অতিথি পাখির বন্ধু হই
ফিচার ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:১৮ আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:২৮
দেশে শীতের সময় অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে। বিশেষ করে যেসব দেশে শীতের তীব্রতা খুব বেশি, খুব ঠাণ্ডায় যেখানে পাখিগুলোর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে; খাবার থাকে না। বাসা বাঁধার জায়গা থাকে না। সেসব দেশ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আমাদের দেশে চলে আসে।
কোনো কোনো পাখির হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে হয়। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস উড়তে হয়। কখনও কখনও এমন দূর দেশ থেকে ওরা আসে যে সেখান থেকে উড়ে আসতে আসতে পথে প্রায় তিন মাস সময় লেগে যায়। আবার কিছু দিন আমাদের দেশে থেকে আবার ফিরে যায়। ফিরে যেতেও আবার তিন মাস উড়তে হয়। তার মানে কোনো কোনো পাখির বছরে ছয় মাস শুধু উড়তে উড়তেই কেটে যায়।
প্রাণী বিজ্ঞানীদের মতে, উপমহাদেশে ২ হাজার ১০০টি প্রজাতির পাখি আছে। তবে এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ শ প্রজাতির পাখি হিমালয় পেরিয়ে আমাদের দেশে চলে আসে।
সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দল বেঁধে আসে এসব পাখি। মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত এরা কলকাকলিতে আমাদের প্রকৃতিকে ভরিয়ে তোলে। এরপর শুরু হয় নিজ দেশে ফিরে চলা।
পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিসেম্বর-জানুয়ারি এ দু’ মাসে সবচেয়ে বেশি পাখি এদেশে আসে।
বাতাসে শীতের আমেজ লাগতেই আমাদের হাওর, বিল, চরাঞ্চলে দেখা যায় হাজার হাজার অতিথি পাখি।
ইংল্যান্ডের নর্থ হ্যামশায়ার, সাইবেরিয়া কিংবা এন্টার্কটিকার তীব্র শীত থেকে বাঁচতে এরা পাড়ি জমায় দক্ষিণের কম শীতের দেশে।
প্রকৃতিগতভাবেই এ পাখিদের শারীরিক গঠন খুব মজবুত। এরা সাধারণত ৬০০ থেকে ১৩০০ মিটার উঁচু দিয়ে উড়ে যায়।
ছোট পাখিদের ঘণ্টায় গতি ৩০ কিলোমিটার। দিনে-রাতে এরা প্রায় ২৫০ কিলোমটার উড়তে পারে।
বড় পাখিরা ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার অনায়াসে উড়তে পারে। আশ্চর্যের বিষয় এসব পাখি তাদের গন্তব্যস্থান সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পাখির রয়েছে বংশগত সূত্রে পাওয়া বিশেষ দিক নির্ণায়ক ক্ষমতা।
শীত মওসুমে এদেশে আসা পাখিতের মাঝে সোনাজঙ্গ, খুরুলে, কুনচুষী, বাতারণ, শাবাজ, জলপিপি, ল্যাঞ্জা, রাজহাঁস, বালিহাঁস, হরিয়াল, দুর্গা, রাজশকুন, লালবন মোরগ, তিলে ময়না, রামঘুঘু, জঙ্গী বটের, ধূসর বটের, হলদে খঞ্চনা, কুলাউ ইত্যাদি প্রধান।
গ্রীষ্মকালে সুমেরুতে বাস করে এবং বাচ্চা দেয় হাঁস জাতীয় এমন পাখি শীতকালে বাংলাদেশে আসে।
লাল বুকের ক্লাইক্যাসার পাখি আসে ইউরোপ থেকে। আর অন্য সব পাখিরা আসে পূর্ব সাইবেরিয়া থেকে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে