ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সরকার গঠন হবে: জি এম কাদের

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০১৯, ১৬:৪০  
আপডেট :
 ২৬ জুন ২০১৯, ১৮:৪২

‘ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সরকার গঠন হবে’

আগামীতে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গঠন করবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। বুধবার সকালে রাজধানীর এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

কাদের আশা প্রকাশ করে বলেন, একটি সম্ভাবনাময় দল হিসেবে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট আগামী দিনে সরকার গঠন করতে পারবে। কারণ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন না করলে বাংলাদেশে ভালো ফলাফল করা যাচ্ছে না। প্রতিটি দলই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করছে। কিন্তু বড় দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হলে ছোট দলগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়ে।

তাই জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে পারলে, আমরা আমাদের স্বকীয়তা নিয়ে রাজনীতিতে একটি জোটের নেতৃত্ব দিতে পারবো। রাষ্ট্র ক্ষমতার গ্রহণে জাতীয় পার্টি নিয়ামক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হবে। আমরা সাধারণ মানুষের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবো।

সভাপতির বক্তৃতায় কাদের আরো বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছরে জাতীয় পার্টি ক্ষমতার বাইরে থেকে ঘাত-প্রতিঘাত ও চাড়াই-উৎরাই পেরিয়ে, সব প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

পার্টি পরিচালনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পার্টি চলবে গঠনতন্ত্রের নির্দেশনায়। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামত, পরামর্শ এবং শক্তিতে জাতীয় পার্টি পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, আমি পারিবারিক পরিচয়ে নেতৃত্ব দিতে চাই না। পার্টির সাধারণ কর্মীদের সমর্থন ও আস্থা নিয়ে জাতীয় পার্টিকে এগিয়ে নিতে চাই। সবাইকে নিয়েই রাজনীতি করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, জমিদারী বা কর্তৃত্ব করতে রাজনীতি করি না। তৃণমূলে যারা জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করবে, তারাই সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে রাজনীতি করবে আমাদের সঙ্গে।

এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেন, বিএনপিতে ৪ ভাগ কিন্তু জাতীয় পার্টি একভাগ। জাতীয় পার্টিতে কোনো কোন্দল বা দ্বন্দ্ব নেই। কোনো বিভেদ নেই। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে আমরা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করে। এরপর প্রতিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের পাশে থেকে নির্বাচন করেছে।

তিনি বলেন, পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। জাতীয় পার্টি শক্তিশালী ছিলো বলেই আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। জাতীয় পার্টি কখনোই লোভের কাছে মাথা নত করেনি।

তিনি বলেন, রংপুর-রাজশাহী বিভাগে জাতীয় পার্টির ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। এখন শুধু জাতীয় পার্টির সমর্থকদের সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ করতে হবে। অনেকেই দল ছেড়ে চলে গেছে, অনেকে নিস্ক্রিয় অবস্থায় আছে। সবাইকে নিয়ে শক্তিশালী জাতীয় পার্টি গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা করেছেন, মসজিদ-মন্দিরের পানি, বিদ্যুত বিল মওকুফ করেছেন। দেশের ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা ও ফ্লাইওভার নির্মাণে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোঁয়া আছে। তাই আগামী দিনে সাধারণ মানুষ জাতীয় পার্টিকেই সমর্থন দেবে। রাঙ্গা বলেন, জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের সমর্থনপুষ্ট নেতাদেরই আগামী ২০২৩ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন দেয়া হবে। নেতাকর্মীরা চাইলে ৮টি বিভাগীয় কমিটি করা হবে, ওই কমিটির মাধ্যমেই বিভাগীয় রাজনীতি পারিচালনা করা হবে।

সকাল থেকেই রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মী মতিঝিল এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে অবস্থান নেন। তারা স্লোগানে স্লোগানে আশপাশের এলাকা মুখরিত করে তোলেন। দীর্ঘ দিন পরে পার্টির শীর্ষ নেতাদের সামনে মনের কথা তুলে ধরতে পারবেন এমন প্রত্যাশায় সবার মাঝে একটা উৎসবমুখর অবস্থা বিরাজ করে।

সভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াতের পরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ ক্বারী রুহুল্লাহ আসিফ। জাতীয় ও দলীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল সাংগঠনিক সভায় নেতা-কর্মীরা প্রাণ খুলে মতামত দেন। সভায় প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত