ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

পত্রিকা পড়েই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সেরা

পত্রিকা পড়েই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সেরা
এনিস কানমণি জয়

ছোটবেলায় স্কুলের বই কেনার মতো টাকা ছিল না। আর আজ সেই মেয়েই কিনা সম্প্রতি ভারতের সবচেয়ে কঠিন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। সরকারি অফিসে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসাবে যোগ দেয়া তার জন্য এখন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বলছিলাম এনিস কানমণি জয় নামের মেয়েটির কথা। তিনি ভারতের কেরালা রাজ্যের এক কৃষকের কন্যা। গত মাসে অনুষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হিসাবে স্বীকৃত ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি)পরীক্ষায় পাস করেছেন জয়। পরীক্ষায় তার অবস্থান ৬৫তম। চলতি সপ্তাহে জয়ের সংগ্রাম ও সফলতার কাহিনী ভারতের সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর নেটিজনদের প্রশংসার বন্যায় ভাসছেন তিনি।

ফেসবুক ইউজার রাজন পি তার কাহিনী শেয়ার করে লিখেছেন: ‘তার ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও দৃঢ়তার মাধ্যমে যে কোনও কিছু করা সম্ভব। … অন্য সব কিছুই একটি অজুহাত।’

জয়ের জন্ম কেরালার ছোট্ট গ্রাম পিরাভমের এক কৃষক পরিবারে। তার পরিবারের পক্ষে তার স্কুলের পড়াশুনার জন্য বই কেনা সম্ভব ছিল না। তবুও তিনি পড়া চালিয়ে গেছেন। কেননা ছোটবেলা থেকেই জয় খুবই ভালো ছাত্রী এবং তার স্বপ্ন ছিল একজন ডাক্তার হওয়া। স্কুল শেষ করার পরে তিনি এমবিবিএস (মেডিসিন ব্যাচেলর এবং সার্জারি ব্যাচেলর) পরীক্ষা দিলেও পাস করেননি। তাই, তিনি নার্সিংয়ে গ্রাজুয়েট শেষ করে নার্স হিসাবে কাজ শুরু করেন।

কিন্তু, এই পেশা তাকে খুশি করতে পারেনি। জয় অন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন যাতে অনেককে সাহায্য করা যায়। এসময় একদিন ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় তার দু'জনের সঙ্গে দেখা হয়। তাদের কাছে তিনি প্রথম ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার সম্পর্কে জানতে পারেন। এরপর থেকেই এই পরীক্ষা দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগেন জয়।

টাইমসনো ডটকমের মতে: ‘পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় তার সবচেয়ে বড় সমস্যাটি ছিল বই এবং প্রতিযোগিতামূলক ম্যাগাজিনের অভাব। এগুলি ছাড়া তার পক্ষে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব ছিল না। তখন জয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, তিনি কেবল তার সংবাদপত্র পড়েই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবেন।’

এরপর পত্রিকা পড়া শুরু করেলেন জয়। কেননা এটিই জোগার করা সবচেয়ে সহজ ছিল তার জন্য। আগেই বলেছি বই কেনার পর্যাপ্ত টাকা তার কখনই ছিল না। পত্রিকায় তিনি সম্পাদকীয় এবং সমসাময়িক বিষয়গুলির প্রতি বেশি সময় ব্যয় করতেন। এরপর তিনি চলতি বছরের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নেন। ভারতে প্রতিবছর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। আর এত বড় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জয় কেবল সফল হননি, ৬৫তম স্থান অধিকার করেছেন।

তাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফেসবুক ইউজার অজয় ​​কুমার দুয়া লিখেছেন: ‘অভিনন্দন! এটি এটাই প্রমাণ করে যে, আমাদের গ্রামাঞ্চলে কত মেধাবী ও বুদ্ধিমান মানুষ পড়ে আছে। ইশ্বর তোমাকে মঙ্গল করুন।’

@ সন্দীপ ১২৮৮ লিখেছেন: ‘তার মতো মানুষেরা কঠোর পরিশ্রম আর অনুশীলনের মাধ্যমে সাফল্যের উদাহরণ তৈরি করে চলেছেন। তাদের অনুসরণ করা উচিত ... ’

সূত্র: গালফ নিউজ

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত