ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিদিশার ব্যাপারে অছিয়ত নামা দলিলে যা লিখে গেছেন এরশাদ

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৩৩

বিদিশার ব্যাপারে যে অছিয়ত লিখে গেছেন এরশাদ

জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজধানীর বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্ক বিষয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বিদিশাকে হস্তক্ষেপে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গেছেন। ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর অব. মো. খালেদ আখতার শনিবার এক বিবৃতিতে এমনটা জানান।

হুসেইন মুহম্মদ ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডিও করেছেন।

মেজর (অব.) মো. খালেদ আখতার এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ১৪ নভেম্বর বিদিশা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে প্রেসিডেন্ট পার্কে প্রবেশ করেন। ট্রাস্টের উক্ত সম্পত্তিতে বিদিশার প্রবেশের কোনো আইনগত অধিকার নেই।

শনিবার বিকেলে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য খালেদ আখতার বলেন, ট্রাস্টের নিয়ম অনুযায়ী এরিক এরশাদ তার মা বিদিশাকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট পার্কে অবস্থান করতে পারবেন না। এরিকের এখানে চাওয়ার কোনো এখতিয়ার নাই। এরিকের সমুদয় দায়িত্ব ট্রাস্টের। আপনারা অনুসন্ধান করে দেখেন, এটা তার নিজস্ব বক্তব্য না।

গত জুলাইতে মৃত্যুর আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার সমুদয় সম্পত্তি দান করে যান ট্রাস্টে। ছেলে এরিকের দেখভাল করার জন্য এই ট্রাস্ট গঠন করা হয়। ট্রাস্টের সদস্য হিসেবে এরিক আর ভাতিজা খালেদ আখতারকে রাখলেও ভাই জি এম কাদেরকে রাখেননি এরশাদ।

এরশাদের মৃত্যুর পর এরিকের দেখভাল ঠিকমতো হচ্ছে না অভিযোগ এনে গত ১৪ নভেম্বর বিদিশা চলে আসেন প্রেসিডেন্ট পার্কে। এরপর থেকে বারিধারার দূতাবাস রোডের এই বাড়িতেই ছেলের সঙ্গে থাকছেন তিনি।

বিদিশা বলছেন, প্রেসিডেন্ট পার্কের কর্মীরা এরিকের উপর ‘শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন’ করছেন এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি ছেলের কাছে ছুটে আসেন।

‘নিরাপত্তাহীনতায়’ ভুগতে থাকা এরিক এরশাদও তার মায়ের সাথে থাকবেন জানিয়ে গত ১৮ নভেম্বর গুলশান থানায় এক জিডি করেন।

এরপর গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট পার্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদিশা অভিযোগ করেন, ভাতিজার দেখভালের জন্য নয়, এরিকের সম্পত্তি ভোগদখল করার জন্যই জি এম কাদের ‘রাজনীতি করছেন’।

তার জবাবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন জি এম কাদের। এর পরদিন বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এলেন এরিকের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ট্রাস্টের সদস্যরা।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে এরশাদ ও বিদিশার বিবাহ বিচ্ছেদের পর ২০০৯ সালে এরিকের অভিভাবকত্বের দাবিতে আদালতে যান বিদিশা। পরে ২০১১ সালে আসে রায়। সে রায়ে হেরে যান বিদিশা। অটিস্টিক এরিক বড় হতে থাকেন এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কে।

এরশাদ মারা যাওয়ার আগে এরিকের নামে এফডিআর, বারিধারার দূতাবাস রোডের প্রেসিডেন্ট পার্ক, গুলশানে একটি আবাসিক ফ্ল্যাট, রংপুরের পল্লী নিবাস, একটি কোল্ড স্টোরেজ, কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে ইউএই মার্কেটে একটি দোকান রেখে গেছেন।

খালেদ আখতার জানান, এই সম্পত্তির অর্থমূল্য ‘৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা।’

এদিকে দলিল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ওই অসিয়ত নামা সম্পাদন করা হয়। গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সম্পাদিত দলিলে (নম্বর ৬৮) বিদিশা সম্পর্কে এরশাদ লিখেছেন, অসিয়তকৃত সম্পত্তিসহ তোমার (এরিক) মালিকানাধীন সম্পত্তিতে আমার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকী কোনো রূপ হস্তক্ষেপ করিতে পারিবে না, কিংবা তোমার একচ্ছত্র মালিকানা ও ভোগ দখলে কোনো প্রকার বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি করিতে পারিবে না, কিংবা তোমার মালিকানা ও ভোগ দখলে কোনোরূপ তদারকি কিংবা অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে কোনোরূপ পরামর্শ কিংবা কোনোরূপ আদেশ নিষেধ করিতে পারিবে না, কিংবা তোমার মালিকানাধীন কোনো সম্পত্তি বিক্রয় বন্ধক কিংবা হস্তান্তর করিতে পারিবে না।

এ ছাড়া ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল সম্পাদিত ট্রাস্টের উইলের ১১ নম্বর কলামে বলা হয়েছে, বিদিশা কখনো ট্রাস্টের সম্পত্তি বা অর্থের ওপর কোনোরূপ দাবি করতে পারবে না। যদি কখনো কোনো রকম দাবি করে, তাহলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে অবৈধ এবং অগ্রাহ্য হবে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত