ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

সোহেল তাজের ভাগনে গুম, আতঙ্কিত রিজভী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০১৯, ১৪:০৫

সোহেল তাজের ভাগনে গুম, আতঙ্কিত রিজভী

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের ভাগনে গুম হয়ে যাওয়ার ঘটনায় গোটা জাতিকে আতঙ্কিত ও শিহরিত হয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান সরকারেরই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর ভাগনে ও মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাতির গুম হয়ে যাওয়ার ঘটনা গোটা জাতিকে আতঙ্কিত ও শিহরিত করে তুলেছে। এমনিতেই দেশব্যাপী গুম হওয়া পরিবারের হাহাকারে বাতাস ক্রমশ ভারী হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীনদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকেই যদি গুমের ন্যায় করুণ পরিণতির শিকার হতে হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপদে বেঁচে থাকার আর কোন অবলম্বনই থাকবে না। কত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও রাস্তায় নামতে হয়। দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসনকে আওয়ামী বাক্সে বন্দী করে রাখার জন্যই গুমকে জাতীয় জীবনের অংশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের পাইকারী হারে গুম করার পর এখন ক্ষমতাসীনদের ভেতরেই যারা কিছুটা বৈরী পরিস্থিতির মুখোমুখি আছেন তাদের পরিজনরাও এখন গুমের শিকার হচ্ছেন। শেখ হাসিনার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গুমের চেতনায় আত্মপ্রকাশ ঘটেছে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালত জামিন দিলে সেক্ষেত্রে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু কিছুদিন আগে লন্ডন সফরকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্য আর ওবায়দুল কাদেরের এই কথায় বুঝা যায়, জামিনযোগ্য হলেও সরকারের কারণেই খালেদা জিয়ার জামিন হচ্ছে না। অর্থাৎ সরকার যদি খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে কোনো হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে খালেদা জিয়ার জামিন হবে এবং তিনি মুক্তি পাবেন। কালবিলম্ব না করে সামনে আর দুইটি বানোয়াট মামলায় বেগম জিয়ার জামিন নিশ্চিত হলে উচ্চতর আদালতের ওপর মানুষের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, গতকাল অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম ও শেষ ধাপের ভোট গ্রহণে আওয়ামী সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ন্যাক্কারজনক ভূমিকা পালন করেছে। ২০টি উপজেলার প্রায় সবখানে পুলিশের ভূমিকা ছিল দলীয় ক্যাডারের মতো। নৌকা প্রার্থী ছাড়া অন্যরা যারা প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন তাদের ঠেকানোর জন্য মাঠে সক্রিয় ছিল পুলিশ ও আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। রাতে ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। নৌকার প্রতীকে ভোট না দিলে দেখে নেয়া হবে বলে হুমকীও দেয়া হয়। এই আওয়ামী জবরদস্তিমূলক শাসন দীর্ঘায়িত হতে থাকলে নির্বাচন শব্দটি থাকলেও সুষ্ঠু শব্দটি পরলোকেই অবস্থান করবে। ভোটার থাকলেও ভোট দেয়ার অধিকার থাকবে শুধু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। নির্বাচন কমিশন ভোট তামাশার রঙ্গমঞ্চে প্রধান অভিনেতা হিসেবেই ভূমিকা পালন করবে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, দেশ আজ মগ দস্যু ও ঠগীদের অভয়ারণ্য। মানুষের জীবন-যাপন ও বেঁচে থাকা নির্ভর করছে ঠগীদের ওপর। যেকোন মূহুর্তে যেকোন মানুষ অথবা যেকোন পরিবারের যেকোন সদস্য গুম হয়ে যেতে পারে ক্ষমতাসংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির সাথে যদি তার ন্যুনতম মনোমালিন্য হয়। দেশে এখন কন্ট্রাক্ট গুম চলছে। প্রভাবশালীরা তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে যারা গুমের দায়িত্বে আছে তাদের সাথে কন্ট্রাক্ট করে প্রতিপক্ষকে অদৃশ্য করাচ্ছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত