ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

রোচের কাছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজই ‘অ্যাশেজ’

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২০, ২০:১৫

রোচের কাছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজই ‘অ্যাশেজ’

ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজ দিয়ে আগামী বুধবার থেকে আবারো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠে ফিরছে। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে গেল মার্চ মাসে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এবারের সিরিজ সকলের কাছেই ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন মাঠে ফেরার জন্য মুখিয়ে আছে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়রা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজটিকে মর্যাদাপূর্ণ ‘অ্যাশেজের’ সাথে তুলনা করলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কেমার রোচ।

ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় দৈনিক গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রোচ বলেন, ‘আমাদের জন্য এটি সবচেয়ে বড় সিরিজ। আমাদের কাছে এটা অ্যাশেজের মতোই।’

যে ধরণের সিরিজই হোক না কেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মাঝেও আবারো ক্রিকেট মাঠে ফিরছে, এতেই খুশী ক্রিকেটপ্রেমিরা। কিন্তু মনের মধ্যে ভয়-শঙ্কা রয়েছেই। তারপরও জীবানুমুক্ত পরিবেশ ও রুদ্ধদার স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।

নিজেদের মাঠে গেল সিরিজটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই ট্রফি ধরে রাখার মিশন ক্যারিবীয়দের। রোচ বলেন, ‘সিরিজের ট্রফিটা দেশে নিয়ে যাওয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। ইংল্যান্ডে জয় পাওয়া সব সময়ই আনন্দের তবে এবার বিষয়টা শিরোপা ধরে রাখার। আমরা ট্রফি ধরে রাখার মিশনে এসেছি। টেস্ট সিরিজ জয় হোক বা ড্র হোক, ট্রফি আমাদের কাছেই রাখতে চাই আমরা।’

২০০৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া রোচ শুরুতেই দ্রুত গতির বোলার হিসেবে পরিচিতি পান। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে-সাথে গতি কমিয়ে, লাইন-লেন্থের উপর বেশি জোড় দিয়েছেন রোচ। পাশাপাশি বোলিংয়ে বৈচিত্র্যও এনেছেন তিনি। তাই আগের চেয়ে এখন স্বাচ্ছন্দ্যে বোলিং করতে পারছেন বলে মনে করেন রোচ।

তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি আগের মত ১৫০ কি.মি. গতিতে বোলিং করতে চাই। তবে আমার বয়স বাড়ছে। আমার শরীর এখন ২১ বা ২২ বছরের তরুণের মতো সাপোর্ট করছে না। পাশাপাশি আমার অনেকগুলো ইনজুরিও হয়েছে। তাই ইচ্ছা করলেও, আগের মত জোড়ে বল করতে পারবো না। তবে এখন ১৩৫ কি.মি. গতিতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করছি। এর কারণ আমি আগের থেকে নিজের বোলিং সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি। নিজের বোলিং নিয়ে অনেক কাজ করেছি। পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া, উইকেট শিকারের জন্য লাইন-লেন্থ ধরে রাখা, সবকিছু মিলিয়ে নিজেকে পূর্ণাঙ্গ মনে হচ্ছে। যেভাবে আমি খেলছি তাতে আমি খুশি। উইকেট পেলেই হলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কত উইকেট নিতে পারব সেদিকেই আমার বেশি নজর।’

প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের নিয়মিত অধিনায়ক জো রুট খেলতে পারছেন না। সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে প্রথম টেস্ট দলে নেই রুট। তাই ইংল্যান্ডের ৮১তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হবে অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের।

রুটের না থাকাটা সুবিধা হিসেবেই দেখছেন রোচ। তবে ইংল্যান্ডের অন্যান্য খেলোয়াড়দের নিয়ে সর্তকতা রয়েছে তার। রোচ বলেন, ‘রুটকে ছাড়া মাঠে নামবে ইংল্যান্ড। রুট অসাধারন ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক। সে এমন একজন ব্যাটসম্যান, যিনি ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপকে চাঙ্গা করে রাখে। গত কয়েক বছরে দলের জন্য অসাধারণ ব্যাটিং করেছে রুট। আমি বলবো, এটি আমাদের জন্য বাড়তি সুবিধা। তবে রুট ছাড়াও ইংল্যান্ড দলে দারুন কিছু খেলোয়াড় রয়েছে। তাদের নিয়ে আমাদের সর্তক থাকতে হবে। তাদের দুর্বলতা বের করার জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। তবে আমরা যদি ছন্দ পেয়ে যাই, ব্যাটসম্যানরা রান করতে পারে ও বোলাররা ভালো করতে পারি তাহলে আমাদের সাফল্যের সুযোগ রয়েছে।’

রুটের পরিবর্তে ইংল্যান্ডের নেতৃত্ব দিবেন স্টোকস। স্টোকসের বড় ভক্ত বলে জানালেন রোচ। তিনি বলেস, ‘আমি স্টোকসের বড় ভক্ত। দুর্দান্ত ক্রিকেটার সে। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, সব বিভাগেই সে প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসী। অধিনায়ক হিসেবে সে কেমন করে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। কারন প্রথমবার টেস্টের মত ফরম্যাটে নেতৃত্ব দিবে সে। তবে আমি নিশ্চিত, ইংল্যান্ড নেতৃত্ব দক্ষ খেলোয়াড়ের হাতেই পড়েছে। আমি তাকে শুভ কামনা জানাই।’

স্টোকসের মত ইংল্যান্ডের পেসার জেমস এন্ডারসনেরও বড় ভক্ত রোচ। তিনি জানান, ‘আমি এন্ডারসনেরও অনেক বড় ভক্ত। তার স্কিল ও ধারাবাহিকতা অসাধারণ। নিজেকে ফিট রেখে দীর্ঘদিন ধরে খেলছেন এন্ডারসন। আমরা সবাই জানি, পেসারদের জন্য বোলিং খুবই কঠিন কাজ। শরীরের উপর অনেক ধকল যায়। দেড়শর বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন, ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীও তিনি। আমি চাই, তার মতো কিছু করতে। আশা করি, তার কিছু অর্জনের কাছাকাছি যেতে পারব।’

  • সর্বশেষ
  • পঠিত