ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ছাত্রদলের সভাপতি হতে চান ৪২ নেতা, সম্পাদক ৬৬

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০১৯, ১৮:৫৭  
আপডেট :
 ১৯ আগস্ট ২০১৯, ১৬:৩৬

সভাপতি হতে চান ৪২ নেতা, সম্পাদক ৬৬

ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্বে স্থান পেতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র কিনেছেন ১০৮ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৪২ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৬৬ জন।

তবে এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে মাত্র তিন জন নারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের নাদিয়া পাঠান প্লাবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনসুরা আলম এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডালিয়া রহমান।

শনিবার ও রোববার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হয় জানিয়ে ছাত্র দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি বলেন, আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। এ কারণে দ্বিতীয় দিনে দুপুরের দিকে আমরা যে ফরম ছাপিয়ে ছিলাম তা শেষ হয়ে যায়। পরে আবার ফরম ছাপিয়ে বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হয়।

মনোনয়নপত্র বিক্রির শেষ দিনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাথে আসা কর্মি-সমর্থক শিক্ষার্থীদের ভিড়ে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’ স্লোগানে মুখর ছিলো।

প্রার্থীরা ১০০ টাকা মূল্যমানে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে। প্রার্থীদেরকে কাউন্সিল-২০১৯ এর তফসিলসহ একটি ফাইল দেয়া হয়। এতে মনোনয়ন ফরম, আবেদনপত্র, প্রার্থী যোগ্যতার নিয়মাবলী, আচরণবিধি, পুনঃতফসিলের কপি, প্রত্যায়নপত্র ও ভোটার তালিকা।

ছাত্রদলের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাছাই কমিটি ও শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আপিল কমিটি গঠন করা হয়।

সভাপতি পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী যারা

মো. মামুন খান, আমিনুল হাকিম মুন্সি, খলিলুর রহমান, আসাদুল আলম টিটু, আবু জাহান চৌধুরী হিমেল, এম আর আরজ আলী শান্ত, আল আমিন কাউসার, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, রিয়াজ মো. তানভীর রেজা, মো. ফজলুল হক নিরব, মো. আব্বাস আলী, তানভীর আহমদ খান ইকরাম, জসিম মোল্লা, মো. এরশাদ খান, মো. ইহসান মামদুদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. জুয়েল মৃধা, মাসুদ রানা, মাহমুদুল হাসান বাপ্পী, হাফিজুর রহমান, এবিএম মাহমুদুল আলম সরদার, সোলায়মান হোসাইন, মো. সুরুজ মন্ডল, মো. ইলিয়াছ, মো. আজিম উদ্দিন মেরাজ, আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, ফজলুর রহমান খোকন, মাইনুল ইসলাম, মো. আবদুল মাজেদ, বিশ্বজিৎ ভদ্র, আল মেহেদি তালুকদার, সাজিদ হাসান বাবু, সিহাবুর রহমান, এস এম আল আমীন, আবদুল হান্নান, মো. আলী হাওলাদার, এসএম আমিনুল ইসলাম, শামীম হোসেন, মো. আল আমিন, আরাফাত বিল্লাহ খান, নজরুল ইসলাম নাহিদ ও জসিম উদ্দিন।

সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

সাইদ মাহমুদ জুয়েল, মো. আলাউদ্দিন খান, এম এ কাইয়ুম, মশিউর রহমান রনি, এমদাদুল হক মজুমদার, মানসুরা আলম, মো. হামিদ সাজ্জাদ হোসেন, মো. নাঈম হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, মো. হাসান তানজিল হাসান, শেখ আবু তাহের, মো. তাবিবুর রহমান, এম সাখাওয়াত হোসাইন, ডালিয়া রহমান, মিজানুর রহমান সজীব, আজমীর হোসেন, আমিনুর রহমান আমিন, শাহনেওয়াজ, মুন্সি আনিসুর রহমান, আবদুল মোমেন মিয়া, নাজমুল হক হাবিব, আনিসুর রহমান সুমন, এবিএম জহিরউদ্দিন সোহেল, এন রাকীব জুয়েল, মিজানুর রহমান শরীফ, মো. ওমর ফারুক হিমেল, রিয়াদ মো. ইকবাল হোসেইন, একরামুল হাই নাঈম, ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, মো. আবদুল মান্নান, মো. জামিল হোসেন, ইকবাল হোসাইন শ্যামল, মো. আবুল হাসান চৌধুরী, এএএম ইয়াহিয়া, নুরুল ইমরান মজমুদার শিশু, মো. মহিন উদ্দিন রাজু, রাকীবুল ইসলাম রাকিব, আরিফুল হক, আজিজুল হক সোহেল, রাশেদ ইকবাল খান, মো. জোবা্ইর আল মাহমুদ রিজভী, মোস্তাফিজুর রহমান, সোহেল রানা, মাজেদুল ইসলাম রুম্মন, মাহমুদুল আলম শাহিন, মো. ইউসুফ কামাল জনি, বাবুল আখতার শান্ত, মো. মিজানুর রহমান, নাদিয়া পাঠান পাবন, জাকিরুল ইসলাম জাকির, আশিকুর রহমান সুমন, মো. জহিরুল ইসলাম দিপু, মো. আল মামুন, মো. সাইদুর রহমান সোহেল, মাহতাব উদ্দিন জিমি, জুলহাস উদ্দিন, আতাউর রহমান, কেএমএস মুসাব্বির, কাজী মাজহারুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবুল বাশার, আশরাফুল আলম ফকীর লিংকন, আসাদুজ্জামান, সাদেকুর রহমান সাদিক, আশরাফুল আলম, দেলোয়ার হোসেন, সুলায়মান হোসাইন।

এদিকে ছাত্রদলের নেতা নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনায় সাবেক ছাত্রদল নেতাদের সমন্বয়ে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এগুলো হলো- নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, বাছাই কমিটি ও আপিল কমিটি।

আপিল কমিটির আহবায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা এতটুকু বলতে চাই, সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মাকে কারাগার থেকে মুক্ত করা। সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে, সাংবিধানিক একটি পরিস্থিতি তৈরি করা। সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে একটি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে নিজের অধিকারের বাংলাদেশকে সামনে নিয়ে আসা।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনেকে বলেন যে, ছাত্রদলের এই কাউন্সিলকে ঘিরে আমাদের ছাত্রবন্ধুদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। আমি কখনো কখনো বিকেলে বেরিয়ে রাতে ফিরি। তখন দেখি রাত ১২টা পর্যন্ত ছাত্ররা অপেক্ষা করছেন তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করছেন। এই যে উসবমুখর পরিবেশে, এই পরিবেশের মধ্য দিয়ে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর আমাদের ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

মনোনয়ন পত্র প্রদানের অনুষ্ঠানে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, সদ্য বিলুপ্ত কমিটির রাজীব আহসান ও আকরামুল হাসান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্র দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই ২০০০ সালে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে, প্রার্থীদের অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রত্ব আছে এমন প্রমাণপত্র অবশ্যই প্রার্থীদেরকে দাখিল করতে হবে, প্রার্থীকে ন্যুনতম স্নাতক পাশ হতে হবে এবং পাশের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে, প্রমাণের জন্য সকল সার্টিফিকেটের মূল কপি প্রার্থীদেরকে নিয়ে আসতে হবে।

অপরদিক বয়সসীমা উঠিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে গত ১০ জুলাই থেকে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের আন্দোলন এবং পরবর্তিতে তাদের ১২ নেতাকে সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্য্ক্রমের অভিযোগ বহিস্কারের পর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই পুনঃতফসিল ঘোষণা করলো।

গত ৩ জুন বিএনপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্র দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয়। এরপর আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পা্দক নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত হয়। রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদলের অনুষ্ঠেয় কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

এগুলো হচ্ছে, এক. প্রার্থীদের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে, দুই. অবশ্যই বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হতে হবে এবং তিন. কেবলমাত্র ২০০০ সাল থেকে পরবর্তীতে যে কোনো বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

প্রসঙ্গত, মনোনয়নপত্র জমাদান ১৯ ও ২০ আগস্ট, বাছাই ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ আগস্ট এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৩১ আগস্ট। প্রার্থীর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রচার ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত।

আগামী ৪ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ, তালিকার ওপর আপত্তি ও নিষ্পত্তি ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর এবং চূড়ান্ত তালিকা ৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হবে। আর তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালাতে পারবেন।

আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর এই দুই পদের নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। যাতে সারাদেশের ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।

সর্বশেষ ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছিলো ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আকরামুল হাসানকে নির্বাচিত করা হয়। রাজীব-আকরামের নেতৃত্বে ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা পর দীর্ঘদিন পরে এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়, যাতে ৭৩৬ জনকে পদ দেয়া হয়েছিলো।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত