প্রেসিডেন্টের স্বপ্ন যাদের জন্য দুঃস্বপ্ন
ফিচার ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:১০
ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জাইয়া বলসোনারো সম্প্রতি তার স্বপ্নের কথা শুনিয়েছেন। তবে সেই কথা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অ্যামাজনে বাস করা আদিবাসীরা। ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জাইয়া বলসোনারো একটি নতুন বিল প্রস্তাব করেছেন। কংগ্রেসে এটি পাস হলে অ্যামাজনে খনি, কৃষিকাজ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন সহজ হবে। তিনি আশা করছেন, তার এই ‘স্বপ্ন’ পূরণ হবে।
আদিবাসীদের দুঃস্বপ্ন
ব্রাজিলের আদিবাসী সংগঠনের কর্মকর্তা সোনিয়া গুয়াজাজারা বলছেন, ‘বলসোনারোর স্বপ্ন আমাদের জন্য দুঃস্বপ্ন। এটা আমাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেবে। খনি কোম্পানি মৃত্যু, রোগ আর কষ্ট নিয়ে আসে এবং এটা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ শেষ করে দেবে।’ ব্রাজিলে কমপক্ষে এক শ আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস, যাদের এখনও বাইরের বিশ্বের ছোঁয়া লাগেনি।
ট্রপিক্যাল ট্রাম্প: জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাবনা যেমন, প্রায় তেমন ভাবনা ব্রাজিল প্রেসিডেন্টেরও। তাই অনেকে তাকে ‘ট্রপিক্যাল ট্রাম্প’ নামেও ডাকেন। গতবছর দায়িত্ব নেয়ার পর অ্যামাজন বিষয়ে বলসোনারোর নেয়া বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করেছেন পরিবেশকর্মীরা।
প্রেসিডেন্টের হুমকি: জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অ্যামাজন রক্ষা করতে চান পরিবেশবাদীরা। তাই নতুন বিল উত্থাপন করতে গিয়ে তাদের একহাত নিয়েছেন বলসোনারো।
তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি পরিবেশকর্মীরা আমাদের উপর চাপ দেবে। পারলে আমি তাদের অ্যামাজনে বন্দি করে রাখতাম, কারণ তারা পরিবেশ খুব পছন্দ করেন।’
আইন সহজ করেছেন: গবেষক ব্রেন্ডা ব্রিতো বলছেন, ব্রাজিলের আইন জমি দখল ও বন ধ্বংসকারীদের পক্ষে। ‘এটি (এই আইন) আপনাকে জমি দখলের অনুমতি দেয়, যদি আপনি একে কাজে (বৈধ কাজ) লাগানোর ভান করে এবং এরপর জমির মালিকানা দখল করে নেন।’
বলসোনারো এই আইন আরো সহজ করে জমি দখলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আগে যেখানে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জমি নিয়ন্ত্রণে থাকলে মালিক হওয়া যেত সেখানে নতুন আইনে ঐ সময়সীমা বাড়িয়ে ২০১৪ সাল করা হয়েছে।
এলাকা দ্বিগুন হয়েছে
বলসোনারো আসার পর গতবছর ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অ্যামাজন ধ্বংস হয়েছে। আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার হাজার ২১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা ধ্বংস হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুনেরও বেশি।
স্থানীয়রা জমি দখল ও বন ধ্বংসের প্রতিবাদ করলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। যেমন স্থানীয় নেতা দে মেলো থাকেন নভো প্রোগ্রেসো এলাকায়। গতবছর ঐ এলাকার অ্যামাজনে আগুন লাগার ঘটনা বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল। দে মেলো প্রতিবাদ করায় তার ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালে তার গ্রামের তিনজনকে হত্যা ও অন্তত ১৬ জনকে হুমকি দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে