ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

পাকিস্তানের বুকে পা রাখল টাইগাররা

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:০২  
আপডেট :
 ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৪৭

পাকিস্তানের বুকে পা রাখল টাইগাররা

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পাকিস্তানের মাটিতে পা রেখেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টার পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের বহর লাহোর বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

এর আগে রাত ৮টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে লাহোরের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য, মিঠুন, মোস্তাফিজ ও শফিউলরা।

ঢাকা থেকে সরাসরি পাকিস্তানের কোনো ফ্লাইট নেই। নিরাপত্তাজনিত কারণে আর ভ্রমণের ঝামেলা কমাতেই ক্রিকেটারদের জন্য বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

পাকিস্তানে আজ ঐচ্ছিক অনুশীলন করবে টাইগাররা। এরপর লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ২৪ জানুয়ারি প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। একই ভেন্যুতে ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি হবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

এর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিবি দু'টো দল পাঠিয়েছিল পাকিস্তানে - অনুর্ধ ১৯ এবং নারী ক্রিকেট দল। ২০১৯ সালে এই দল দুটো পাকিস্তানে গিয়েছিল কাতার হয়ে। তবে সব ছাপিয়ে এখনও আলোচিত হচ্ছে পাকিস্তানে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম এরই মধ্যে পাকিস্তান সফর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, কারণ দেখিয়েছেন যে পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, তাই তিনি এই সফরে যেতে চান না।

পুরুষ জাতীয় দলের পাকিস্তান সফরের বিষয়টি সামনে চলে আসার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে দেশটিতে প্রতিনিধি দল পাঠায় পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার জন্য। এরপর সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিবিসি বাংলাদেশের সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনা করে।

বিসিবি'র প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, "আমরা সব সময়েই চেয়েছি ছোট একটা সময়ের জন্য পাকিস্তানে যেতে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকেও সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছিল। সেটাই মেনে আসার চেষ্টা করেছি আমরা। এখানে প্রশ্নটা ছিল নিরাপত্তার।"

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে জানা গেছে যে পাকিস্তান বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের জন্য 'প্রেসিডেনশিয়াল নিরাপত্তা' ব্যবস্থা নিয়েছে। পাকিস্তানের পুলিশও এই বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিন স্তর বিশিষ্ট একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা পার হয়েই কেবল স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারবেন একজন দর্শক।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার প্রথম দফার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে লাহোরে। লাহোর পুলিশের ডিআইজি রাই বাবর সাঈদ জানান, এ সময় মোট ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।

লাহোর পুলিশ জানিয়েছে, ১৭টি সুপার পুলিশ ডিভিশন এবং ৪৮টি ডেপুটি সুপার পুলিশ ডিভিশন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৩৪ জন ইন্সপেক্টর এবং ৫৯২জন উর্ধ্বতন সাব-অর্ডিনেট অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। রাই বাবর সাঈদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শুধু বাংলাদেশের ক্রিকেটারদেরই নয়, পাকিস্তানের ক্রিকেটারদেরকেও একই ধরণের নিরাপত্তা দেয়া হবে। তবে মাঠের নিরাপত্তার চেয়ে ক্রিকেটারদের চলাচলের পথের নিরাপত্তা একটা বড় ইস্যু পাকিস্তানে।

২০০৯ সালে করাচীতে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলের টিম বাসে যে হামলা হয়েছিল, তা ঘটেছিল হোটেল থেকে ক্রিকেটাররা স্টেডিয়াম যাওয়ার পথে। তাই ক্রিকেট দল যেসব পথ দিয়ে যাবে ও আসবে, সেসব জায়গায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান লাহোর পুলিশের ডিআইজি।

বাবর সাঈদ বলেন, "এখানে বিভিন্ন স্তরের নিরাপত্তার কথা ভেবেছি আমরা। ভবনের ছাদগুলোতে থাকবে স্নাইপার, আর এছাড়া প্রয়োজন মতো মোতায়েন থাকবে ডলফিন স্কোয়াড (যারা বাইকে টহল দেবেন), এলিট পুলিশ স্কোয়াড এবং পুলিশের রেসপন্স টিম"। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে দেশ থেকে পাঠানো নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলও থাকছে বলে জানা গেছে।

বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মূলত ডিজিএফআই বা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। পাকিস্তানের মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ সফর নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে বলেও দেশটির গণমাধ্যমে প্রতিবেদন বলা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত