ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঘুরে এলাম নীরমহল

  রাজিয়া সুলতানা স্মৃতি

প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৩, ১৬:৩৮

ঘুরে এলাম নীরমহল
নীরমহল। সংগৃহীত ছবি

ভারতের ত্রিপুরার একটি অন্যতম সেরা দর্শনীয় স্থান নীরমহল। প্রাসাদটি ভারতের সবচেয়ে বড় জল প্রাসাদ। ত্রিপুরা রাজ্যে সিপাহীজলা জেলার মেলাঘর নামক স্থানে অবস্থিত নীরমহল।

মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপনের জন্যে (১৯৩০-১৯৩৮) নির্মাণ করেন মহলটি। আগরতলা থেকে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার দূরে রুদ্রসাগরের মাঝে এ জল প্রসাদটি অবস্থিত। আগরতলা থেকে গাড়িতে করে নীরমহলের গেটে পৌঁছাতে দেড় ঘন্টা সময় লাগে। রাস্তা খুবই ভালো এবং পথের দু'ধারে রাবার বাগান, চা বাগান, রেললাইনসহ চমৎকার সব দৃশ্য দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, আহা এ পথ যদি শেষ না হয়....! গাড়ি থেকে আমরা নীরমহলের গেটে নামলাম, তারপর ঘাট থেকে নৌকা রিজার্ভ করে চেপে বসলাম তাতে। ঘাট থেকে মহলে যেতে হস্তচালিত নৌকায় প্রায় বিশ,পঁচিশ মিনিট এবং ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পনের মিনিটের মতো সময় লাগে। আমরা হস্তচালিত নৌকায় করে যাই। নৌকা যতই মহলের দিকে এগিয়ে চলছে ততই অদ্ভুত সুন্দর লাগছিলো মহলটিকে। আর হ্রদের জলে ভেসে বেড়ানো বক, পানকৌড়িসহ নানা প্রজাতির পাখপাখালির ডাক শুনে মুগ্ধ না হয়ে উপায় আছে কি! ক্ষণিকের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলাম ভিন্ন এক পরিবেশে।

নৌকা থেকে নেমে অবাক চোখে ডানে বামে তাকিয়ে মহলটিকে দেখছিলাম। সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে টিকিট কেটে আমরা ভেতরে প্রবেশ করি। ভেতর গিয়ে অবাক না হয়ে উপায় ছিলো না। কারণ দোতলার উপরে রয়েছে পাম গাছ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের গাছ পালা, ছাদের উপর এতো বড়ো বড়ো গাছ দেখে অবাক হওয়ার পাশাপাশি ভালোও লাগছিলো খুব । নীরমহলের ভেতরে ঘুরতে ঘুরতে চোখে পরবে বসার ঘর, শোবার ঘর, রান্না ঘর,স্নানের ঘর, নাচের ঘর, দাবা খেলার ঘরসহ মোট ২৪টি কক্ষ। প্রাসাদটির পশ্চিম দিকের অংশটি রাজপরিবারের অন্দরমহল । আর পূর্ব দিকটা খোলা, এ অংশে নাটক, গান বাজনা, নৃত্যসহ নানা অনুষ্ঠান উপভোগ করতেন রাজপরিবারের সদস্যরা। নৌকা থেকে নামার সময় মাঝি আমাদের চল্লিশ মিনিট সময় বেঁধে দেন। কখন যে সেই বেঁধে দেয়া সময় ফুরিয়ে যায় টেরই পাইনি। সত্যি বলতে এতো অল্প সময়ে এতো বিশাল মহল ঘুরে শেষ করা হয়নি। মনে হয় সব কিছুই যেন অদেখা রয়ে গেলো।। আর হ্যা, নীরমহল দেখতে চাইলে আপনাকে বেশি খরচ করতে হবে না। আগরতলা থেকে জনপ্রতি যাওয়া আসা মিলিয়ে মাত্র পাঁচশ রুপিরও কম খরচ পড়বে। তাই আর দেরি না করে যাদের পাসপোর্ট ও ভিসা করা আছে তারা এখনই ঘুরে আসতে পারেন চমৎকার এই জল প্রসাদ থেকে।

লেখক: গণমাধ্যম কর্মী

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত