ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘বাংলাদেশ ধর্ষণের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০১৯, ১২:৫৭

‘বাংলাদেশ ধর্ষণের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে’
ছবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশ আজ ধর্ষণের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সেলিমা রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ পরিণত হয়েছে ধর্ষণের লীলাভূমিতে। বখাটে প্রেমিক, পাড়ার মাস্তান, কর্মকর্তা, বাস কন্ডাক্টর, শিক্ষক ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপালসহ কিছু বিকৃত মানুষের লালসার শিকার নারী ও শিশুরা। ৯ মাস বয়স থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষকের লোলুপ দৃষ্টি থেকে কেউ বাদ যাচ্ছে না। এমনকি রেহাই পাচ্ছেন না বাকপ্রতিবন্ধী বা ভবঘুরে পাগলও। রাস্তাঘাট, বাস বা ট্রেন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, এমনকি পুলিশ স্টেশন কোথাও নারীরা নিরাপদ নয়। স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে নারীকে ধর্ষণ, পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে নির্মম কায়দায় শিশু হত্যা, পাশবিক নির্যাতনের পর নারীকে পুড়িয়ে কয়লা করে দেয়া-এইভাবে নানা অভিনব কায়দায় ধর্ষক লম্পটের হিংস্র থাবা সর্বত্র বিরাজমান।’

তিনি বলেন, ‘আইনের শাসনের অভাবে মাদকের বিস্তার এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়সহ বিভিন্ন কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন বাড়ছে। আমরা মনে করি, এই কারণগুলো সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মোকাবেলা করতে হবে। অনাচারমূলক দু:শাসনে জবাবদিহিতার অভাবের কারণেই নারী ও শিশু নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যমান গণতন্ত্রশুণ্য দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। নব্য ফ্যাসিবাদী শাসনে একদিকে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। আবার অন্যদিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত নারী ও শিশুরা দুর্বৃত্তদের লালসার শিকার হচ্ছে।’

বেগম সেলিমা বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলেই নারী ও শিশু নির্যাতন অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। কারণ অধিকাংশ নির্যাতনকারী সরকারী দলের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এই কারণে এই ধরণের জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত থাকার পরেও তাদের কেশাগ্রও কেউ স্পর্শ করতে পারছে না। এরা আইনের আওতার বাইরে থাকছে।’

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দেশের নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের লক্ষ্য নিয়ে ‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম’ শিরোনামে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করেছে। বর্তমান ভয়াবহ অনাচার-দুরাচারের বিরুদ্ধে এটি আমাদের একটি সামাজিক আন্দোলন।’

এসময় বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার যাবতীয় কার্যক্রমকে শক্তিশালী এবং বেগবান করা, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশ নারী ও শিশু, এই জনগোষ্ঠীর জীবন সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধকতাপূর্ণ, এদের মধ্যে যারা ভিক্টিম হচ্ছেন তাদেরকে আইনগত ও চিকিৎসাগত সহায়তা দেয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা, বিশেষভাবে দুঃস্থ ভিক্টিমদের শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসাসহ সম্ভাব্য আইনগত সহায়তা প্রদান করা, ভিক্টিম নারী ও শিশুদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখা, নারীকে নির্যাতন করা অন্যায়’ এটি পরিবার থেকে শিশুকে শেখানো, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতন যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করা,যেকোন গণমাধ্যমে আলাপচারিতা ও পারস্পারিক কথাবার্তায় যাতে নারী বিদ্বেষী বক্তব্য প্রচার না পায়, সেক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ গড়ে তোলা।

পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের গঠিত কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানকে আহ্বায়ক এবং নিপুন রায় চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের ৬৬ বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর এই কমিটিতে সাংবাদিকরা আসতে চাইলে আমরা তাদেরকে অন্তভূক্ত করবো।

এছাড়া নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা হচ্ছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী, মীর সরাফত আলী সপু, আফরোজা আব্বাস, নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত