ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

অকার্যকর বিএনপির স্থায়ী কমিটি!

  কিরণ সেখ

প্রকাশ : ২১ মে ২০১৯, ০৮:২৪  
আপডেট :
 ২১ মে ২০১৯, ০৮:২৬

অকার্যকর বিএনপির স্থায়ী কমিটি!

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে! মূলত দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো তাদেরকে না জানিয়েই নেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এজন্য দলটির স্থায়ী কমিটির অনেক সদস্য মনক্ষুন্ন হচ্ছেন। তবে এবিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিপক্ষে সরাসরি কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রটি জানায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কার্যক্রম শুধুমাত্র আলোচনা সভা, সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। এর বাইরে দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের কোন ভূমিকা নাই। এমনকি স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকও নিয়মিত হচ্ছে না। যদিও গত ২৭ এপ্রিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেছেন। কিন্তু সেটাও আনুষ্ঠানিক কোন বৈঠক ছিল না। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় যে, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা প্রতিদিনই বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বসেন। কিন্তু সেগুলোও আনুষ্ঠানিক কোন বৈঠক নয়।

তবে এবিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের নেত্রীর (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) ইশারায় এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশে আমরা স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দল পরিচালনা করছি।

গত ২৭ এপ্রিল বৈঠকে শেষে গণমাধ্যমকে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় জাহিদুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপর গত ২৯ এপ্রিল দলের আরো চার জন্য এমপি শপথ নিলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, দলীয় সিদ্ধান্তেই শপথ নিয়েছেন তারা। তবে বিএনপির এমপিরা শপথ নেবেন না বলে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলটি। পরে দলটির আরো চার জন এমপি শপথ নেন। আর তাদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা কিছুই জানতেন না। এমনকি এবিষয়ে তাদের সঙ্গে কোন আলোচনাও করা হয়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, দলের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাই এই কথা উনি জানেন। আমি কিছু বলতে পারবো না।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপির নতুন কমিটি গঠিত হয়। ওই সময় থেকেই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির দুটি পদ ফাঁকা ছিল। পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য এম কে আনোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ও তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে এখন দলের স্থায়ী কমিটির পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। এসব পদেও কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ রয়েছেন ভারতে। ২০১৫ সালের মার্চের শুরুতে ঢাকার উত্তরা থেকে ‘অপহৃত হন’ সালাউদ্দিন। এর প্রায় আড়াই মাস পর ১১ মে ভোরে শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকায় থেকে তাকে পুলিশ আটক করে। এরপর থেকে তিনি ভারতেই রয়েছেন। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক প্রভাবশালী সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অসুস্থ। একারণে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকসহ দলটির কর্মসূচিতে তিনি অংশগ্রহণ করতে পারেন না।

অপরদিকে ২০১৯ সালে ১৬ মার্চ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহঅর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহাব উদ্দিন দলের সকল পর্যায়ের পদ থেকে পদত্যাগ করার কথা জানিয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে কি না- সেবিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যুব বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোও কাউন্সিলের সময় ফাঁকা রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে এসব পদে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। গত তিন বছরে বিএনপির বর্তমান কমিটি নিয়ে বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এরপর ওই দিনই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত