ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

ভাঙনের মুখে এলডিপি!

  কিরণ শেখ

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৭

ভাঙনের মুখে এলডিপি!

গত শনিবার ২০৩ সদস্যে বিশিষ্ট দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির তালিকা প্রকাশ করেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। গত ৭ মাস ধরে দলের কোন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত না থাকার অভিযোগে দলটির ঘোষিত এই কমিটিতে সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমকে রাখা হয়নি। একারণে শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ এলডিপির বেশ কয়েক নেতা খুব শিগগির বিএনপিতে যোগ দেবেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে। আর সেলিম দল থেকে বের হয়ে গেলে এলডিপি ভাঙনের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে শাহাদাত হোসেন সেলিমকে দলে কোন পদে না রাখলেও এলডিপি থেকে বহিষ্কার করা হয়নি।

শনিবার এলডিপি সভাপতি অলি আহমদের স্বাক্ষরে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি গঠনের বিষয় জানানো হয়। এলডিপির মহাসচিব হয়েছেন রেদোয়ান আহমেদ। আর ১৭ জন সভাপতিমণ্ডলী, ২১ জন সহসভাপতি, ২১ জন উপদেষ্টামন্ডলী, ৭ জন যুগ্ম মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ, সম্পাদকীয়, সহ-সম্পাদকীয়সহ ১২৬ সদস্যের নির্বাহী সদস্যের নামও প্রকাশ করা হয়েছে ওই তালিকায়।

সেলিমকে পদে না রাখার বিষয়ে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে শাহাদাত হোসেন সেলিম দলের কোন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আর আমাদের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, যারা দলের সাথে এবং দলের কাজের সাথে সম্পৃক্ত নেই তাদেরকে পদে রাখা হবে না। আর এলডিপি সভাপতি অলি আহমেদকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জন্য সভায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সুতরাং এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনিই।

‘সেলিম গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে থেকে এলডিপির প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতিকীকে নির্বাচন করেন।’ এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আমরা সেলিমকে কোন পদে রাখি নাই। কিন্তু তাকে তো দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। তিনি এখনো এলডিপির একজন সদস্য।

শাহাদাত হোসেন সেলিমের বিএনপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রেদোয়ান বলেন, এব্যাপারে আমি কিছু জানি না। জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন সেলিম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমি প্রায় তিন মাস দলে অনুপস্থিত ছিলাম। একারণে হয়তো আমাকে পদে রাখা হয়নি। তবে আমি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি না।

শোনা যাচ্ছে আপনি বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন- এই প্রশ্নে জবাবে সেলিম বলেন, সেবিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। তবে আমার অবস্থান অবশ্যই জাতীয়তাবাদীর শক্তির পক্ষেই হবে।

সত্তরের দশকে চট্টগ্রামে বাম সংগঠন জাতীয় ছাত্রদলের চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি হিসেবে কাজ করেন শাহাদাত হোসেন সেলিম। পরে চট্টগ্রাম মহনগর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়কের দায়িত্ব পান তিনি। পরবর্তিতে প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক করা হয় তাকে। এরপর তিনি যুক্ত হন বিএনপির রাজনীতিতে। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যপন্ত প্রায় এক যুগ চট্টগ্রাম বন্দর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সেলিম। ছয় বছরের মতো ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক। ২০০০ সালে রামগঞ্জের স্থানীয় বিএনপির কোন্দলে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় সেলিমকে। পরে ২০০৬ সালে বিএনপি থেকে বের হয়ে স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য কর্নেল অলি আহমদের নেতৃত্বে এলডিপি গঠিত হয়। এলডিপি গঠনের পেছনে শাহাদাত হোসেন সেলিমের মুখ্য ভুমিকা ছিল বলে জানা যায়। এলডিপির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম মহাসচিব পদ থেকে ২০০৭ সালে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব করা হয় সেলিমকে।

কেএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত