ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

জোন্সকে বাঁচাতে যা করেছিলেন ব্রেট লি

  স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:৩৫  
আপডেট :
 ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২০:১৫

জোন্সকে বাঁচাতে যা করেছিলেন ব্রেট লি

হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গতকাল সকালে ভারতের মুম্বাইয়ে ৫৯ বছর বয়সে মারা যান অস্ট্রেলিয়ার সাবেক কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ডিন জোন্স। সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) টি-২০ ক্রিকেটের ত্রয়োদশ আসরে ধারাভাষ্যকার হিসেবে স্টার স্পোর্টসের সাথে যুক্ত থাকায় ভারতে অবস্থান করছিলেন তিনি। মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে মৃত্যু হয় জোন্সের।

বৃহস্পতিবার সকালের নাস্তা সেড়ে বেলা ১১টায় আইপিএল সম্প্রচার সংক্রান্ত বিষয়ে স্টার স্পোর্টসের সাথে বৈঠক শেষ করেন জোন্স। এরপর হোটেলেই সহকর্মীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন তিনি। এমন সময়েই হঠাৎ করেই পড়ে যান জোন্স। জোন্সকে মাটি থেকে তোলার চেষ্টা করেছিলেন সেখানে অবস্থানরত অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার ব্রেট লিসহ অন্যান্যরা। সাথে আশে-পাশের মানুষদের সাহায্য চাওয়া হয়। আশে-পাশে মানুষদের সহায়তায় অ্যাম্বুলেন্সও ডেকেছিলেন লি। অ্যাম্বুলেন্সে করেই হরকিসনদাস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জোন্সকে। সেখানে চিকিৎসকরা জোন্সকে মৃত ঘোষণা করেন।

জোন্সকে বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ থাকবে লির। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে লি বলেন, ‘জোন্সের সাথে আড্ডায় আমি ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই জোন্স মাটিতে পড়ে যান। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে করে পাশের হাসপাতালে তাকে নেওয়া হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। জোন্সের সিপিআর পরীক্ষার সময়ও পাশে ছিলাম। কিন্তু তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হলাম।’

চলমান আইপিএলের শুরু থেকেই ভারতে তৈরি স্টুডিওতে লি, নিউজিল্যান্ডের স্কট স্টাইরিস ও অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল স্ল্যাটারের সাথে ধারাভাষ্য প্যানেলে ছিলেন জোন্স। ছিলেন ভারতের কিরন মোরে, ইরফান পাঠানসহ আরও অনেকে। কিন্তু গতকাল সকালে মারা যাওয়ায়, সন্ধ্যায় আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ম্যাচে জোন্সকে মিস করেছেন তার সহকর্মীরা। এজন্য ডাগআউটে জোন্সের চেয়ারটি ফাঁকা রেখেছিলেন লি-স্টাইরিসরা।

এ ব্যাপারে লি বলেন, ‘তিনি একজন কিংবদন্তি। আজকের ডাগ আউট শো জোন্সের জন্য উৎসর্গ করা হলো। আমরা যে খেলাটিকে এত ভালোবাসি তার স্বার্থেই অনুষ্ঠান চালিয়ে যাই। তার পরিবার এবং বন্ধু বর্গের প্রতি সমবেদনা রইল।’

স্টাইরিস বলেন, ‘কে ভেবেছিল, আজ ডাগআউটে জোন্স থাকবেন না। সকালে এক সাথে ডিনোর (জোন্স) সাথে নাশতা করেছি। কয়েক ঘণ্টা পরই তার হার্ট অ্যাটাক হবে, এটি কি আমরা কেউ জানতাম। ডাগআউটে আমরা ডিনোকে খুব মিস করেছি। আমাদের জন্য ধারাভাষ্য দেয়া আজ কঠিনই ছিলো। কিভাবে কি হলো এখনো বুঝে উঠতে পারছি না।’

স্ল্যাটার বলেন, ‘ডিনোকে বাঁচাতে লি আমাদের কয়েক জনের সহায়তা চেয়েছিলো। অ্যাম্বুলেন্স আসার আগে আধ ঘণ্টা ধরে তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেছে লি। কিন্তু লিসহ, আমাদের সকলের চেষ্টা বৃথা হয়ে গেল। আমরা সকলে মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এভাবে ধারাভাষ্য দিতে, কখনো এত কঠিন মনে হয়নি। আজ আমরা কথাই বলতে পারছি না। যতদিন ধারাভাষ্য দিবো, ডিনোর কথা মনে পড়বে।’

১৯৬১ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে জন্ম গ্রহণ করেন জোন্স। ১৯৮১ মৌসুমে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট শুরু করেন তিনি। ১৯৮৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেক হয় জোন্সের।

১৯৮৭ সালে প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়ার দলের সদস্যও ছিলেন জোন্স। ১৯৯৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিদায় জানানোর আগে, অসিদের সেরা তারকার তকমাটাও পেয়ে যান তিনি। ৫৯ টেস্ট দেশের হয়ে ৪৬ দশমিক ৫৫ গড়ে ৩,৬৩১ রান, ১৬৪ ওয়ানডেতে ৪৪ দশমিক ৬১ গড়ে ৬,০৬৮ রান করেছেন জোন্স। টেস্টে ১১টি সেঞ্চুরি, ১৪টি হাফ-সেঞ্চুরি এবং ওয়ানডেতে ৭টি সেঞ্চুরি, ৪৬টি হাফ-সেঞ্চুরি করেন তিনি।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫১ দশমিক ৮৫ গড়ে ১৯,১৮৮ রান করেছেন জোন্স। সেখানে ৫৫টি সেঞ্চুরি ও ৮৮টি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান।

১৯৯৮ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর কোচ ও ভাষ্যকার হিসেবে কাজ শুরু করেন জোন্স। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অব ফেম-এ জায়গা দেওয়া হয় জোন্সকে।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেটের প্রথম আসরে চিটাগং ভাইকিংসের টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন জোন্স।

আরো পড়ুন: অবশেষে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত

আরো পড়ুন: না ফেরার দেশে কিংবদন্তি ডিন জোন্স

আরো পড়ুন: ডিন জোন্সের মৃত্যুতে বিসিবির শোক

বাংলাদেশ জার্নাল/টিআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত