ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন যে বিজ্ঞানী

  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:৫৩  
আপডেট :
 ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৬:৫৭

বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন যে বিজ্ঞানী
মাইকেল ফ্যারাডে

যুক্তরাজ্যের নিউইংটন বাটস অঞ্চলে এক দরিদ্র পরিবারে ১৭৯১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে। কামার পিতা এবং গৃহিণী মাতার চার সন্তানের সংসারে ফ্যারাডের অবস্থান তৃতীয়। জন্মের পর থেকেই অভাবের সাথে যুদ্ধ শুরু হয় ফ্যারাডের। ফ্যারাডের মা সবসময় তাকে সঙ্গ দিতেন। মাঝে মাঝে সামান্য একটি রুটি দিয়ে পুরো সপ্তাহ পার করতে হতো ফ্যারাডের।

১৮১৩ সালের ১ মার্চ ফ্যারাডে রয়্যাল ইন্সটিটিউটের গবেষণাগারে যোগ দেন। নতুন কর্মস্থলে যোগের পর ফ্যারাডের জীবন থেকে দারিদ্র্যের অভিশাপ দূর হয়।

ফ্যারাডে বইয়ের দোকানের পেছনে একটি ছোট গবেষণাগার গড়ে তুলেন। এরপর তৎকালীন অন্যতম প্রভাবশালী বিজ্ঞানী হামফ্রে ডেভির তত্ত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। নির্বোধ ফ্যারাডের প্রতিভা বিকশিত হতে থাকে। কয়েক মাসের ভেতর তিনি প্রায় ৩০০ পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র তৈরি করে ফেলেন।

পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন দুই বিষয়ের সমান আগ্রহী এবং পণ্ডিত ছিলেন মাইকেল ফ্যারাডে। বিজ্ঞানী হিসেবে তার প্রথম আত্মপ্রকাশ হয় রসায়নবিদ হিসেবে। ১৮২০ সালে তিনি কার্বন এবং ক্লোরিনের সমন্বয়ে গঠিত যৌগ প্রস্তুত করেন ফ্যারাডে। কয়েকদিনের মধ্যে চারিদিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।

ফ্যারাডে কৌতূহলবশত সেই তেল নিয়ে গবেষণা করতেন। ১৮২৫ সালে ফ্যারাডে সেই তেলের ভেতর এক গুপ্তধনের সন্ধান লাভ করেন। সেই গুপ্তধনের নাম ছিল (বেনজিন)। রসায়নের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত যৌগের তালিকায় বেনজিনেজ’র নাম প্রথমদিকে থাকবে সেটা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

এরপর ফ্যারাডে তার সবচেয়ে পছন্দের বিষয় ‘বিদ্যুৎ’ এবং ‘চুম্বক’ নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি চুম্বকের বলরেখা আবিষ্কার করেন। এরপর তিনি একটি বৈদ্যুতিক তারের উপর একটি চুম্বকের প্রভাব নিয়ে কাজ শুরু করেন। একদিন তিনি একটি কুণ্ডলাকৃতির তারের সাথে ব্যাটারির সংযোগ দিলেন। পুরো বর্তনীর সাথে একটি গ্যালভানোমিটার যুক্ত করে দিলেন। এরপর কুণ্ডলীর ভেতর একটি চুম্বক প্রবেশ করান। সাথে সাথে গ্যালভানোমিটারের কাঁটা কেঁপে উঠে। তিনি ফের চুম্বকটি বাইরে বের করে আনার সময় কাঁটা বিপরীত দিকে কেঁপে উঠলো। তিনি বিস্মিত হয়ে গেলেন। তিনি এই ধর্মের নাম দিলেন তড়িৎ-চুম্বকীয় আবেশ (Electromagnetic induction)।

মাইকেল ফ্যারাডের কয়েকটি উক্তি

#কোনো কিছুই সত্যিকারের সুন্দর নয়, যদি তা প্রকৃতি প্রদত্ত না হয়।

#সাফল্যের জন্য উদ্যোক্তার পাঁচটি প্রয়োজনীয় দক্ষতা হচ্ছে- সংযোগ, বাছাই, সংগঠন, নতুনত্ব এবং যোগাযোগ।

#কিছু পেতে হলে যতক্ষণ সম্ভব চেষ্টা করে যাও।

#স্রষ্টার হাতে লেখা প্রকৃতির বই আমাদের পড়তে হবে।

#যে কেউ নিজেকে যত বড় দার্শনিকই ভাবেন না কেন, তার তত্ত্বে কোনো না কোনো সন্দেহ থেকেই যায়।

#কেউ যদি নিজেকে কোনো বিষয়ে সঠিক মনে করেন, তাকে সম্পূর্ণ ভুল মনে করার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে।

#আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি উত্তরের পেছনে একটি করে প্রশ্ন তৈরি হতে থাকে।

অন্যতম অবদানসমূহ

ক) সেফটি ল্যাম্প, যা খনি শ্রমিকরা আলোর কাজে ব্যবহার করতেন;

খ) ক্লোরিন গ্যাসের তরলীকরণ তড়িৎ বিশ্লেষণের সূত্র;

গ) প্রথম ডায়নামো, যার নাম দিয়েছিলেন ‘ম্যাসানো ইলেকট্রিক মেশিন’।

জীবিত থাকা অবস্থায় মাইকেল ফ্যারাডেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো যে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবি (Westminster Abbey)-তে তার কবর দেয়া হবে। সেখানে ব্রিটেনের রাজা-রাণীদের কবর দেয়া হয়। সেখানে আইজ্যাক নিউটনের মত বিজ্ঞানীর মৃতদেহ রাখা আছে। তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। ৭৫ বছর বয়সে, ১৮৬৭ সালের আগস্টের ২৫ তারিখে, মারা যাওয়ার পর তাকে লন্ডনের হাইগেইট সেমেটারিতে কবর দেয়া হয়। সেখানে স্ত্রী সারাহ এবং তার কবর পাশাপাশি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত