ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

সংসদে করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ২০:২১  
আপডেট :
 ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ২১:২৪

সংসদে করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় সংসদে দাঁড়িয়ে সবার কাছে নিঃশর্তভাবে করজোড়ে ক্ষমা চেয়েছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইফ মসিউর রহমান রাঙ্গা।

সাবেক এই স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি যদি কোনো রকমের ভুল করে থাকি তার জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি, নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। আমার কোনো ভুল ত্রুটি হলে সবাই আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।

বুধবার জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালি বিধির ২৭৪ বিধিতে নিজের কৈফিয়ত দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব।

রাঙ্গা বলেন, ১০ নভেম্বর ‘গণতন্ত্র দিবস’ নিয়ে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ একটি ছোট সভা ছিল। বাইরে কোনও মাইক ছিল না। ভেতরে সাউন্ডবক্সের মাধ্যমে আমরা কথা বলি। একই দিনে ‘নূর হোসেন দিবস’ও ছিল। পুরনো ঢাকা থেকে আমাদের কিছু লোক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। আসার পথে তারা নূর হোসেন চত্বরে শুনতে পান এরশাদকে গালাগালি করা হচ্ছে। ‘এরশাদের দুই গালে, জুতো মারো তালে তালে’—এ ধরনের কিছু কথাবার্তা শোনার পরে আমাদের এখানে এসে তা বলেন। এর ফলে জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

সেই প্রেক্ষিতে কর্মীদের উত্তেজনার মধ্যে বক্তব্য প্রদানকালে অনিচ্ছাকৃতভাবে আমার মুখ থেকে নূর হোসেন সম্পর্কে কিছু অযাচিত কথা বেরিয়ে গেছে যা নূর হোসেনের পরিবারের সদস্যদের মনে আঘাত করেছে। এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত।

জাপা মহাসচিব আরও বলেন, ২০১৪ সালে আমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করি। গতকাল (মঙ্গলবার) অনেকে অনেক কথা বলেছেন। আমি মনে করি, তারা আমাকে শাসন করেছেন। আমি একটা ভুল করেছি। এজন্য আমি নূর হোসেনের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। এটি নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছি।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোনও আপত্তিকর মন্তব্য করেননি দাবি করে রাঙ্গা বলেন, আমি প্রতিমন্ত্রী থাকতে এই সংসদে অনেক কথা বলেছি। এই সংসদে দাঁড়িয়ে অজস্রবার জয়বাংলা বলেছি। অজস্রবার জাতির পিতা বলেছি। জাতির পিতা নিয়ে যদি আমি কোনও ভুল বলে থাকি, তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমরা ২০১৪ সালে মহাজোটের সঙ্গে নির্বাচন করেছি। শাজাহানসহ আমি সারাদেশে পরিবহন সচল রাখার জন্য কাজ করেছি। ১৮ দিন আমরা হেলিকপ্টারের মধ্যে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রীকে আমি সন্ত্রাসবাজ-দুর্নীতিবাজ বলিনি। বলেছি, বিশ্বজিৎ হত্যা, জেলহত্যার বিচার হয়েছে। ক্যাসিনোরও বিচারও হয়েছে। ১৯৯০ সালের পরে খালেদা জিয়ার সময় কৃষক হত্যার কথা, একুশ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলার কথা বলেছি। এর রেকর্ডও আছে। তারপরও ভুল করলে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। যারা কলিগ আছেন, বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর সৃষ্টিতে দেখবেন।

রাঙ্গা বলেন, ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমার দল ক্ষমতায় এলেও মন্ত্রী হতে পারতাম না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে মন্ত্রী করেছেন। আমাকে অনেক স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন। তার সঙ্গে আমার এই ভালো সম্পর্কই থাকবে বলে মনে করি। কাউকে কটাক্ষ করে কিছু বলতে চাই না। আমার বলায় ভুল হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘এরশাদ গুলি করে মারুন বা না মারুন, এটি সত্য যে নূর হোসেন মারা গেছেন।’ নূর হোসেনের মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বলেও রাঙ্গা দাবি করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এরশাদের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে মন্তব্য করার পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে মঙ্গলবার তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি আসে সংসদ থেকে। কোনো কোনো এমপি তাকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কারও চান। তবে জাতীয় পার্টির কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেন, এটা তাদের দলীয় বক্তব্য নয়।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত