একজন ‘জারকেক আপু’র গল্প
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২২, ১৬:৩১ আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ১৬:৩৫
কেক পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই আছেন। আর সেটা যদি হয় জারকেক, তাহলে তো কথাই নাই। স্বল্প দামে পরিপূর্ণ তৃপ্তি ।
কথা হচ্ছিলো ‘টেইল অব ডেজার্ট’ এর কর্ণধার উম্মে রিসালাত আপুর সাথে। চলুন জারকেক নিয়ে গল্প শুনে আসি তার মুখ থেকে।
তিনি বলেন, ‘২০২০-এর ১৫ মার্চ থেকে যখন কোভিড-১৯ এর জন্য ধীরে ধীরে সব বন্ধ হয়ে যায়, প্রথম প্রথম ঠিক লাগলেও কিছুদিন পর হতাশ লাগতে শুরু হয়। কারন, তখন সবেমাত্র গ্রাজুয়েশন শেষ করি, আর কোভিডের জন্য টিউশনিও ছিল না। এক কথায় বেকার। কোন কাজ, ইনকাম- কিছুই না থাকায় ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনের দিকে চলে যাই।’
উম্মে রিসালাত বলেন, ‘যেহেতু হাতে অনেক সময় ছিল। শখের জায়গা থেকে টুকটাক রান্না করতাম, নতুন রেসিপি ট্রাই করতাম। একটা সময় বুঝলাম, আমি বেকিং আইটেমগুলো ভালো পারি। বিশেষ করে কেক, কুকিজ এগুলো।’
‘জুন মাসে কেউ একজন নারী উদ্যোক্তাদের একটি গ্রুপে আমাকে এড করেন। সেখানে দেখি অনেক নারী যে যা পারেন, তা নিয়ে নিজেদের উদ্যোগ শুরু করেছেন। তাদের লেখাগুলো দেখে উৎসাহ পাই। ভাবি, আমিও কিছু করতে পারি। যেহেতু বেকিং এর দিকটা ভালো পারি, চিন্তা করি এমন কিছু দিয়ে শুরু করব যেটা বাজেট ফ্রেন্ডলি হবে, সবাই কিনতে পারবে। বিজনেস-এর ক্ষেত্রে বেকিং এর কাজটা সিরিয়াসভাবে করার চেষ্টা করি।’
‘ব্যবসা সম্পর্কিত তথ্য জানতে গুগলে সার্চ করে ই-কমার্স, ডিজিটাল মার্কেটিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে পড়ে জানার চেষ্টা করি। বাজেট ফ্রেন্ডলি ডেজার্ট আইটেম হিসেবে প্রথমেই জারকেকের কথা মাথায় আসে।’
‘একটি ফ্লেভারের জারকেক নিয়ে ‘টেইল অব ডেজার্ট’ এর যাত্রা শুরু হয় ১৭ জুলাই, ২০২০ এ। মূলধন ছিল মাত্র ৮০০ টাকা। প্রথম ১৫-২০ দিন কোন বিক্রিই ছিল না। তখন বুঝলাম সেল বাড়াতে হলে পার্সোনাল ব্রান্ডিং প্রয়োজন। উদ্যোক্তাদের গ্রুপগুলোতে এক্টিভ থেকে নিজের উদ্যোগের পরিচিতি বাড়াতে থাকি।’
‘একটা সময় অর্ডার আসে। আমার পরিচিতি বাড়ে, উদ্যোগের পরিচিতিও বাড়ে। এভাবে ধীরে ধীরে ক্রেতাদের মাঝে অনেক সাড়া পাই। রিপিট কাস্টমার পাই। প্রচুর পজেটিভ ফিডব্যাক আসতে থাকে। এর মাঝে আরও কয়েক ফ্লেভারের জারকেক আনা হয়। বর্তমানে উদ্যোগে ১২ ফ্লেভারের হোমমেড জারকেকসহ কাপকেক, পাউন্ডকেক, বক্সকেক, কুকিজ, জেলি, পিনাটবাটার, কেচাপসহ বিভিন্ন হোমমেড ফুড ‘টেইল অব ডেজার্ট’ এর ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।’
‘পণ্যের কাঁচামাল কেনা থেকে শুরু করে প্যাকেজিং- সবকিছুই নিজের হাতে করছি। সাশ্রয়ী মূল্যে স্বাস্থ্যকর হোমমেড ডেজার্ট ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়াই আমার উদ্যোগের লক্ষ্য।’
আর্থিক ও পরিবহন সমস্যাসহ অনেক বাধা পেরিয়ে ‘টেইল অব ডেজার্ট’ এখন এ পর্যন্ত এসেছে। এসবই ক্রেতাদের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণায়। কর্ণধার উম্মে রিসালাত বলেন, ভবিষ্যতে ‘টেইল অব ডেজার্ট’কে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
বাংলাদেশ জার্নাল/স্বর্ণ/টিটি