ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

ক্ষমতা ভাগাভাগি, বিক্ষুব্ধ জাপা কর্মীদের বিক্ষোভ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৯

ক্ষমতা ভাগাভাগি, বিক্ষুব্ধ জাপা কর্মীদের বিক্ষোভ

দলের চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে চলমান সঙ্কটের সমাধান হয়েছে জাতীয় পার্টিতে। রওশন এরশাদকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এবং জি এম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান ঘোষণার মধ্য দিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে দলটি। কিন্তু তাতেও আপত্তি তুলে বনানীর কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সমর্থকরা।

তাদের ভাষায়, বারিধারার কসমোপলিটন ক্লাবে শনিবার রাতের সমঝোতা বৈঠকে যা হয়েছে তা ‘নাটক’। দলে আর সংসদে তারা আলাদা নেতা চান না।

গত ১৪ জুলাই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মারা যাওয়ার আগে ছোটভাই জিএম কাদেরকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। যা নিয়ে দলের দুই গ্রুপের মধ্যে মনস্তাত্বিক লড়াই শুরু হয়। এরশাদ মারা যাওয়ার পর এ নিয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখালেও তার চেহলাম শেষে মাঠে নামেন কাদের ও রওশনপন্থী নেতারা।

নিজেকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে মনোনীত করতে স্পিকারকে চিঠি দেন জিএম কাদের। তার চিঠির একদিন পর স্পিকারকে চিঠি দেন রওশন এরশাদ। তার দাবি, তিনিই হবেন বিরোধীদলীয় নেতা।

পরদিন সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করে জাপার একটি অংশ। এরপর থেকে জাতীয় পার্টির বিভক্তি প্রকাশ্যে চলে আসে। এমন পরিস্থিতিতে কোন্দল মেটাতে গতকাল বৈঠকে বসেন জি এম কাদের ও রওশন এরশাদপন্থীর নেতারা। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে দুই পক্ষের নেতারা বসে সমঝোতায় পৌঁছান। পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ রোববার বনানীতে পার্টি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে সেই সিদ্ধান্ত জানান।

তিনি বলেন, এরশাদের ‘নির্দেশনা’ অনুযায়ী জিএম কাদেরই দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। আর সংসদে বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্বে থাকবেন রওশন এরশাদ।

এই সমঝোতায় স্বস্ত্বি প্রকাশ করে রাঙ্গাঁ বলেন, ‘পরিবারের পিতামাতা যখন বিবাদে জড়ান, তখন সন্তানরা বিপদে পড়েন। দলে বড় ভাই হিসেবে আমি কিছুটা সরে পড়েছিলাম। তবে গত তিন দিনে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করে গতকালের বৈঠক আয়োজন করেছি। একটা বড় ধরনের ভাঙন থেকে জাতীয় পার্টি রক্ষা পেয়েছে।’

রোববার সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে বেলা ১টায় সংসদ ভবনে জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশনের।

ওই বৈঠকের পর বিরোধী দলীয় নেতা নির্ধারণের বিষয়ে স্পিকারকে চিঠি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জিএম কাদেরের সমর্থক এমপিরা সংসদ ভবনে না যাওয়ায় সেই বৈঠক সময়মত শুরু করা যায়নি বলে রওশনপন্থি নেতা এস এম ফয়সাল চিশতী জানান।

রওশনপন্থিরা যখন সংসদ ভবনে, জিএম কাদের তখন তার অনুসারী ১৪ জন এমপিকে নিয়ে বনানীতে পার্টি চেয়ারম্যানের অফিসে বৈঠক করছিলেন।

জি এম কাদের ছাড়াও মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম, শরীফুল ইসলাম জিন্নাহ, আদেলুর রহমান আদেল, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও নাজমা আক্তার ছিলেন সেখানে।

ওই বৈঠক চলার মধ্যেই চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সিঁড়িতে এবং জি এম কাদেরের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছেন একদল কর্মী।

রওশন এরশাদকে বিরোধী দলের নেতা করার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সমঝোতা বৈঠকে তাকে ‘অগণতান্ত্রিক ও আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন তারা।

আধা ঘণ্টার বেশি সময় এই বিক্ষোভ করার পর কাদেরপন্থি কর্মীরা কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যান। কাদের তখনও এমপিদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন।

পরে বৈঠক থেকে বেরিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য আদেলুর রহমান আদেল, রানা মো. সোহেল রানা ও নাজমা আক্তার বলেন, সংসদ ভবনে পার্লামেন্টারি পার্টির বৈঠকে তারা যাচ্ছেন না। তারা সরাসরি অধিবেশনে যাবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত