চাঁদাবাজির টাকা যাচ্ছে কোথায়?
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ২১:১১ আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ২১:২৬
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন অলিতে গলিতে বা সড়কের ফুটপাতে থাকা অস্থায়ী কাঁচাবাজার থেকে নামে-বেনামে চাঁদা আদায় হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দোকানদারদের কাছ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন সমিতি বা প্রতিষ্ঠানের নামে চাঁদা তোলা হয়। আর চাঁদা না দিলে উঠিয়ে দেয়া হয় অস্থায়ী এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর ধানমণ্ডির ৫ নং সড়কের সুগন্ধা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে শুরু করে ধানমণ্ডি ১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ফুটপাতের ওপর প্রতিদিন সকালে বসে অস্থায়ী কাঁচাবাজার। এছাড়া সাতমসজিদ রোডের পুরো এলাকাজুড়ে দেখতে পাওয়া যায় অস্থায়ী বিভিন্ন পণ্যের দোকান। মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল কিংবা নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য সব কিছুই মেলে এই জায়গায়।
ভোরের আলো ফুটতেই এসব বাজার জমজমাট হয়ে ওঠে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শেষ হয় বেচাকেনা। আবার সন্ধ্যা পার হওয়ার পর কেউ কেউ অন্যান্য পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। তবে প্রতিদিন স্থানীয় কিছু চাঁদাবাজ প্রতিটি দোকান থেকে নির্দিষ্ট পরিমান চাঁদা আদায় করে থাকে।
দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেউ নতুন দোকান বসালেই নজর পড়ে চাঁদাবাজদের। ক্ষুদ্র কিংবা মাঝারি কোন ব্যাবসায়ীদের ছাড় দেয় না তারা। মাছের দোকানদারদের কাছ থেকে ঝুড়িপ্রতি ২০টাকা হারে প্রতিবেলায় চাঁদা ওঠায় তারা। একই অবস্থা সবজি বিক্রেতাদের ক্ষেত্রেও। আর যারা ভ্যান বা অন্য কোন পরিবহনে করে পন্য সামগ্রী বিক্রি করেন তাদের চাঁদার রেট আরো বেশি। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দেখানো হয় নানা প্রকারের ভয়ভীতি।
বৃহস্পতিবার ভোরে সুগন্ধ্যা কমিউনিটি সেন্টারের উল্টোদিকের ফুটপাত থেকে চাঁদা তুলতে আসে সমিতির লোক। এসময় ক্রেতারা কি কারণে চাঁদা তোলা হচ্ছে সেটি জানতে চায়। সে সময় তারা একটি সমিতির নাম বলেন। ক্রেতারা একজোট হয়ে সমিতির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা সেটি দেখাতে পারেনি। এ সময় ক্রেতা-বিক্রেতারা উত্তেজিত হয়ে পড়লে অবস্থা বেগতিক দেখে সমিতির নামধারী লোকজন কেটে পরে।
ঢাকা শহরজুড়ে এমন কয়েক লাখ অস্থায়ী বিক্রেতারা পন্য বিক্রির সাথে জড়িত। এদের প্রত্যেককে চাঁদা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়।
চাঁদাবাজির অভিযোগে অনেকেই বিভিন্ন সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটকও হয়েছে। তবে সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযানের সময়েও থেমে নেই এদের চাঁদাবাজি। তাই প্রশ্ন এ চাঁদাবাজ কারা? আর চাঁদা যায় কোথায়? ভাগ পায় কারা?
বাংলাদেশ জার্নাল/টিও/কেআই