তে চলে গেছেন। আমরা তো দেখেছি এই নির্বাচনের মধ্যে কারা বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ করেছেন। সুতরাং শুধু কথা বলে একটি আবদ্ধ ঘরের মধ্যে নিরাপদ জায়গায় এসব বলে শত্রুকে পরাজিত করতে পারব না।

তিনি বলেন, আজ সুপরিকল্পিতভাবে জনগণের ঐক্যকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মধ্য দিয়ে জনগণ যেভাবে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে বর্জন করেছে, সেই ঐক্যকে ভাঙতে চেষ্টা হচ্ছে।

‘বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে’- দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি কোনো দিন নিঃশেষ হবে না। বিএনপির রাজনীতি জনগণের রাজনীতি। এর আগে অনেকে বিএনপিকে ভাঙতে চেয়েছিল। এরশাদ সরকার ভাঙতে চেষ্টা করেছে। এর পরে আওয়ামী লীগও ভাঙতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম রব বলেন, ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র নিহত হয়েছে আর আহত হয়েছে ১৬ কোটি জনগণ। এর ধারাবাহিকতায় ডাকসু, উপজেলা আর ঢাকা সিটি উত্তর নির্বাচনে ভোট আছে ভোটার নেই। দেশের মানুষ ভোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এটাই আওয়ামী লীগের বড় অর্জন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি টিএস গিয়াসউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতাদের মধ্যে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, শামা ওবায়েদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।

এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত