ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

যে কারণে তামিমের এত সমালোচনা

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:০১

যে কারণে তামিমের এত সমালোচনা

বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে রান তুলেছে ১৪১, দ্বিতীয় ম্যাচে ১৩৭। যেখানে প্রথম ম্যাচে তামিম ৩৪ বলে করেছেন ৩৯ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৩ বলে করেছেন ৬৫ রান। রান পেলেও টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাট করতে পারেননি টাইগার ওপেনার। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছে তামিম। তবে বাংলাদেশের এক ক্রিকেট ভক্তকে পাশেই পেলেন তামিম। তামিমকে ডিফেন্ড করে ক্রিকেট ভক্ত তাবাসসুম লেখেন, "একা তামিম ইকবালকে কোনোভাবেই দায় দেয়া যায় না। বাকিরাও তো তেমন ব্যাট করতে পারেননি। বাকিরা যদি ভালো খেলতো সেক্ষেত্রে তামিমকে দোষ দেয়া যেতো।"

ক্রিকেট ভক্ত অরভিন হোসেন অনিক মনে করেন, তামিম যতই ধীরে খেলুক না কোনো একদিন ৩০ বলে ৫০ করলেই সবাই ভুলে যাবে। এর কারণ বাংলাদেশের ক্রিকেটে সিনিয়র ক্রিকেটাররা ম্যানেজমেন্টে প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের একটি অংশের অভিযোগ যখন পাওয়ার প্লে চলছে তখন তামিমের ধীর গতির ব্যাটিং অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যান তো বটেই ইনিংসের বাকি সময় রান তোলার একটা চাপ তৈরি করে। প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৬ ওভারে ৩৫ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৩। অর্থাৎ বাকি ১৪ ওভারে বাংলাদেশ ১০০ এর কিছুটা বেশি রান করতে সমর্থ হয় দুই ম্যাচেই। এই দুই ম্যাচেই তামিম ইকবাল রান আউট হন, যখন সে উইকেটে সেট হয়ে যান।

পরিসংখ্যান বলছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সিরিজে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে সফল তামিম ইকবাল। কিন্তু সেই তামিম ইকবাল এখন আলোচনার কেন্দ্রে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ১০৪ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।

বিশ্লেষক ও কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ম্যাচ জেতার জন্য যে স্ট্রাইক রেট প্রয়োজন সেটার তুলনায় তামিম ইকবালের স্ট্রাইক রেট কম। সেটাতে সামগ্রিক স্কোরের একটা প্রভাব পড়েই। আমার মনে হয় স্ট্রাইক রেট বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ, ডট বলের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। কমপক্ষে ১৭০-৮০ রান না করলে আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে জয় পাওয়া কঠিন।

তামিম ইকবাল প্রথম ম্যাচে ১৩টি ও দ্বিতীয় ম্যাচে ১৫টি ডট বল দেন। ৩৪ বল অর্থাৎ প্রায় ৬ ওভার ২ বলে ৩৯ রান। আরেক ম্যাচে ৮ ওভার ৫ বলে ৬৫ রান।

তামিম ইকবালের বয়সভিত্তিক দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তামিম ইকবালের ব্যাটিং কি অন্য ব্যাটসম্যানদের ওপর প্রভাব ফেলে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "যখন দেখবেন ৬ ওভার শেষে রান রেট সাড়ে পাঁচ তখন যারা ব্যাট করতে নামেন তারা তাড়াহুড়ো করে রান নিতে যান। তখন মাথায় আসে আমরা পিছিয়ে আছি। যখন স্ট্রাইক রেট বাড়াতে গিয়ে হিতে বিপরীতে হয়।"

তিনি যোগ করেন বিপিএলে যারা ভালো খেলেছে তাদের নেয়া হয়েছে কিন্তু যাদের নেয়া হয়েছে তারা অধিকাংশ ওপেনার। উপরে ভালো খেলা ও পাঁচ ছয়ে ভালো খেলা এক জিনিস নয়।

বাংলাদেশের এই স্কোয়াডে ছয়জন ওপেনিং ব্যাটসম্যান আছেন- তামিম ইকবাল, নাইম শেখ, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত এবং আফিফ হোসেন।

বাংলাদেশি ওপেনাররা টি টোয়েন্টিতে কেমন:

তামিম ইকবাল ৭৩ ম্যাচে ১৬৬০ রান, ২৪ গড়, স্ট্রাইক রেট ১১৭

সৌম্য সরকার ৪৮ ম্যাচে ৮০৩ রান, গড় ১৭, স্ট্রাইক রেট ১২২

লিটন দাস ২৭ ম্যাচে ৫১৭ গড় ১৯ স্ট্রাইক রেট ১৩৩

এনামুল হক বিজয় ১৩ ম্যাচে ৩৫৫ রান গড় ৩২ স্ট্রাইক রেট ১১৭

ইমরুল কায়েস ১৪ ম্যাচে ১১৯ রান, গড় ৯, স্ট্রাইক রেট ৮৮

এই পাচঁজন ওপেনার কমপক্ষে ১০ ম্যাচ খেলেছেন এবং ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করেছেন।

তাদের মধ্যে আবার ওপেনিং পজিশনে লিটন দাসের গড় ২০ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪৮। ওপেনিং পজিশনে সৌম্য সরকারের স্ট্রাইক রেট ১২৮।

তবে নতুনদের মধ্যে নাইম শেখ ৫ ম্যাচে ১৮৬ রান করেছেন। তার গড় ৩৭, স্ট্রাইক রেট ১২৪।

আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে তামিমের অবস্থান কোথায়:

আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে যারা ব্যাট করেন তাদের মধ্যে এক নম্বরে রোহিত শর্মা। যিনি ৭৫ ম্যাচে ২২৪৮ রান তুলেছেন, স্ট্রাইক রেট ১৪০। এরপর আছেন মার্টিন গাপটিল, তিনিও ১৪০ স্ট্রাইক রেটে ২১৭২ রান তুলেছেন ৬৭ ম্যাচে। আয়ারল্যান্ডের পল স্টারলিংয়ের স্ট্রাইক রেট ১৪২, তিনি রান তুলেছেন ১৯৭৫। ডেভিডি ওয়ার্নারও ১৪০ স্ট্রাইক রেটে রান নিয়েছেন ১৯১১। এরপর আরেক অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ১৫৫ স্ট্রাইক রেটে রান তুলেছেন ১৭২৮। তিলেকরত্নে দিলশান এখানে স্ট্রাইক রেটের দিক থেকে পিছিয়ে আছেন। তার স্ট্রাইক রেট ১২০।

আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করে এক হাজারের বেশি রান তুলেছেন ১৮ জন ব্যাটসম্যান। যাদের মধ্যে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেট (১১৪) আহমেদ শেহজাদের, এরপরই আছেন তামিম ইকবাল, তার স্ট্রাইক রেট ১১৬।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত