ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

২০ দলীয় জোটের প্রয়োজন দেখছে না বিএনপি

  কিরণ সেখ

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০১৯, ২০:০৯  
আপডেট :
 ২৪ জুলাই ২০১৯, ২০:১৮

২০ দলীয় জোটের প্রয়োজন দেখছে না বিএনপি

২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে বিএনপি থাকলেও জোটের কোনো কর্মসূচিতে আর আগ্রহ নেই দলটির। বিএনপি মনে করছে, আপাতত ২০ দলীয় জোটের আর কোন প্রয়োজন নেই। তাই দলটি আর জোটের কোন বৈঠক ডাকার পক্ষে নয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে ২০ দলীয় জোট ছাড়বে না বিএনপি। ২০ দলীয় জোটের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রটি জানায়, বিএনপি আর জোটের পক্ষে নেই। কারণ ২০ দলীয় জোটকে বাদ দিয়ে একলা চলো নীতিতে চলতে চায় বিএনপি। এ কারণে বিএনপি তাদের কোন কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোটকে সম্পৃক্ত করতে চাচ্ছে না। কারণ ইতোমধ্যে ২০ দলীয় জোটের অনেক শরীক দল জোট থেকে বের হয়ে গেছে। সামনে আরো অনেকের জোট থেকে বের হওয়ার যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

এ কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বরিশাল ও চট্রগ্রামে বিভাগীয় সমাবেশ ২০ দলীয় জোটের কোন শীর্ষ নেতাদেরকে আমন্ত্রণ জানায়নি দলটি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ২০ দলীয় জোটে জাতীয় পর্যায়ের নেতা বর্তমানে আছেন, এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদ এবং কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। এই দু’জন ব্যতিত ২০ দলীয় জোটের আর কোন নেতা বিএনপির তেমন কাজে লাগবে না। বরং অন্যরা বলতে গেলে বিএনপির জন্য বোঝা। তাই সংগঠন গোছাতে বিএনপি কৌশলগতভাবে জোটকে বাইরে রেখে কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে ভিন্ন সুর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের কণ্ঠে। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বিএনপির কোন দায়িত্বশীল নেতা এ ধরনের কথা বলেছেন? অনেকের সঙ্গেই বন্ধুত্ব থাকে। কিন্তু সব সময় কি বন্ধুর সঙ্গে একসাথে ভাত খায়? কখনো খায়, আবার কখনো আলাদা খায়। আর বিএনপি একটি পার্টি। সুতরাং বিএনপি কখনো একটা আলাদা কর্মসূচি দেওয়া মানেই শরীকদেরকে বাদ দেওয়া নয়।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক দল কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ২০ দলীয় জোটের মধ্যে প্রধান দল বিএনপি। তাই তারা যখন মনে করবে বা আহ্বান জানাবেন- তখনই সভা ও বৈঠক হবে। এটাই বাস্তবতা। আর প্রতি মাসে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই মাসে এখনো বৈঠক হয়নি। আর কখন হবে, সেটা তো আমরা বলতে পারছি না।

এদিকে, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে অলি আহমেদের জাতীয় মুক্তি মঞ্চ নিয়ে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিএনপি ও জোটের ভাষ্য, অলি আহমেদ বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করে একক সিদ্ধান্তে মঞ্চ করেছেন। মূলত জোটের ভিতরে থেকে আরেকটি নতুন জোট গঠন করে অলি আহমেদ ২০ দলীয় জোটের মধ্যে বিভক্তি ও বিভাজন তৈরি করতে চাচ্ছেন।

গত ২৭ জুন নাজুক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ (বীরবিক্রম) জাতীয় মুক্তি মঞ্চ নামে নতুন মঞ্চের ঘোষণা করেন।

এবিষয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অলি আহমেদ আমাদের ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক দলের নেতা। আর উনি তো আমাদের ছেড়ে গিয়ে মঞ্চ করেন নাই। আর আমরা তো বলে নাই যে, অলি আহমেদ আমাদের সঙ্গে নেই। তবে উনা’র দল এবং উনি যদি আলাদা কিছু করে, সেটা উনি করতেই পারেন।

সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ২০ দলীয় জোটের আওতার ভিতরে থেকেই অলি আহমেদ জাতীয় মুক্তির মঞ্চের আহ্বান জানিয়েছেন। আর ২০১৯ সালের ১৬ মে জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, প্রত্যেকটি দল নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য আন্দোলন ও সংগ্রাম করবে। অতএব অলি আহমেদ সেই আহ্বান দিয়েছেন এবং তার সাথে ২০ দলীয় জোটের আরো কিছু দল যোগদান করেছে। এর মানে এই নয় যে, তারা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে। আর এটা কোন মতেই জোটের চেতনার বাইরে নয়।

এবিষয়ে ২০ দলীয় জোটের আরেক শরীক দল ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, অলি আহমেদ বলেন নাই যে, এখন আমরা ২০ দলীয় জোট ছেড়ে চলে যাচ্ছি। তবে উনি ২০ দলীয় জোটে থেকে আলাদা জোট না করলেও পারতেন। আর আলাদা মঞ্চ করার আগে উনি জোটের সাথে এবিষয়ে আলোচনা করেন নাই। আলোচনা করলে ২০ দল তখন একটা সিদ্ধান্ত তাকে দিতো। তবে ২০ দলীয় জোটের সাথে অলি আহমেদের এই নতুন মঞ্চের কোন সম্পৃক্তা নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত