সাক্ষাৎকারে মান্না
আন্দোলন রাস্তায় নামানোর চেষ্টা চলছে
কিরণ শেখ
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ২০:১০ আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ২০:২২
মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। ডাকসু’র সাবেক সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) সাবেক সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন মান্না। বর্তমানে তিনি নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ একজন নেতা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠন, ফ্রন্টের ভবিষ্যৎপরিকল্পনা এবং বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডসহ নানা বিষয়ে বাংলাদেশ জার্নালের সঙ্গে কথা বলেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কিরণ শেখ।
বাংলাদেশ জার্নাল: বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?
মাহমুদুর রহমান মান্না: এটা জলজ্যান্ত একটা খুন। এই রকম অমানবিক হত্যাকাণ্ড আমাদের দেশে আমরা কখনো দেখি নাই। এতো বেদনাদায়ক। আর এটা আমাদের সম্প্রতি ছাত্র রাজনীতির যে অধঃপতন, সরকারি দলের যে ফ্যাসিস্ট নীতি- এগুলোর সব কিছুর বহিঃপ্রকাশ। এটা বেদনাদায়ক এবং ক্ষোভের জন্ম দেয়। আবার সেই ক্ষোভ যাতে বিকশিত ও প্রকাশিত হতে না পারে তার জন্য সব কিছুই করছে!
বাংলাদেশ জার্নাল: আবরার ফাহাদ হত্যার পর শিক্ষার্থীরা সংগঠনভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?
মাহমুদুর রহমান মান্না: সংগঠন ছাড়া রাজনীতি হয় না কি? এই ধারণাগুলো কোথা থেকে আসলো এবং কারা দিলো-সেটা আমি বুঝি না।
বাংলাদেশ জার্নাল: অনেকেই বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। সেক্ষেত্রে বলতে গেলে, ঐক্যফ্রন্ট ব্যর্থ হয়েছে। এখন ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মাহমুদুর রহমান মান্না: নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়নি। মূলত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তোলা, সরকারকে পরাজিত করা এবং একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করা। এজন্য আমাদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল, আমরা একটি দল নিরপেক্ষ বা নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন করবো এবং আমরা ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। আমরা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় গেলে এগুলো বাস্তবায়ন করবো। ওটাই লক্ষ্য ছিল। সেই লড়াইটা এখন পর্যন্ত আছে। কিন্তু স্বৈরতন্ত্র পরাজিত হয়নি, একটা কল্যাণ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়নি। আর সেই লড়াইটাও আমরা সংজ্ঞবদ্ধভাবে করতে পারছি না। কিন্তু আবরার হত্যাকাণ্ড আবার আমাদের সবাইকে একত্রিত করেছে। আমরা আবার হাঁটি হাঁটি পা পা করে মাঠে নামছি।
বাংলাদেশ জার্নাল: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ঐক্যফ্রন্ট অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল। হঠাৎ করে ঐক্যফ্রন্ট কেনো আবারও সক্রিয় হচ্ছে?
মাহমুদুর রহমান মান্না: জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কখনো ভেঙে যায়নি, কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি কিংবা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়নি। যে যায় দলে কাজ করছিলেন। কিন্তু আবরারের ঘটনাটা সবাইকে আবার একত্রিত করেছে। আর সবাই মনে করছেন, জীবনের জন্য হলেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার।
বাংলাদেশ জার্নাল: ঐক্যফ্রন্ট থেকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বের হয়ে যাওয়াকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
মাহমুদুর রহমান মান্না: এটা উনার ব্যাপার। উনি মনে করেছেন, যে রকম করে ঐক্যফ্রন্ট চলার দরকার, সে রকম চলে নাই। এগুলো নিয়ে উনি বসতে বলেছেন, সেই বসাটাও হয়নি। সম্ভবত এই কারণেই গিয়েছেন। এই বাইরে আমি কিছু বলতে পারবো না।
বাংলাদেশ জার্নাল: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৭টি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরের বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
মাহমুদুর রহমান মান্না: এটা মধ্যে বাংলাদেশের কিছু নাই। আর এর মধ্যে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার কোন লক্ষণ নাই।
বাংলাদেশ জার্নাল: ঐক্যফ্রন্টের কোন আন্দোলন ও কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে কি না?
মাহমুদুর রহমান মান্না: পরিকল্পনা তো আছেই। আমরা তো এই সরকারকে চাই না। এই সরকার তো বৈধ নয়। এই সরকারের এখনই চলে যাওয়া উচিত। পতনের আন্দোলন শুরু করেছি- এই রকম কথা বলবো না। কিন্তু প্রতিটি আন্দোলন ওই লক্ষ্যেই যায়। এজন্য আমরা ক্যাম্পিং করছি। আর এই আন্দোলন রাস্তায় নামানোর জন্য চেষ্টাও করছি।
বাংলাদেশ জার্নালের পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
মাহমুদুর রহমান মান্না: আপনাকেও এবং বাংলাদেশ জার্নালের পরিবারকে ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ