সিঙ্কহোলের আদ্যপ্রান্ত
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ মে ২০২২, ১৩:৩৬ আপডেট : ২২ মে ২০২২, ১৩:৪১
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিঙ্কহোলের ঘটনা ঘটছে। যা নিয়ে মানুষের মাঝে দেখা দিচ্ছে কৌতূহল ও আতংক। এটি এমন এক ভয়াবহ দুর্যোগ যা হঠাৎ করেই বিশাল এলাকা জুড়ে তৈরি করে বৃহৎ গর্ত। মুহূর্তেই মাটির গহীনে তলিয়ে যায় বাড়িঘর, গাড়ি, মানুষ, জীবজন্তুসহ সকল কিছু।
আচ্ছা, এই ভয়ানক ব্যাপারটি কেনো ঘটে? কেনো হঠাৎ প্রকৃতি এমন অশান্ত হয়ে পড়ে? চলুন জেনে নেই সিঙ্কহোলের আদ্যপ্রান্ত।
সাধারণত দুই ধরনের সিঙ্কহোল দেখা যায়। একটি হয় ভূপৃষ্ঠে, আর অন্যটি ঘটে সমুদ্রের মাঝে। সিঙ্কহোল হলো হঠাৎ করে সৃষ্টি হওয়া বিশালাকার গর্ত। একটি সিঙ্কহোল সাধারণত ১ মিটার থেকে ৬০০ মিটার পর্যন্ত বিশাল হয়ে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে এর থেকে বড় আকৃতির সিঙ্কহোলও তৈরি হয়।
সিঙ্কহোল কেনো তৈরি হয় তা বুঝতে হলে আমাদের পানিপ্রবাহ বুঝতে হবে। পানির অপর নাম জীবন। পানি আছে বলেই আমাদের ভূপৃষ্ঠ এত সুন্দর সাজে সজ্জিত। আল্লাহর অনেক বড় নিয়ামত এই পানি৷ পানি যেমন ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগে নদী, সাগরে প্রবাহিত হয় তেমনি ভূপৃষ্ঠের নিম্নভাগেও রয়েছে পানির প্রবাহ। তাই তো আমরা নলকূপ খনন করলে পানি পাই।
মাটির নিচে যে অংশ দিয়ে এই পানি প্রবাহিত হয় তার আশেপাশে অনেক পাথর থাকে। এইসব পাথরকে বলা হয় কার্বনেট রক বা বেডরক। বছরের পর বছর দীর্ঘ সময় ধরে পানি প্রবাহের ফলে প্রথমে ছোট ছোট পাথর সরে গিয়ে মাটির তলদেশে গর্ত সৃষ্টি হয়। এর ফলে ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়। এভাবে দিনের পর দিন পানি প্রবাহের ফলে একসময় বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয় ভূপৃষ্ঠের তলদেশে। ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের পাথর, মাটি নিচের দিকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে এবং ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের সবকিছু মাটির নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করে। এভাবে হঠাৎ করেই বিশাল এলাকা জুড়ে তৈরি হয় দানব আকৃতির গর্ত। যা সিঙ্কহোল নামে পরিচিত।
একটি ছোট সিঙ্কহোলের গভীরতা সাধারণত ১৫-২০ মিটার। আর একটি বড় সিঙ্কহোলের গভীরতা ৬০০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
জেনে অবাক হবেন এই পরিমাণ গভীরতায় একটি আইফেল টাওয়ার সহজেই তলিয়ে যেতে পারে। সিঙ্কহোল শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণে নয়, মানবসৃষ্ট কারণেও হয়ে থাকে। যেমন কোনো স্থাপনা তৈরির সময় ইঞ্জিনিয়ারিং ভুলের কারণে তৈরি হতে পারে সিঙ্কহোল। এছাড়া মাটির নিচ থেকে অত্যধিক পরিমাণে খনিজ সম্পদ, পানি উত্তোলন করলে মাটির নিচে পানি ও পাথরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে সিঙ্কহোল তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশ জার্নাল/রাজু
