ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের

  কিরণ সেখ

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:১৭  
আপডেট :
 ১২ অক্টোবর ২০১৯, ২০:০৯

ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের
ফাইল ছবি

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট টিকে থাকবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। তাদের ভাষ্য, রোববার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যাত্রার এক বছর পূর্ণ হবে। এই দিন উন্মুক্ত মঞ্চে সমাবেশ এবং রাজধানীতে র‌্যালি না করে ঘরের ভিতরে আলোচনা সভা করা হচ্ছে! আর এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে, ঐক্যফ্রন্টের কোন জোর নেই, তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে। তাই ঐক্যফ্রন্টকে টিকেয়ে রাখাটাই এখন ফ্রন্টের মূল চ্যালেঞ্জ হবে।

এদিকে বর্ষপূর্তিতে ঐক্যফ্রন্টের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী বেশী। কারণ যে দাবি ও লক্ষ্য নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয় তা এক বছরে এসেও পূরণ হয়নি। বরং দাবি ও লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার পরও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে জোটের সংসদ সদস্যদের এমপি হিসেবে শপথ গ্রহণে আরো বেশী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদেরকে। আর নির্বাচনের পরে ঐক্যফ্রন্টের নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ফ্রন্ট থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরও প্রশ্ন উঠে যে, ঐক্যফ্রন্ট কি ভেঙে যাচ্ছে?

যদিও গত এক মাসে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। আর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে শোক র‌্যালি করবে ফ্রন্ট। তবে এরপরও ফ্রন্ট টিকে থাকবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে, এটা এখনো টিকে আছে। এখনো জনগণের মন থেকে এটা বিচ্ছিন্ন হয়নি। আর তাদের পথের বড় প্রতিবন্ধকতা হলো, তারা এখনো ঢাকা কেন্দ্রিক রয়ে গেছে। এটা হচ্ছে, সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। সুতরাং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কি হবে- এটা অনেকাংশেই নির্ভর করে, তারা কি আগামী মঙ্গলবার আবরার ফাহাদের বাড়িতে যাবে? তারা কি সারাদেশে মিটিং ও মিছিল করবে? তারা কি মাঠে ময়দানে থাকবেন? না কি ঢাকায় থেকে বিএনপির মতো প্রেসক্লাবে বক্তব্যে দেবেন? তাই আমরা কোন পথে যাবো, এটা আমাদের উপরে নির্ভর করছে।

বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জানতে চাইলে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সফলতাও আছে আবার ব্যর্থতাও আছে। আর সংগ্রামের মূল বিষয় যেটা, সেটা হচ্ছে গণতন্ত্র। সেটা এখনো তো হয়নি।

ঐক্যফ্রন্টের সফলতা ও ব্যর্থতার বিষয়ে জানতে চাইলে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি ও ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রুত চৌধুরী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমি তো কোন ব্যর্থতা দেখি না। সবই তো সফলতা। কারণ ব্যর্থতার সব কিছুই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের। সুতরাং আমাদের কোন ব্যর্থতা নেই?

অপরদিকে রোববার প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেখান থেকে ফ্রন্টের পরবর্তী করণীয়, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানাবে ঐক্যফ্রন্ট।

এবিষয়ে জেএসডির সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা আসম আবদুর রব বলেন, রোববার আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবো। এই দিন বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পরবর্তী করণীয় এবং বর্তমান জুয়ারি সরকার ও অবৈধ সরকারের পদত্যাগ দাবি জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে গণফরোম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়।

কেএস/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত