প্রেসিডেন্ট পার্কে ‘অবরুদ্ধ’ বিদিশা-এরিক
এরিক এরশাদের সাথে দেখা করতে গিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মা বিদিশা সিদ্দিক। গত বৃহস্পতিবার এরিকের অসুস্থ্যতার খবর পেয়ে বিদিশা এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্ক বাসভবনে ছুটে যান। আর এরপর থেকেই সেখানে আটক অবস্থায় রয়েছেন বিদিশা।
শনিবার দুপুরে এমন অভিযোগ করে বিদিশা গণমাধ্যমকে বলেন, পিতৃহারা এরিক আমার নয়নমনি। বাবার অবর্তমানে মা হিসেবে আমিই তার লিগ্যাল অভিভাবক। সে আমার কাছেই আছে। প্লিজ, তাকে নিয়ে অনেক করেছেন। আমার অটিস্টিক ছেলের উপর অনেক মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন। এবার অন্তত ক্ষমা দেন। এরিককে নিয়ে আর নোংরা রাজনীতি করবেন না প্লিজ।
বিদিশা সিদ্দিকের অভিযোগ, শুক্রবার সকাল থেকে কাউকেই তার সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছেন না বাড়ির পাহারায় থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা। এমনকি প্রয়োজনীয় ওষুধও আনতে দেয়া হচ্ছে না।
বিদিশা বলেন, এরিক আমাকে ফোন করেছে, বলছে, মা আমি আর সহ্য করতে পারছি না, থাকতে পারছি না, মা তুমি আমাকে বাঁচাও, আমাকে এখান থেকে বের করো। তাড়াতাড়ি আসো। তারপর কালকে আমি নিজেই চলে এসেছি। এরিক আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছে। আমি বললাম কি হয়েছে তোমার? তখন ও বললো যে, আমাকে চাচা বলেছে তুমি তোমার মার সাথে যোগাযোগ করতে পারবা না, মার সাথে কথা বলতে পারবা না।
তিনি বলেন, এরিকের বৈধ অভিভাবক আমিই। পিতার মৃত্যুর পর মা বেঁচে থাকতে চাচা কখনো অভিভাবক হতে পারে না। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে চাচা কি আমার ছেলেকে এসে দেখাশোনা করতেন? বাসা থেকে একবেলা খাবার পাঠিয়েছেন। নাকি চাচা-চাচি তাকে বাসায় নিয়ে খাইয়েছেন? কোনটাই করেনি। বরং তার উপর মানসিক অত্যাচার করেছেন। তাদের আশকারা পেয়ে ড্রাইভার আউয়াল তার গায়ে হাত তুলেছেন। অনাদরে অবহেলায় আমারে ছেলের জীবন বিষিয়ে উঠেছে। এরশাদ জীবিত থাকলে তারা কি সেটা করতে পারতেন?
তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে অটিস্টিক। সে নিজে নিজে সবকিছু করতে পারে না। এই সুযোগটা তারা নিয়েছে। আমার ছেলেকে না খাইয়ে, ভয় ভীতি দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে খেপিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে কথা বলানো হয়েছে। তাকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয়নি। ঘরে আটকিয়ে যেভাবে মানসিক টর্চার করা হয়েছে তা শুধু অমানবিক নয়, তা নজিরবিহীন ঘটনা। আর যা কিছু হয়েছে সবকিছু তার চাচার নির্দেশে হয়েছে। আমার ছেলে আমাকে সবকিছু বলে দিয়েছে। এরিক চাচার জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চায়, একই সাথে চাচার শাস্তিও চায়।
জিএম কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিদিশা বলেন, আমাকে দুর্বল মা ভাববেন না। কোনো অপশক্তি আমার কাছ থেকে এরিককে আর কেড়ে নিতে পারবে না। তারপরও যদি বাড়াবাড়ি করেন তাহলে আমি শিশু নির্যাতন মামলা করে আপনার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।
এ বিষয়ে কথা বলতে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, বিদিশার বক্তব্য সত্য নয়। তাকে কে, কীভাবে, কোথায় অবরোধ করে রেখেছেন? আসলে আমার বড়ভাই মৃত্যুর আগে এ বিষয়ে একটা নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এরিককে কে কে দেখাশোনা করতে পারবেন, কে কে পারবেন না তার একটা গাইডলাইন আছে। আমি এসব বিষয়ে পরে প্রেস রিলিজ দিয়ে পরিস্কার করব। এরিক নিজে বলেছে, তার মা যেন তার কাছে না আসেন।
এনএইচ/