ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

আমাজনের গভীর জঙ্গলে প্রাচীন নগর-সভ্যতার সন্ধান!

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২২, ১৬:০৪

আমাজনের গভীর জঙ্গলে প্রাচীন নগর-সভ্যতার সন্ধান!
সংগৃহীত ছবি

আমাজনের গভীর জঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে আছে শতাব্দীপ্রাচীন শহর যেখানে এত দিন কোনও মানুষ খোঁজ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি‘লেজার ইন দ্য স্কাই’নামে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই হারানো শহরগুলির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

মূলত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে ঘন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের গভীরে কী আছে তা জানতে। এই প্রযুক্তিতে হেলিকপ্টার, ছোট বিমান বা ড্রোনের সঙ্গে যুক্ত একটি লেজার স্ক্যানার দিয়ে আকাশ থেকেই ভূখণ্ড জরিপ করে দেখা হয়। এই লেজারের স্ক্যানিংয়ের ফলে ওই ভূখণ্ডের একটি ডিজিটাল মডেল কম্পিউটারের পর্দায় ধরা পড়ে।

বলিভিয়ার ল্যানোস ডি মোজোস সাভানা জঙ্গলে এই শহরগুলির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বহু শতাব্দী ধরে ঘন গাছের ছাউনির নীচে লুকিয়ে ছিল এই শহরগুলি। গবেষকদের মতে,জঙ্গলের কাসারাবে সম্প্রদায় ৫০০ থেকে ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই শহরগুলি তৈরি করেছিল।

‘লেজার ইন দ্য স্কাই’ প্রযুক্তিতে যে ছবি ধরা পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, ঘন জঙ্গলের ভেতরে বিস্তৃত এবং জটিল কিছু কাঠামো। পাশাপাশি ৫৪ একর জুড়ে বিস্তৃত এই কাঠামোতে ১৬ ফুট উঁচু ছাদও রয়েছে। ৩০টি ফুটবল মাঠের সমান এই কাঠামোর পাশে ৬৯ ফুট লম্বা এক পিরামিডের খোঁজও মিলেছে। এ ছাড়াও আমেরিকা এবং জার্মানির গবেষকদের আন্তর্জাতিক দল এই শহরের কয়েক মাইলের মধ্যে বিস্তৃত জলাধার এবং একাধিক ছোট ছোট কাঠামোও খুঁজে পেয়েছেন।

এই লুকনো শহরগুলির খোঁজ আমাজনে বসবাসকারী সম্প্রদায়ের সম্পর্কে পুরনো সব ধারণা বদলে দিচ্ছে।

গবেষকদের ধারণা, বনাঞ্চলে বসবাস করলেও আমাজনে এমন কিছু সম্প্রদায় বাস করত, যারা সময়ের তুলনায় বেশ কিছুটা এগিয়ে ছিল। আমাজনের জঙ্গলে এই নতুন আবিষ্কৃত এলাকাকে কেন্দ্র করে একটি নগর-সভ্যতা গড়ে উঠেছিলো বলেও তারা মনে করেন।

একইসঙ্গে এই শহরগুলির প্রাথমিক গঠন ধারণা দেয় যে, এই সভ্যতার মানুষেরা স্থাপত্যকার্যে বেশ নিপুণ ছিলেন। তারা যথেষ্ট পরিকল্পনা মাফিক তৈরি করা হয়েছিল বলেও গবেষকরা দাবি করেছেন।

বিংশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত মনে করা হত, আমাজন অঞ্চলের বাসিন্দারা মূলত শিকারি উপজাতির। এবং আমাজন অঞ্চলের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে থাকা মোজোস সমভূমিতে বছরে কয়েক মাস বন্যা হওয়ার কারণে এই এলাকার বাসিন্দারা স্থায়ী বসতি তৈরি করতে পারেন না। তবে সাম্প্রতিক কালে সাভানা বনাঞ্চল জুড়ে হওয়া আবিষ্কারে সেই বদ্ধমূল ধারণা অনেকটাই মিথ্যে প্রমাণিত করেছে।

এই লুকনো শহরগুলির চারপাশ একটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল বলেও গবেষকরা মনে করছেন। জঙ্গলের ঘনত্ব এবং একাধিক উঁচু মাটির ঢিবির কারণে এই শহরগুলির বেশ কয়েকটি এলাকা এখনও গবেষকদের চোখে ধরা পড়েনি বলেও গবেষকদের দল জানিয়েছেন।

আমাজন জঙ্গল নিয়ে বিশদে জানতে গবেষকরা প্রথমবার বায়ুবাহিত লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। আর তখনই লেজার চিত্রে এই শহরের ছবি ধরা পড়ে। তবে জঙ্গলের মধ্যে এই শহুরে এলাকাগুলিতে কত মানুষ বাস করত, তা এখনও অনুমান করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা। তবে প্রাথমিক ভাবে এই এলাকা মোটামুটি ঘনবসতিপূর্ণ ছিল বলেও তারা মনে করছেন। এখানকার বাসিন্দারা কেন এই শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তা-ও গবেষণা সাপেক্ষ বলেই গবেষকরা মনে করছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার

বাংলাদেশ জার্নাল/স্বর্ণ/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত